আজকাল ওয়েবডেস্ক: বেআইনিভাবে নির্মিত গোয়া নাইটক্লাবে ভয়ঙ্কর অগ্নিকাণ্ডে ২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। যে ঘটনার পরে রাতারাতি থাইল্যান্ডে পালিয়ে গিয়েছিলেন অভিযুক্ত দুই মালিক। অগ্নিকাণ্ডের পাঁচদিন পর অবশেষে থাইল্যান্ডেই আটক করা হল তাদের। শীঘ্রই ফেরানো হচ্ছে দেশে। 

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার অভিযুক্ত সৌরভ ও গৌরব লুথরাকে আটক করে থাইল্যান্ডের ডিটেনশন সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই ভারতীয় তদন্তকারী আধিকারিকরা তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। ভারতে নিয়ে আসার প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। 

পলাতক দুই অভিযুক্তকে আটক করার জন্য গোয়া পুলিশ দু'জনের পাসপোর্ট সাসপেন্ড করে দেয় আগেই। ইন্টারপোলের কাছে ব্লু কর্নার নোটিশ পাঠানো হয়। বিদেশ মন্ত্রকের নির্দেশ অনুযায়ী, পাসপোর্ট সাসপেন্ড করা হলে, তা নিয়ে আর ভিন দেশে যাওয়া সম্ভব না। যদিও তার আগেই সৌরভ ও গৌরব থাইল্যান্ডে পৌঁছে যায়। তাদের বিরুদ্ধে গত রবিবারেই অ্যারেস্ট ওয়ারেন্ট জারি করা হয়েছিল। কিন্তু স্বাস্থ্য পরীক্ষার অজুহাতে চার সপ্তাহের আগাম জামিন চেয়ে দিল্লির আদালতে আবেদন করেছিল তারা। বুধবার রোহিনি আদালত দু'জনের জামিনের আবেদন খারিজ করে দেয়। 

এর আগে গোয়া পুলিশ গোয়ার বার্চ বাই রোমিও লেন নাইটক্লাবের আরও এক মালিক অজয় গুপ্তকে গ্রেপ্তার করেছে। মূল আউটলেট ভেঙে ফেলার নির্দেশ দিয়েছেন গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী প্রমোদ সাওয়ান্ত। এখনও পর্যন্ত অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে নাইটক্লাবের চিফ জেনারেল ম্যানেজার রাজীব মোদক, জেনারেল ম্যানেজার বিবেক সিং, বার ম্যানেজার রাজীব সিংহানিয়া, গেট ম্যানেজার রিয়াংশু ঠাকুর এবং কর্মী ভারত কোহলিকে। 

প্রসঙ্গত, সিলিন্ডার বিস্ফোরণের জেরে গোয়ার নাইটক্লাবে আগুন লাগেনি। রবিবারেই ঘোষণা করেছিলেন গোয়ার ডিজিপি। কারণ নাইটক্লাব থেকে সিলিন্ডারগুলি অক্ষত অবস্থায় পাওয়া গিয়েছিল। সোমবার পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা জানান, বৈদ্যুতিক আতশবাজি থেকে নাইটক্লাবে আগুন ছড়াতে পারে। 

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে অগ্নিকাণ্ড থেকে কোনও মতে বেঁচে যাওয়া দিল্লির পর্যটক রিয়া দাবি জানান, ডান্স ফ্লোরে নৃত্যশিল্পীরা যখন নাচ করছিলেন, তখন চারদিকে আতশবাজি ফাটছিল ৷ যা থেকে আগুন লাগতে পারে। ডান্স ফ্লোরের উপরেই আগুনের ফুলকি দেখা গিয়েছিল তখন। তারপরেই হুড়োহুড়িতে পদপিষ্ট পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল ৷

এদিকে গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী ড. প্রমোদ সাওয়ান্ত সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, প্রাথমিক তদন্তের পর জানা গিয়েছে, নাইটক্লাবের ড্রান্স ফ্লোরের ভিতরেই বৈদ্যুতিক আতশবাজি পোড়ানো হয়েছিল৷ তার জেরেই ক্লাবটিতে আগুন লেগে যায়। ১০০ জন পর্যটক ছিলেন সেদিন। অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থাও যথাযথ ছিল না। সরু পথ দিয়ে সকলে সময়মতো পালাতে পারেননি। বেসমেন্টে আটকে অধিকাংশের দমবন্ধ হয়ে মৃত্যু হয়। 

আরও জানা গেছে, নাইটক্লাবে মৃতদের মধ্যে ২০ জন কর্মী ছিলেন এবং পাঁচজন পর্যটক ছিলেন। মৃত কর্মীরা মূলত উত্তরাখণ্ড, ঝাড়খণ্ড, অসম, মহারাষ্ট্র, উত্তরপ্রদেশ এবং পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা বলে জানা গিয়েছে। মৃতদের মধ্যে চারজন নেপালি নাগরিক ছিলেন। নিহতদের মৃতদেহ তাঁদের বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হবে বলে জানিয়েছেন গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী।