আজকাল ওয়েবডেস্ক: উত্তরাখণ্ড রাজ্যের উত্তরকাশী জেলায় ভয়াবহ হড়পা বানের জেরে এখনও পর্যন্ত পাঁচ জন। ধ্বংসাবশেষের তলায় আরও অনেকের আটকে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। মৃত্যুর সংখ্যাও আরও বৃদ্ধি পেতে পারে বলে আশঙ্কা করছে প্রশাসন। হড়পা বানের কারণে বার্তওয়ারি, লিনচিগড়, হর্ষিল, গঙ্গরানি ও ধরলী এলাকায় রাস্তাঘাট ভেঙে পড়েছে। উদ্ধারকাজে নেমেছে সেনা ও প্রশাসন।
বুধবার উত্তরাখণ্ডের হর্ষিল, গঙ্গরানি, ধরলী, লিনচিগড় ও বার্তওয়ারি এলাকায় প্রবল বৃষ্টিপাত ও ভূমিধসের জেরে হড়পা বানের সৃষ্টি হয়। ৩০ সেকেণ্ডে তছনছ হয়ে যায় গোটা এলাকা। ব্যাপক বিপর্যয়ের ফলে মুখে এই সব অঞ্চলে সড়ক যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় জরুরি ভিত্তিতে শুরু করা হয়েছে উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রম।
হর্ষিলের সামরিক হেলিপ্যাড এবং নেলং-এর বেসামরিক হেলিপ্যাড সচল রয়েছে। তবে ধরলীর বেসামরিক হেলিপ্যাডটি কাদামাটির স্রোতে সম্পূর্ণভাবে নষ্ট হয়ে গিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হেলিপ্যাড দ্রুত মেরামতের চেষ্টা চলছে।

ভারতীয় সেনাবাহিনীর ২২৫ জনেরও বেশি সদস্য, যাঁদের মধ্যে ইঞ্জিনিয়ার, চিকিৎসক ও প্রশিক্ষিত উদ্ধারকর্মীরাও রয়েছেন, মাঠে নেমে উদ্ধার ও ত্রাণকাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। টেকলা এলাকায় নিখোঁজদের খোঁজে অত্যাধুনিক সার্চ রাডার দল মোতায়েন করা হয়েছে। পাশাপাশি, উদ্ধারকাজে প্রশিক্ষিত অনুসন্ধান ও উদ্ধারকারী কুকুর ব্যবহার করা হচ্ছে।
এখন পর্যন্ত ৭০ জনের বেশি সাধারণ মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে আনা হয়েছে। গুরুতর আহতদের হেলিকপ্টারে করে দেরাদুন ও এমস্(AIIMS) ঋষিকেশে স্থানান্তর করা হচ্ছে। গঙ্গোত্রী অঞ্চলে আটকে পড়া প্রায় ২০০ জন পর্যটককে অস্থায়ী মেডিক্যাল ক্যাম্পে প্রাথমিক চিকিৎসা ও খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ২০২৫ সালে ভারতের সবচেয়ে সুরক্ষিত শহরের তালিকার শীর্ষে ম্যাঙ্গালোর, দিল্লি কত নম্বরে
প্রশাসন ও সেনাবাহিনী যৌথভাবে পরিস্থিতি মোকাবিলায় সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলিতে যোগাযোগ ব্যবস্থা পুনরুদ্ধার এবং বাকি আটকে থাকা মানুষদের দ্রুত নিরাপদে সরিয়ে আনার কাজ চলছে।
জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (NDRF), রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (SDRF), সেনাবাহিনী, ইন্দো-তিব্বত সীমান্ত পুলিশ (ITBP), পুলিশ ও অন্যান্য সংস্থা একযোগে উদ্ধার ও ত্রাণকাজে নিযুক্ত রয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা, পর্যটক ছাড়াও নিখোঁজদের মধ্যে নির্মাণাধীন হোটেলগুলির শ্রমিকরাও থাকতে পারেন বলে অনুমান করা হয়েছে। কারণ হড়পা বানের সময় সেসব স্থানে কাজ চলছিল।
গঙ্গোত্রী যাওয়ার পথে ধারালি একটি গুরুত্বপূর্ণ স্টপওভার। এখানে অনেক হোটেল ও হোমস্টে রয়েছে। এর অনেকগুলিই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বা ভেসে গিয়েছে।
গোটা হিমালয় অঞ্চলে এই মুহূর্তে প্রবল বর্ষণের ফলে রীতিমত বিপর্যয়ের সৃষ্টি হয়েছে। উল্লেখ্য, উত্তরাখণ্ডের প্রতিবেশী রাজ্য হিমাচল প্রদেশেও প্রাকৃতিক দুর্যোগ মারাত্মক রূপ নিয়েছে। শুধুমাত্র সোমবার দিনেই প্রবল বর্ষণের কারণে রাজ্যের ৩১০টি রাস্তা বন্ধ হয়ে গেছে, যার মধ্যে একটি জাতীয় সড়কও আছে। মান্ডি জেলায় একটি গাড়ি খাদে পড়ে ৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। সিমলার পান্থাঘাটি এলাকায় রবিবার রাতে ধস নামায় মেহলি-শোগি বাইপাস সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেছে এবং কিছু দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
