আজকাল ওয়েবডেস্ক: আর গয়া নয়, বিহারের অন্যতম প্রাচীন শহর এবং জনপ্রিয় তীর্থক্ষেত্রের নাম হচ্ছে 'গয়া জি'। মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমারের সভাপতিত্বে রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই প্রস্তাব অনুমোদিত হয়েছে। বিহারের অতিরিক্ত মুখ্য সচিব এস সিদ্ধার্থ জানিয়েছেন যে, স্থানীয় অনুভূতি এবং শহরের ঐতিহাসিক ও ধর্মীয় তাৎপর্য বিবেচনা করেই এই পদক্ষেপ করা হয়েছে।

জনতা দল (ইউনাইটেড)-এর জাতীয় কর্মসমিতির সভাপতি সঞ্জয় কুমার ঝা সোশাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্স-এ গয়ার নাম বদলের প্রস্তাবে অনুমোদনের জন্য মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। পোস্টে তিনি লিখেছেন, "নাম পরিবর্তনের এই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের জন্য আমি মাননীয় মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি আমার হৃদয়ের অন্তঃস্থল থেকে কৃতজ্ঞ জানাচ্ছি এবং গয়াজি-র সকল বাসিন্দাকে আন্তরিক অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানাই।"  

বিজেপির সিনিয়র নেতা এবং সংসদ সদস্য রবি শঙ্কর প্রসাদও মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্তের প্রশংসা করেছেন। গয়ার নমা বদলকে গর্বের বিষয় বলে অভিহিত করেছেন। এক্স পোস্টে তিনি লেখেন,  "রাজ্য মন্ত্রিসভার গয়া নাম গয়াজি করার সিদ্ধান্ত স্বাগত ও গর্বের বিষয়। এই সিদ্ধান্ত আবারও গয়ার ধর্মীয় গুরুত্বকে সামনে আনল এবং সনাতন সংস্কৃতির প্রতি এনডিএ সরকারের অঙ্গীকার এবং ধর্মীয় স্থানগুলি রক্ষা করার ইচ্ছাকে তুলে ধরল।" 

 

?ref_src=twsrc%5Etfw">May 16, 2025

গয়া ভারতের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় স্থান। প্রতি বছর পিতৃপক্ষ-এর সময় বিশ্বজুড়ে লক্ষ লক্ষ তীর্থযাত্রী এবং পর্যটক পিণ্ড দান করতে বিহারের এই প্রচীন শহরটিতে আসেন। পূর্বপুরুষদের আত্মার মুক্তির জন্য পিণ্ডদান একটি হিন্দু রীতি। গয়া প্রাচীন মগধ সাম্রাজ্যের একটি অংশ ছিল এবং ফাল্গু নদীর তীরে অবস্থিত। শহরটি তিনটি পবিত্র পাহাড় দ্বারা বেষ্টিত - মঙ্গলা-গৌরী, শৃঙ্গ-স্থান, রাম-শীলা এবং ব্রহ্মযোনী।

শহরের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ হল ফাল্গু নদীর তীরে অবস্থিত বিষ্ণুপদ মন্দির। জানা যায় যে, বিষ্ণুপদ মন্দির মন্দিরটি সেই স্থানে অবস্থিত যেখানে ভগবান বিষ্ণু গয়াসুর রাক্ষসের উপর তাঁর পদচিহ্ন স্থাপন করেছিলেন। গয়াসুর নিজের শরীরকে দেবতাদের মতো পবিত্র করতে এখানেই তপস্যা করেছিলেন। ব্রহ্মা প্রসন্ন হয়ে বর দেন, গয়াসুরকে দর্শন করলেই স্বর্গে যাওয়া যাবে। ফলে পাপ-অন্যায় করলেও গয়াসুরের দর্শনে স্বর্গে যেতে বাধা থাকে না। ভির বাড়তে থাকে স্বর্গে।  অবশেষে বিষ্ণুর কৌশলে সমস্যার সমাধান হয়। গয়াসুর ইচ্ছে প্রকাশ করেন, তাঁর দেহের উপর তৈরি ভূমিতে পিণ্ডদান করলে যেন স্বর্গে যেতে পারেন। বিষ্ণু ইচ্ছেপূরণ করেন। গয়াসুর মাটিতে শুয়ে পড়লে তাঁর উপর পবিত্রভূমি তৈরি হয়, যার নাম দেওয়া হয় গয়া।

এছাড়াও, গয়া-তে রয়েছে বোধগয়া-ও। যা বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৌদ্ধ পবিত্র স্থানগুলির মধ্যে একটি। এখানেই, বোধগয়ার বোধিবৃক্ষের নীচে, গৌতম জ্ঞানলাভ করেছিলেন এবং সিদ্ধান্ত থেকে তিনি বুদ্ধদেব হয়েছিলেন বলে জানা যায়।