আজকাল ওয়েবডেস্ক: সাইবার ক্রাইম রুখতে এবার স্মার্টফোনে আসছে নতুন সরকারি অ্যাপ। ফোনে আগে থেকেই এই অ্যাপ প্রি-ইনস্টলড থাকবে।
সূত্রের খবর, ভারতের টেলিকম মন্ত্রক গোপনে দেশের শীর্ষ স্মার্টফোন নির্মাতাদের নির্দেশ দিয়েছে, আগামী ৯০ দিনের মধ্যে বাজারে আসা সব নতুন ফোনে বাধ্যতামূলকভাবে সরকারি সাইবার সিকিউরিটি অ্যাপ ‘সঞ্চার সাথী’ প্রি-ইনস্টল করতে হবে, এবং এই অ্যাপ ব্যবহারকারীরা মুছে ফেলতে বা নিষ্ক্রিয় করতে পারবেন না।
বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ টেলিফোন বাজার ভারত। এখানে ১.২ বিলিয়নেরও বেশি গ্রাহক রয়েছে। সেই বাজারে এই নতুন সিদ্ধান্ত প্রযুক্তি সংস্থাগুলোর মধ্যে আলোড়ন তুলেছে।
জানুয়ারিতে চালু হওয়া সঞ্চার সাথী অ্যাপটির মাধ্যমে ইতিমধ্যেই ৭ লক্ষের বেশি হারানো বা চুরি হওয়া ফোন উদ্ধার হয়েছে। শুধু অক্টোবরেই উদ্ধার হয়েছে ৫০ হাজার ফোন।
জানা গিয়েছে, এই গোপন নির্দেশ পাঠানো হয়েছে অ্যাপল, স্যামসাং, ভিভো, ওপ্পো, শাওমি সহ একাধিক সংস্থার কাছে। তবে সবচেয়ে বেশি অস্বস্তিতে পড়তে পারে অ্যাপল, কারণ নীতি অনুযায়ী অ্যাপলের সংস্থা কোনও সরকারি বা তৃতীয় পক্ষের অ্যাপ ফোন বিক্রির আগে প্রি-ইনস্টল করে না।
অ্যাপল অতীতেও সরকার-নির্মিত অ্যাপ বাধ্যতামূলকভাবে ইনস্টল করার অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছিল বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।
বিশ্লেষকদের মতে, অ্যাপল হয়তো বাধ্যতামূলক প্রি-ইনস্টলের বদলে ব্যবহারকারীকে নোটিফিকেশনের মাধ্যমে অ্যাপ ইনস্টলের সুযোগ দেওয়ার প্রস্তাব দিতে পারে।
সরকারের দাবি, নকল বা স্পুফড আইএমইআই নম্বর ব্যবহার করে নানা ধরনের প্রতারণা, সাইবার অপরাধ ও নেটওয়ার্ক অপব্যবহার বাড়ছে, এবং সেগুলোকেই রুখতে হবে।
ফোনের ১৪ থেকে ১৭ অঙ্কের অনন্য পরিচিতি নম্বর, অর্থাৎ আইএমইআই যাচাই ও চুরি হওয়া ফোন ব্লকের ক্ষেত্রে সঞ্চার সাথী অ্যাপ অত্যন্ত কার্যকর বলে মনে করছে টেলিকম মন্ত্রক।
অ্যাপটির মাধ্যমে সন্দেহজনক কল রিপোর্ট করা, আইএমইআই যাচাই করা এবং চুরি হওয়া ফোনকে কেন্দ্রীয় রেজিস্ট্রি থেকে ব্লক করার সুবিধা পাচ্ছেন ব্যবহারকারীরা।
এখনও পর্যন্ত অ্যাপটি ৫০ লক্ষের বেশি বার ডাউনলোড হয়েছে, ৩৭ লক্ষের বেশি চুরি বা হারানো ফোন ব্লক করা হয়েছে এবং ৩ কোটিরও বেশি ভুয়ো সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।
সরকারের মতে, এই অ্যাপ মোবাইল সাইবার সিকিউরিটিকে আরও শক্তিশালী করে, পুলিশের তদন্তে সাহায্য করে এবং নকল ফোনের কালোবাজারি রোধে বড় ভূমিকা রাখছে।
টেলিকম মন্ত্রক বা সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলোর কেউই এই বিষয়ে প্রকাশ্যে এখনও কোনও মন্তব্য করেনি। তবে প্রযুক্তি মহলে জোর জল্পনা, বিশেষত অ্যাপলের সঙ্গে সরকারের এই সিদ্ধান্তে বড় ধরনের মতবিরোধ দেখা দিতে পারে।
