আজকাল ওয়েবডেস্ক: বিয়েবাড়িতে ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা। গায়ে হলুদের সময় নাচগান, হুল্লোড়ে মেতেছিলেন সকলে। নাচ করছিলেন পাত্র ও পাত্রীও। সেই সময় হঠাৎ ফেটে যায় হাইড্রোজেন বেলুন। মুখের সামনে সেই বেলুন ফেটে দগ্ধ পাত্র ও পাত্রী। বর্তমানে দু'জনেই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, গায়ে হলুদের জন্য বিয়ের আসরে হাইড্রোজেন বেলুন দিয়ে সাজানো হয়েছিল। তার পাশেই একের পর এক রঙিন বন্দুক ফাটানো হচ্ছিল। তাপমাত্রার কারণে পরপর বেলুনে আগুন ধরে যায়। এরপর হাইড্রোজেন বেলুনে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে।
জানা গেছে, হাইড্রোজেন বেলুন বিস্ফোরণের জেরে পাত্রীর মুখ, পিঠের কিছু অংশ পুড়ে গেছে। অন্যদিকে পাত্রের চুল পুরোপুরি পুড়ে যায়। তাঁর আঙুল ও পিঠও বিস্ফোরণের জেরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই দুর্ঘটনার পরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার বর্ণানা করেছেন তাঁরা। জানিয়েছেন, 'আমরা ভাবতেও পারিনি, বিশেষ দিনের পরিকল্পনা থেকে এত বড় দুর্ঘটনা ঘটবে। মজার মাঝে দুর্বিষহ অভিজ্ঞতা যে হতে পারে, তা কল্পনাতীত।'
পাত্র ও পাত্রী জানিয়েছেন, পোড়া দাগ মেকআপ দিয়ে কোনও মতে ঢেকে রেখেছিলেন তাঁরা। পোড়া চুলের অংশ কেটে বাদ দিয়ে দেন। একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, হাইড্রোজেন বেলুন হাতে নিয়ে বিয়ের আসরে প্রবেশ করেন তাঁরা। সেই সময়েই বেলুনের কাছে রঙিন বন্দুক ফাটানো হয়। গরমের কারণে পরপর বেলুনে বিস্ফোরণ ঘটে।
পরিকল্পনা ছিল, আগে হাইড্রোজেন বেলুন উড়িয়ে দেওয়া হবে। তারপর রঙিন বন্দুক ফাটানো হবে। কিন্তু হুল্লোড়ের মাঝেই তাড়াহুড়ো এক সময়েই সেই বন্দুক ফাটানো হয়। দগ্ধ অবস্থায় তড়িঘড়ি করে পাত্র ও পাত্রীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাঁরা ছাড়া পান। যদিও নির্দিষ্ট দিনেই বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন নবদম্পতি।
প্রসঙ্গত, গত মে মাসে বিয়েবাড়ির আতশবাজি থেকে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটেছিল। আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায় একটি মাটির বাড়ি। ঘটনাটি ঘটেছিল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার দাসপুর ব্লকের বাসুদেবপুর গ্রামে। প্রায় দেড়-দু'ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে দমকলের একটি ইঞ্জিন। পুরো ঘটনা তদন্ত শুরু করেছে দমকল ও পুলিশ।
জানা গিয়েছে, দাসপুর ব্লকের বাসদেবপুর গ্রামের বাসিন্দা মনোজ রায়ের বাড়ির পাশে একটি বিয়েবাড়ির অনুষ্ঠান চলছিল। অনুষ্ঠানের আনন্দ হঠাৎ আতঙ্কে পরিণত হল। গতকাল, মঙ্গলবার রাতে বিয়েবাড়িতে আতশবাজি ফাটানোর সময় বাজির ফুলকি এসে পড়ে মনোজ রায়ের বাড়ি চালে। তাতেই ঘটে বিপত্তি। মুহূর্তের মধ্যে দাউদাউ করে আগুন জ্বলে মাটির বাড়ির খড়ের চালে। মুহূর্তের মধ্যে আগুনের লেলিহান শিখা এবং কালো ধোঁয়ায় ঢেকে যায় পুরো এলাকা।
ঘটনার পর স্থানীয় বাসিন্দারা বালতি, মগ নিয়ে পুকুর থেকে জল তুলে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু, তাতে কোনও প্রভাবই পড়েনি। খবর পেয়ে দ্রুত ছুটে আসে দমকলের একটি ইঞ্জিন। পৌঁছন দাসপুর থানার পুলিশ আধিকারিকরাও। প্রায় দেড়-দু'ঘণ্টার প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। কিন্তু, ততক্ষণে গৃহস্থের আসবাবপত্র থেকে শুরু করে গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র সবকিছুই পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
এ ব্যাপারে মনোজ রায় বলেন, বাড়ির পাশে একটি বিয়েবাড়ি ছিল। আতশবাজি ফাটানোর সময় আগুনের ফুলকি মাটির বাড়ির খড়ের চালে এসে পড়ে। তারপরেই দাউদাউ করে জ্বলে উঠে পুরো বাড়ি। বাড়িতে পাঁচজনকে নিয়ে থাকতেন তিনি। এই বাড়িটিই ছিল তাঁর একমাত্র ঠাঁই। বাড়ি হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন পরিবারের সদস্যরা।
