আজকাল ওয়েবডেস্ক: এক যুবক এবং এক যুবতীর গুলিবিদ্ধ দেহ উদ্ধার হয়েছে বুধবার। ত্রিপুরার গোমতী জেলার উদয়পুর শহরের হলোখেত রেল সেতুর কাছে একটি হুণ্ডাই গাড়ির ভিতর থেকে এটি উদ্ধার হয়। এই ঘটনায় এলাকায় সম্প্রতি বড় ধরনের চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর পাওয়া গিয়েছে, স্থানীয় বাসিন্দারা প্রথমে গুলির শব্দ শুনতে পান। তারপর পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ এবং দমকল কর্মীরা যখন ঘটনাস্থলে পৌঁছন। তখন গাড়ির ভিতরে দু'জনকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়।
উদ্ধারকারীরা প্রথমে মনে করেছিলেন, চালকের আসনে থাকা যুবকটি হয়তো তখনও বেঁচে আছেন। তাঁকে দ্রুত উদ্ধার করে গোমতী জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে হাসপাতালে পৌঁছনোর আগেই চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। পিছনের সিটে বসা যুবতীকেও মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়।
মৃত দু'জনের পরিচয় জানা গিয়েছে। তাঁরা হলেন আমতলীর বাসিন্দা সুহেল মিয়া এবং শিলঘাটির বাসিন্দা জান্নাত আখতার। দু'জনেই একই জেলার বাসিন্দা। খবর পেয়ে গোমতী জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) ডঃ কিরণ কুমার-সহ অন্যান্য পুলিশকর্তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছন। তদন্তের দায়িত্বে থাকা ডঃ কুমার সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, টহলের সময় মৃতদেহগুলি নজরে আসে তাঁদের। তিনি বলেন, “মেয়েটি ঘটনাস্থলেই মারা গিয়েছিলেন। ছেলেটির শরীরেও গুলির মারাত্মক আঘাত ছিল। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে অ্যাম্বুল্যান্সে তাঁর মৃত্যু হয়।”
ঘটনার জেরে আর কে পুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। তবে এটি খুন নাকি আত্মহত্যা, তা এখনই নিশ্চিত করে বলতে চাইছেন না আধিকারিকেরা। এক পুলিশ কর্তা বলেন, “এখন আমরা কোনও দিকই বাদ দিচ্ছি না। সব সম্ভাব্য কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
একটি ফরেনসিক দল এসে গাড়িটি খুঁটিয়ে পরীক্ষা করেছে। ঘটনাস্থলে রক্ত বা গুলি চলার প্রমাণ সংগ্রহ করেছে। প্রাথমিক তথ্যে জানা গিয়েছে, জান্নাতের মাথার পেছনে গুলি লেগেছিল। অন্যদিকে সুহেলের বুকে বাঁ দিকে গুলি লাগে। গাড়ির ভেতর থেকে একটি পিস্তলও পাওয়া গিয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, আধিকারিকেরা অস্ত্রটি নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আগেই স্থানীয়রা পিস্তলটি দেখতে পেয়েছিলেন।
বর্তমানে ঘটনার আগের সিসিটিভি ফুটেজ এবং মৃতদের কল-ডিটেল রেকর্ড হাতে আসার অপেক্ষা করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে তদন্তকারীরা পুরো ঘটনার ছবি স্পষ্ট করার চেষ্টা করছেন। উদয়পুরের মতো শান্ত শহরে এহেন ঘটনায় শোকের পাশাপাশি রহস্যও ঘনীভূত হয়েছে।
