আজকাল ওয়েবডেস্ক: সিসিটিভি ফুটেজ ফাঁস। গুজরাতে সম্প্রতি এই ঘটনা ঘিরে চরম চাঞ্চল্য। রাজকোটের একটি  হাসপাতালে এই ঘটনা ঘটে। এক ভয়াবহ সাইবার প্রতারণা দেশজুড়ে বড়সড় উদ্বেগ তৈরি করেছে। খবর অনুযায়ী, হাসপাতালে মহিলাদের গাইনোকোলজিক্যাল পরীক্ষার খুবই গোপন ভিডিও ফাঁস হয়ে গিয়েছে। ফলে সেগুলো পর্নোগ্রাফিক ওয়েবসাইটে চলে গিয়েছে। ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই হুলুস্থুল চারিদিক৷ 

তদন্তে জানা গিয়েছে, শুধু এই হাসপাতাল নয়, হ্যাকাররা সারা দেশের হাসপাতাল, স্কুল, অফিস এমনকী বাড়ি থেকেও প্রায় ৫০ হাজার ভিডিও ক্লিপ চুরি করেছে। তথ্য বলছে এটি ঘটে ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে।

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে হ্যাকাররা দিল্লি, মুম্বই, পুণে, আমদাবাদ-সহ বড় শহরগুলিতে ৮০টিরও বেশি সিসিটিভি ক্যামেরার সিস্টেমে ঢুকে পড়েছিল। জানা গিয়েছে, হাসপাতালটি তাদের সিসিটিভি ক্যামেরায় কোম্পানি থেকে দেওয়া সাধারণ পাসওয়ার্ডই ব্যবহার করছিল।

ফলস্বরূপ, হ্যাকাররা সহজেই সেই পাসওয়ার্ড দিয়ে সিস্টেমে লগইন করে। এরপর তারা গাইনোকোলজি ওয়ার্ডে রেকর্ড হওয়া একাধিক ব্যক্তিগত ফুটেজ চুরি করে নেয়। পরে ওই ক্লিপগুলো মোটা টাকার বিনিময়ে আন্তর্জাতিক পর্ন সাইটে বিক্রি করা হয়।

আমদাবাদের সাইবার ক্রাইম ব্রাঞ্চের পুলিশ জানিয়েছে, হ্যাকাররা বিশেষ এক পদ্ধতিব্যবহার করেছিল। নাম 'ব্রুট ফোর্স অ্যাটাক'। এই পদ্ধতিতে একটি কম্পিউটার প্রোগ্রাম হাজার হাজার পাসওয়ার্ড দ্রুত পরীক্ষা করতে থাকে, যতক্ষণ না সঠিক পাসওয়ার্ডটি খুঁজে পায়।

এই হ্যাকিং চক্রের প্রধান অভিযুক্ত পারিত ধামেলিয়া। জানা গিয়েছে সে বিকম পাস। সে তিনটি আলাদা সফটওয়্যার ব্যবহার করে এই কাজটি করত। তার সঙ্গী রোহিত সিসোদিয়াকে দিল্লি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রোহিত ভুল পরিচয় দিয়ে চুরি করা তথ্য ব্যবহার করে সরাসরি হাসপাতালের লাইভ ভিডিও দেখত।

সম্প্রতি এই কেলেঙ্কারি সামনে আসে। রাজকোট হাসপাতালের ফুটেজের কিছু অংশ ইউটিউবে দেখানো হয়। সেই ভিডিওগুলোতে বলা হত, পুরো ভিডিও দেখতে গেলে টেলিগ্রাম গ্রুপে যেতে হবে। সেখানে ৭০০ টাকা থেকে ৪,০০০ টাকায় ভিডিও বিক্রি করা হচ্ছিল ভিডিওগুলো। 

পরবর্তীতে প্রধান অভিযুক্তকে ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে ধরা হয়৷ কিন্তু এরপরও জুন মাস পর্যন্ত ভিডিওগুলো টেলিগ্রামে সক্রিয় ছিল।

ঘটনার জেরে সাইবার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, "এটা চরম গাফিলতি। শুধুমাত্র একটি পাসওয়ার্ড পরিবর্তন না করার কারণে কীভাবে কোটি কোটি মানুষের ব্যক্তিগত জীবন ঝুঁকির মুখে পড়তে হল! ভয়াবহ"।