আজকাল ওয়েবডেস্ক: পহেলগাঁও হামলার পর পরই সিন্ধু জল চুক্তি বাতিল করেছে ভারত। বিষয়টিকে  'যুদ্ধ' হিসাবে দেখা হবে বলে ভারতকে পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়েছে পাকিস্তান। এসবের মধ্যেই ইসলামাবাদকে আনুষ্ঠানিকভাবে সিন্ধু জল চুক্তি আপাতত স্থগিতের কথা জানিয়ে দিয়েছে নয়াদিল্লি। কিন্তু, কীভাবে পড়শি দেশে সিন্ধুর জল যাওয়া বন্ধ করবে ভারত? 

সূত্রের খবর, তিনটি পরিকল্পনায় বাজিমাতের চেষ্টা করছে মোদি সরকার। এর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হল, সিন্ধু নদীর তীরবর্তী বাঁধগুলির জল ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা হবে। তবে, বাকি দু'টি পরিকল্পনা এখনও গোপন রয়েছে।

পাকিস্তানকে আনুষ্ঠানিকভাবে ভারত জানিয়েছে যে, ১৯৬০ সালের জল চুক্তি বাতিল করা হচ্ছে। ভারতীয় জল শক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব দেবশ্রী মুখার্জি কূটনৈতিক কড়া পদক্ষেপের এই চিঠি পাঠিয়েছেন পাকিস্তানের জল সম্পদ মন্ত্রকের মন্ত্রী সৈয়দ আলি মুর্তজাকে। সিন্ধু চুক্তির জন্য নিয়োগপ্রাপ্ত কমিশনারদের মধ্যে বৈঠক, তথ্য ভাগাভাগি এবং নতুন প্রকল্পের আগাম নোটিশ-সহ সমস্ত চুক্তির বাধ্যবাধকতা স্থগিত করা হয়েছে। ফলে চুক্তিটি স্থগিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে, ভারত পাকিস্তানের অনুমোদন বা পরামর্শ ছাড়াই সিন্ধু নদীর প্রবাহে বাঁধ নির্মাণ করতে পারে। 

এদিকে, পাকিস্তান বৃহস্পতিবার ভারতের সিন্ধু জল চুক্তি স্থগিত করার সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করেছে এবং বলেছে যে, চুক্তির অধীনে পাকিস্তানের জলের প্রবাহ বন্ধ করার যে কোনও পদক্ষেপকে "যুদ্ধ" হিসেবে দেখা হবে। নয় বছর ধরে আলোচনার পর ১৯৬০ সালের সেপ্টেম্বরে দেশগুলি আন্তঃসীমান্ত নদী সম্পর্কিত সমস্যাগুলি মেটাতে এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করে।

সিন্ধু জল চুক্তি স্থগিত করা, আসলে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপের একটি অংশ। এছাড়াও পাকিস্তানি নাগরিকদের ভিসা বাতিল করা, পাকিস্তানি সামরিক কর্তাদের বহিষ্কার করা, আটারি স্থল ট্রানজিট পোস্ট এবং ওব্রোই পোস্ট অবিলম্বে বন্ধ করা এবং কূটনৈতিক মিশনের বহরও কমানো হয়েছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারতের সিন্ধু জল চুক্তি স্থগিত করার ফলে পাকিস্তানের কৃষি অর্থনীতিতে গুরুতর প্রভাব পড়তে পারে। গুরুত্বপূর্ণ জল তথ্য ভাগাভাগি ব্যাহত হবে এবং গুরুত্বপূর্ণ ফসলের মৌসুমে প্রবাহ হ্রাস পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

বিশ্বব্যাঙ্কের মধ্যস্থতায় এই চুক্তিতে পূর্বাঞ্চলীয় নদী - শতদ্রু, বিয়াস এবং রাভি - ভারতকে এবং পশ্চিমাঞ্চলীয় নদী - সিন্ধু, ঝিলাম এবং চেনাব - পাকিস্তানকে বরাদ্দ করা হয়েছে। তবে, চুক্তিতে একতরফাভাবে স্থগিতাদেশের কোনও ধারা নেই।