আজকাল ওয়েবডেস্ক: বিহারে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে নির্বাচন কমিশনের (ECI) বিশেষ নিবিড় সংশোধন (Special Intensive Revision - SIR) কর্মসূচিকে ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক বিতর্ক। শুক্রবার (৪ জুলাই) বিহারের বিরোধী দলনেতা ও আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব এই পদক্ষেপকে “বিহারি পরিচয়ের ওপর আঘাত” বলে কড়া ভাষায় সমালোচনা করেন।
তেজস্বী অভিযোগ করেন, “সারা দেশে কেবল বিহারিদেরই নাগরিকত্ব প্রমাণ করতে বলা হচ্ছে কেন? এটা গোটা বিহারের অসম্মান।” তিনি আরও বলেন, “হিন্দু, মুসলিম, দলিত, পিছিয়ে পড়া—সবারই ভোটার তালিকায় নাম রাখতে নতুন করে নাগরিকত্বের প্রমাণ দিতে বলা হচ্ছে।” তেজস্বী প্রশ্ন তোলেন, “তাহলে কি এতদিনের ভোটার তালিকা ভুয়া ছিল? যদি তাই হয়, তবে ২০২৫-এর আগে হওয়া সমস্ত নির্বাচনই কি জাল?”
তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন, এই নতুন নিয়মে প্রায় ৪.৫ কোটি বিহার অভিবাসীর ভোটাধিকার খর্ব হতে পারে। সাধারণ মানুষ হারানো নথিপত্র জোগাড় করতে গিয়ে দুর্নীতির শিকার হবেন বলেও তিনি অভিযোগ করেন। এই ইস্যুতে ইতিমধ্যেই কংগ্রেস ও বাম দলসমূহের সঙ্গে মিলে INDIA জোট নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে দেখা করেছে। তারা অভিযোগ করেছে, এই প্রক্রিয়া “প্রায় ১ কোটি” মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নিতে পারে এবং ECI এই বিষয়ে "উদাসীন ও অসহযোগী" মনোভাব দেখিয়েছে।
নির্বাচন কমিশন বলেছে, “অবৈধ অভিবাসী” ও অস্থায়ী বাসিন্দাদের চিহ্নিত করতেই এই উদ্যোগ, এবং সাধারণ পরিচয়পত্রের পাশাপাশি জন্মসনদ, জমির কাগজ, ম্যাট্রিক সার্টিফিকেট ইত্যাদি চাওয়া হচ্ছে। তবে পর্যবেক্ষকদের মতে, বিহারের মতো রাজ্যে যেখানে দরিদ্রতা, জমিহীনতা, ও শিক্ষার হার কম, সেখানে এই প্রক্রিয়া আরও বিভ্রান্তি তৈরি করবে।
এদিকে এনডিএ-র শরিকদের মধ্যে উপেন্দ্র কুশওয়াহা (RLM) সতর্ক করেছেন, যেন কোনও প্রকৃত ভোটার বাদ না পড়ে। তবে বিজেপি, জেডিইউ, এলজেপি এখনও এই বিষয়ে চুপ করে আছে। ভোটের আগে এই ইস্যু বিহারে এক নতুন রাজনৈতিক বিভাজনের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠতে পারে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
