আজকাল ওয়েবডেস্ক: দীপাবলি উপলক্ষে সপরিবারে পুজো দিতে গিয়েছিলেন মন্দিরে। বাড়ি ফেরার পথেই সব শেষ। মন্দির দর্শনের পর আর বাড়ি ফিরতে পারলেন না এক পরিবারের চারজন সদস্য। ভয়াবহ গাড়ি দুর্ঘটনার চারজনের মৃত্যু হয়েছে। ওই পরিবারের আরও চারজন সদস্য গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, দুর্ঘটনাটি ঘটেছে রাজস্থানের জয়পুরে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার ভোররাতে। জয়পুরের চোমু এলাকায় ৫২ নম্বর জাতীয় সড়কে পরপর তিনটি মোটরসাইকেলে সজোরে ধাক্কা মারে এক বেপরোয়া গাড়ি। দুর্ঘটনায় এক পরিবারের চারজন সদস্যের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন আরও চারজন।
প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানিয়েছে, দুর্ঘটনাগ্রস্ত পরিবারের সদস্যরা সিকার জেলায় খাটুশ্যাম মন্দিরে পুজো দিতে গিয়েছিলেন। বুধবার ভোররাতে সকলে একসঙ্গে বাড়ি ফিরছিলেন। চোমু থানার পুলিশ আধিকারিক প্রদীপ শর্মা জানিয়েছেন, বুধবার ভোররাত সাড়ে তিনটে নাগাদ রামপুরা কালভার্টের কাছে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে।
বেপরোয়া গতির গাড়িটি সামনের তিনটি মোটরসাইকেলে সজোরে ধাক্কা মারে। ঘটনাস্থলে একজনের মৃত্যু হয়েছিল। গুরুতর আহত অবস্থায় ছ'জনকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তৎক্ষণাৎ। ধাক্কার জেরে তিনটি মোটরসাইকেল পুরোপুরি দুমড়ে মুচড়ে যায়। স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধারকাজ শুরু করেন। তাঁরাই খবর দেন পুলিশে।
প্রথমে চোমু সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হতেই জয়পুরের এস এম এস হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয় তাঁদের। দ্বিতীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই তিনজনের মৃত্যু হয়। তাঁদের মধ্যে একজন মহিলা ছিলেন। পরিবারের সকল সদস্যরা জয়পুরের নঙ্গল জৈসা বোহরার বাসিন্দা ছিলেন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, আহতদের শারীরিক অবস্থাও আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছে।
প্রসঙ্গত, দিন কয়েক আগেই রাজস্থানে আরও একটি ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা ঘটেছিল। নতুন বাসে শর্ট সার্কিট আগুন ধরে যায়। দুর্ঘটনাটি ঘটেছে ১৪ অক্টোবর জয়সালমের - যোধপুর হাইওয়েতে। বাসটি জয়সালমের থেকে যোধপুরের দিকে যাচ্ছিল। মাঝ পথেই চলন্ত বাসে দাউদাউ করে আগুন জ্বলে ওঠে। পালানোর সুযোগ পাননি বহু যাত্রী। বাসের মধ্যেই অগ্নিদগ্ধ হয়ে ১৯ জন যাত্রী প্রাণ হারিয়েছেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বাসটি জয়সালমের থেকে দুপুর তিনটে নাগাদ যোধপুরের উদ্দেশে রওনা দিয়েছিল। বাসে মোট ৫৭ জন যাত্রী ছিলেন। জয়সালমের - যোধপুর হাইওয়েতে চলন্ত বাসের পিছনের দিকে কালো ধোঁয়া দেখা গিয়েছিল প্রথমে। কালো ধোঁয়া নজরে পড়তেই বাসটি হাইওয়ের একপাশে থামান চালক। নিমেষের মধ্যে গোটা বাসে আগুন ছড়িয়ে পড়ে।
বাসটি দাউদাউ করে জ্বলতে দেখেই স্থানীয়রা ও পথচলতি মানুষ উদ্ধারকাজে ছুটে আসেন। খবর পেয়ে তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছয় দমকলের একাধিক ইঞ্জিন ও বিশাল পুলিশ বাহিনী। দ্রুত আগুন নেভানোর কাজ শুরু হয়। কিন্তু ততক্ষণে বাসের মধ্যেই আটকে পড়েন বহু যাত্রী। জীবন্ত দগ্ধ হন ১৯ জন যাত্রী। আহতদের তড়িঘড়ি করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
পুলিশ ও দমকলের প্রাথমিক অনুমান, শর্ট সার্কিট থেকেই বাসটিতে আগুন ধরে যায়। এমনকী জানা গেছে, বাসটি মাত্র পাঁচদিন আগেই কেনা হয়েছিল। মঙ্গলবার রাতেই জয়সালমেরে দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছন রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী ভজন লাল শর্মা। পুড়ে খাক হয়ে যাওয়া বাসটি ও দুর্ঘটনাস্থল তিনি পরিদর্শন করেছেন।
সর্বশেষে পাওয়া খবর অনুযায়ী, অগ্নিদগ্ধ হয়ে আরও ১৫ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। তাঁরা সকলেই হাসপাতালে যমে-মানুষে টানাটানি অবস্থায় রয়েছেন। গুরুতর আহতদের মধ্যে চারজন মহিলা ও দু'জন শিশু রয়েছে। বাকিদের শরীরের ৭০ শতাংশ পুড়ে গেছে। তিনটি অ্যাম্বুল্যান্সে করে প্রথমে জয়সালমেরের জহর হাসপাতালে আহতদের নিয়ে যাওয়া হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হতেই তাঁদের যোধপুরের হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।
