আজকাল ওয়েবডেস্ক: বুধবার সকাল থেকেই দেশের বিভিন্ন বিমানবন্দরে চেক-ইন ব্যবস্থায় ব্যাপক বিঘ্ন ঘটে, যার ফলে একাধিক বিমানের উড়ানে বিলম্ব ঘটে। এই সমস্যার মূল কারণ ছিল একটি বড় ধরনের সিস্টেম আউটেজ। চেক-ইন ও আইটি-সংক্রান্ত পরিষেবা ভেঙে পড়ায় বিমান সংস্থাগুলোকেও কাজ বজায় রাখতে হাতেকলমে চেক-ইন প্রক্রিয়ায় যেতে হয়েছে।


বারাণসী বিমানবন্দরে যাত্রীদের জানানো হয়— “Microsoft Windows বিশ্বজুড়ে বড় ধরনের পরিষেবা বিভ্রাটের সম্মুখীন হয়েছে। আইটি পরিষেবা এবং বিমানবন্দরের চেক-ইন সিস্টেমও এর ফলে প্রভাবিত হয়েছে।” নোটিসে আরও উল্লেখ করা হয় যে অন্তত চারটি বিমান সংস্থা— ইন্ডিগো, স্পাইসজেট, আকাসা এয়ার এবং এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেস—এই বিভ্রাটে ক্ষতিগ্রস্ত। তবে মাইক্রোসফট বা সংশ্লিষ্ট বিমান সংস্থাগুলোর তরফে তাৎক্ষণিক কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।


এই গোলযোগের প্রভাব পড়ে হায়দরাবাদের রাজীব গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে, যেখানে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি দেখা দেয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে দেখা যায়—ভোরবেলা বিমানবন্দরের একটি হেল্পডেস্কে যাত্রীদের বিশাল ভিড় জমেছে। অনেকে হাতে টিকিট ও মোবাইল ফোন তুলে ধরে চিৎকার করছেন, বিলম্বিত বিমান সম্পর্কে তথ্য জানতে চাপ দিচ্ছেন কর্মীদের উপর।


অন্যদিকে, বেঙ্গালুরু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরেও বুধবার সকালে বিমান চলাচলে বড় ধরনের বিঘ্ন ঘটে। দেরিতে পৌঁছনো বিমানের কারণে অন্তত চারটি ফ্লাইট বিলম্বিত হয় এবং ইন্ডিগো বেশ কয়েকটি পরিষেবা বাতিল করে। সেদিন ইন্ডিগো মোট ৪২টি ফ্লাইট বাতিল করে—যার মধ্যে ২২টি আগমন এবং ২০টি প্রস্থান।


দিল্লি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লিমিটেড একইদিন সকালে এক্স-এ একটি অ্যাডভাইজরি জারি করে জানায় যে, কিছু দেশীয় বিমান সংস্থা কার্যক্রমে সমস্যার মুখোমুখি হয়েছে, যার ফলে ফ্লাইট বিলম্ব বা সময়সূচি পরিবর্তন হতে পারে। ডায়াল জানায়, “আমাদেরদল সকল স্টেকহোল্ডারের সঙ্গে সমন্বয় রেখে যাত্রীদের নির্বিঘ্ন অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করার জন্য কাজ করে যাচ্ছে।”


এদিকে বিমান সংস্থাগুলোও পরিস্থিতি সম্পর্কে আপডেট দেয়। এয়ার ইন্ডিয়া জানায় যে তৃতীয় পক্ষের সিস্টেম সম্পূর্ণরূপে পুনরুদ্ধার করা হয়েছে এবং দেশের সব বিমানবন্দরে চেক-ইন পরিষেবা স্বাভাবিক। এয়ার ইন্ডিয়া তাদের বিবৃতিতে জানায়— “সমস্ত ফ্লাইট স্বাভাবিক সময়সূচি অনুযায়ী চলছে। যাত্রীদের অসুবিধার জন্য আমরা দুঃখিত এবং তাদের ধৈর্যের জন্য ধন্যবাদ জানাই।”


ইন্ডিগোও এক বিবৃতিতে জানায় যে সাম্প্রতিক কয়েকদিন ধরে প্রযুক্তিগত গোলযোগ, বিমানবন্দর জ্যাম এবং বিভিন্ন অপারেশনাল কারণে একাধিক ফ্লাইট বিলম্বিত ও বাতিল হয়েছে। বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়— “আমাদের দল দ্রুত স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে কাজ করছে। ক্ষতিগ্রস্ত যাত্রীদের বিকল্প বিমান পরিষেবা বা ফেরত টাকা প্রদান করা হচ্ছে।”


উল্লেখযোগ্যভাবে, ঠিক গত মাসেও দিল্লির ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে একটি বড় প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণে ৮০০-র বেশি দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বিলম্বিত হয়েছিল। ওই সময় অটোম্যাটিক মেসেজ সুইচিং সিস্টেম (AMSS)-এ ত্রুটি দেখা দেয়, যার ফলে এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলারদের হাতে লিখে ফ্লাইট পরিকল্পনা তৈরি করতে হয়েছিল—যা অত্যন্ত সময়সাপেক্ষ ছিল। এর ফলে সেদিনও বিমানবন্দরে দীর্ঘ লাইন, সময়সূচিতে ব্যাপক বিশৃঙ্খলা এবং যাত্রীদের দুর্ভোগ বেড়েছিল।