আজকাল ওয়েবডেস্ক: বিজেপি শাসিত রাজ্যে আবার গণধর্ষণের শিকার এক নাবালিকা। এবার নাবালিকাকে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠল পাঁচজনের বিরুদ্ধে। গণধর্ষণের অভিযোগের ভিত্তিতে এখনও পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বাকি দু'জন এখনও পর্যন্ত পলাতক। তাঁদের খোঁজে তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, এবার ঘটনাটি ঘটেছে ওড়িশার সম্বলপুরে। জুজুমুরা থানায় নাবালিকার পরিবারের তরফে গণধর্ষণের অভিযোগটি দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, কিছু কাজের প্রয়োজনে নাবালিকা একাই বাড়ি থেকে বের হয়। এরপর তাকে টেনে নিয়ে নির্জন এলাকায় যায় অভিযুক্ত পাঁচ তরুণ। সেখানেই নাবালিকাকে গণধর্ষণ করে তারা।
পুলিশ আরও জানিয়েছে, ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ছটা নাগাদ। পরিবারের অভিযোগ পেয়েই অভিযুক্তের খোঁজে তল্লাশি অভিযান শুরু করে পুলিশ। রাতেই তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশি জেরায় গণধর্ষণের বিষয়টি তারা স্বীকার করে নিয়েছে। বাকি দু'জনের খোঁজে তল্লাশি চলছে।
আরও পড়ুন: ঠিক যেন 'বোহেমিয়ান ঘোড়া'! এক, দুই, তিন... যুবকের স্ত্রীর সংখ্যা গুনতে গুনতে পুলিশের চোখ ছানাবড়া
গত সপ্তাহেই আরও একটি ধর্ষণের ঘটনা ঘিরে তোলপাড় হয় ওড়িশা। ধেনকানাল জেলার একটি আশ্রমের ঘটনা। জানা গিয়েছে, পুরোহিতের বয়স ৪৭। তার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনেছেন ৩৫ বছরের এক মহিলা। অভিযোগ পাওয়ার পরেই ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। আশ্রমের একটি ঘরে ঘুমোচ্ছিলেন মহিলা। অভিযোগ, রাতের অন্ধকারে তাঁর ঘরে ঢুকে ধর্ষণ করেন আশ্রমের প্রধান পুরোহিত। বাধা দিলে অশ্রাব্য গালিগালাজ করা হয় বলেও অভিযোগ। চার আগস্টের ঘটনায় পুলিশে অভিযোগ করেন মহিলা। অভিযোগ পেয়েই, প্রধান পুরোহিতকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শনিবার তাকে আদালতে তোলা হলে, ১৪ দিনের হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে।
১১ আগস্ট, ১৩ বছরের এক কিশোরীর গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার ঘটনা প্রকাশ্যে আসে। সেই ওড়িশার ঘটনা। বালেশ্বর, বালাঙ্গা ও কেন্দ্রপাড়ার পর এবারের ঘটনাস্থল ওড়িশার বারগড় জেলা। ৩০ দিনের মাথায় একই ঘটনা, চারবার। ঘটনা প্রসঙ্গে পুলিশ জানিয়েছিল, মামার বাড়িতে ঘুরতে গিয়েছিল অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী। গ্রামের ফুটবল মাঠে অচৈতন্য অবস্থায় কিশোরীর দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তার শরীরে একাধিক জায়গায় পোড়া দাগ ছিল। দগ্ধ অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে বুরলার বীর সুরেন্দ্র সাঁই ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্স অ্যান্ড রিসার্চ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসা চলাকালীন তার মৃত্যু হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত মাসেই ওড়িশার একাধিক কলেজ পড়ুয়া গায়ে আগুন জ্বালিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন। সম্প্রতি কেন্দ্রপাড়ায় তৃতীয়বার এই ঘটনা ঘটেছে। এক কলেজ ছাত্রী অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যান। তিনিও গায়ে আগুন দিয়ে আত্মঘাতী হন। পরিবারের তরফে ওই ছাত্রীর প্রেমিকের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। মানসিক নির্যাতন ও হেনস্থার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রীর প্রেমিকের বিরুদ্ধে। বারবার তাঁকে ব্ল্যাকমেল করা হত বলেও অভিযোগ জানিয়েছে পরিবার।
এর আগে গত ১২ জুলাই ওড়িশার বালেশ্বরের ফকির মোহন বিশ্ববিদ্যালয়ে আরও এক ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটেছিল। পুলিশ জানিয়েছে, ফকির মোহন কলেজের বি.এড-এর ছাত্রী ছিলেন এক তরুণী। ওই কলেজের হেড অব দ্যা ডিপার্টমেন্ট সমীর কুমার সাহুর বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ তুলেছিলেন তিনি। পয়লা জুলাই কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ জানান তরুণী। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিলেন, সাতদিনের মধ্যে তদন্ত করে, উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হবে। কিন্তু সাতদিন পার করেও কলেজ কর্তৃপক্ষ অধ্যাপকের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করেননি। বরং বিষয়টি নিয়ে কারও কোনও মাথা ব্যথা ছিল না। অবশেষে কলেজের মধ্যে প্রিন্সিপালের ঘরের সামনে বিক্ষোভ দেখান তরুণী ও তাঁর বন্ধুরা।
কলেজের গেটের সামনে অধ্যাপকের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগের ভিত্তিতে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন পড়ুয়ারা। দলে ছিলেন তরুণীও। হঠাৎ সকলের মাঝখান থেকে উঠে সোজা কলেজের করিডোরে চলে যান। সেখানে গিয়েই গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে দেন। তাঁর শরীরে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। আগুনের লেলিহান শিখা দেখেই ছুটে আসেন সহপাঠীরা। তাঁরাও আগুন নেভাতে তোড়জোড় শুরু করেন। কয়েক মিনিট পর অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় তরুণীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। দুই দিন পরেই তরুণীর মৃত্যু হয়।
এরপর গত ১৯ জুলাই ওড়িশার পুরী জেলার বালাঙ্গা থানার অন্তর্গত এলাকায় আরও একটি এমন ঘটনা ঘটে। প্রাথমিকভাবে জানা যায়, ঘটনার দিন তিনজন বাইক আরোহী প্রথমে এক তরুণীকে অপহরণ করে। পরে তারা মেয়েটিকে ভরগবী নদীর তীরে নিয়ে যায়। বাইবর গ্রাম সংলগ্ন একটি নির্জন জায়গায় তরুণীকে নিয়ে যাওয়া হয়। ওখানেই তরুণীর গায়ে প্রথমে একটি দাহ্য পদার্থ ঢালে৷ এরপর তাঁর গায়ে আগুন ধরিয়ে দিয়ে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। মৃত্যু হয়েছে ওই তরুণীর।
