আজকাল ওয়েবডেস্ক: বিহারে বিধানসভা নির্বাচনের ফল শুধু কংগ্রেসের বড় ভরাডুবিই নয়, বড়সড় আঘাত হেনেছে রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বের উপরেও।

চলতি বছরের শুরুতে রাহুল গান্ধী বিহার জুড়ে সফর করে ভোটারদের বোঝানোর চেষ্টা করেছিলেন, বিজেপি ভোট ‘চুরি’ করছে। আগস্ট মাসে তিনি ‘ভোটার অধিকার যাত্রা’ শুরু করেন, যা আগের দুই যাত্রার সাফল্যের ভিত্তিতে কংগ্রেসের অন্তত কিছুটা আত্মবিশ্বাস বাড়িয়েছিল।

সাসারাম থেকে শুরু হয়ে পাটনায় শেষ হওয়া এই যাত্রা ২৫টি জেলা এবং ১১০টি বিধানসভা কেন্দ্র অতিক্রম করে প্রায় ১,৩০০ কিলোমিটার পথ কভার করেছিল।

কিন্তু ভোটার অধিকার যাত্রা যে পথ দিয়ে অতিক্রম করেছে সেই পথের একটিও কেন্দ্র কংগ্রেসের দিকে ঝুঁকছে বলে মনে হচ্ছে না। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত, বিহার জুড়ে ৬১টি আসনে লড়াই করে কংগ্রেস মাত্র চারটি আসনে বাল্মীকি নগর, কিষানগঞ্জ, মনিহারী এবং বেগুসরাইয়ে এগিয়ে রয়েছে।

কংগ্রেসের ধারণা ছিল, রাহুলের আগের যাত্রাগুলি ২০২৪ লোকসভা এবং ২০২৩ তেলেঙ্গানা নির্বাচনে ভালো ফল করতে সাহায্য করেছিল। ২০২২ থেকে ২০২৪ এই দুই ‘ভারত জোড়ো’ যাত্রার রুটে দল মোট ৪১টি আসনে জিতেছিল কংগ্রেস এবং তেলেঙ্গানায় ক্ষমতায়ও এসেছিল।

কিন্তু গঙ্গা–দিয়ারা অঞ্চলে রাহুল গান্ধী ম্যাজিক স্পষ্টতই কাজ করেনি। বিহারে বিধানসভা নির্বাচনে এনডিএ ঝড়। বিজেপি ও জেডিইউ উভয়ই ১০১টি আসনে লড়ে যথাক্রমে ৯১ ও ৮০টিতে এগিয়ে। সহযোগীরাও উজ্জ্বল ফল করছে।

চিরাগ পাসওয়ানের এলজেপি (রামবিলাস) ২৮টির মধ্যে ২২টিতে, উপেন্দ্র কুশওয়ারার আরএলএম ৬টির মধ্যে ৩টিতে, জিতনরাম মাঁঝির হাম ৬টির মধ্যে ৫টিতে এগিয়ে রয়েছে।

জয় একপ্রকার নিশ্চিত হওয়ার পরেই শুক্রবার কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীকে তীব্র আক্রমণ করল বিজেপি। দলের আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য এই কটাক্ষ ছুঁড়ে দিয়েছেন।

গণনা শুরুর কিছু পরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি মানচিত্র ভাইরাল হয়েছে যেখানে গত দুই দশকে রাহুলের ‘৯৫টি নির্বাচনী পরাজয়’ দেখানো হয়েছে।

মালব্য ২০০৪ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত নির্বাচনের বিবরণ দিয়ে একটি গ্রাফিক পোস্ট করেছেন যেখানে রাহুলের নেতৃত্বে কংগ্রেস হয় রাজ্য ক্ষমতা হারিয়েছিল অথবা ভোটে জিততে ব্যর্থ হয়েছে।

পোস্টে মালব্য লিখেছেন, ‘রাহুল গান্ধী! আরও একটি নির্বাচন, আরও একটি পরাজয়! যদি নির্বাচনী ধারাবাহিকতার জন্য পুরষ্কার থাকত, তাহলে তিনি সবগুলিই জিততেন।’

মালব্য ৯৫টি নির্বাচনের একটি মানচিত্রও শেয়ার করেছেন যেখানে রাহুল দলের কেন্দ্রীয় প্রচারকদের একজন হওয়ার পর থেকে কংগ্রেস যেসব রাজ্যে হেরে গিয়েছে। এই তালিকায় প্রায় প্রতিটি প্রধান রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

হিমাচল প্রদেশ (২০০৭, ২০১৭) এবং পাঞ্জাব (২০০৭, ২০১২, ২০২২) থেকে শুরু করে গুজরাট (২০০৭, ২০১২, ২০১৭, ২০২২), মধ্যপ্রদেশ (২০০৮, ২০১৩, ২০১৮, ২০২৩), মহারাষ্ট্র (২০১৪, ২০১৯, ২০২৪) এবং দিল্লি, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ এবং বিহারের একাধিক নির্বাচন। এতে উত্তর-পূর্ব, দক্ষিণের রাজ্য, কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিতে পরাজয় এবং ওড়িশা ও অন্ধ্রপ্রদেশে বারবার পরাজয়ও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।