আজকাল ওয়েবডেস্ক: অবশেষে উপরাষ্ট্রপতি পদের জন্য নিজেদের প্রার্থী ঘোষণা করল কেন্দ্রের শাসকদল বিজেপি। আগের বার বাংলার রাজ্যপালকে উপরাষ্ট্রপতির পদ দিয়েছিল ভারতীয় জনতা পার্টি। এবারও ফের এক রাজ্যপালকেই আসরে নামাচ্ছে তারা। রবিবার সরকারিভাবে মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল সিপি রাধাকৃষ্ণনের নাম ঘোষণা করা হয় এনডিএ-এর তরফে।

রবিবারই জেপি নাড্ডা জানিয়েছিলেন, উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে দলমত নির্বিশেষে একজন প্রার্থীই যাতে দাঁড় করানো যায় তার জন্য বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে কথা বলছে বিজেপি। এরপরই ভেসে ওঠে কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুরের নাম। কিন্তু শেষ পর্যন্ত যাবতীয় জল্পনায় জল ঢেলে সঙ্ঘ ঘনিষ্ঠ রাধাকৃষ্ণনের উপরেই ভরসা রাখল শাসক দল।

নাম ঘোষণার পরেই রাধাকৃষ্ণনকে শুভেচ্ছা জানিয়ে এক্স হ্যান্ডেলে ( সাবেক টুইটার ) বার্তা পাঠান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। পাল্টা মোদিকে ধন্যবাদ জানিয়ে পোস্ট করেন রাধাকৃষ্ণনও। নিজের এক্স হ্যান্ডেলে তিনি লেখেন, “আমাদের সবার ভালবাসার জননেতা এবং দেশের সম্মানীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে আমি হৃদয় থেকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি আমাকে এনডিএ-র পক্ষ থেকে উপরাষ্ট্রপতি পদের দাবিদার ঘোষণা করার জন্য এবং দেশের সেবা করার সুযোগ দেওয়ার জন্য।” প্রসঙ্গত, চন্দ্রপূরম পন্নুসামি রাধাকৃষ্ণন তামিলনাড়ু বিজেপিতে দীর্ঘ সময় অতিবাহিত করেছেন। সঙ্ঘঘনিষ্ঠ প্রাক্তন বিজেপি নেতাকে উপরাষ্ট্রপতি পদে বসিয়ে রাজ্যসভায় বিজেপি নিজেদের অবস্থান আরও মজবুত করতে চাইছে বলেই মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।\

আরও পড়ুনঃ রাজনীতি নয়, সুরেই মুগ্ধতা ছড়ালেন মুখ্যমন্ত্রী! রাজভবনে 'পহেলা নশা' পরিবেশনে কনরাড সাংমার সঙ্গীতপ্রেমে

প্রসঙ্গত, ধনখড়ের আকস্মিক পদত্যাগের পর বিজেপি সাবধানতার সঙ্গে পদক্ষেপ নিচ্ছে। কারণ তারা চায় গত এক বছর ধরে দল এবং প্রাক্তন উপরাষ্ট্রপতির মধ্যে যে অবিশ্বাস তৈরি হয়েছিল তার পুনরাবৃত্তি না হোক। উপরাষ্ট্রপতির খুব বেশি ক্ষমতা নাও থাকতে পারে, তবে রাজ্যসভার কার্যধারা তদারকি এবং সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্বে রয়েছেন।

আরও পড়ুনঃ মেঘের দেশে যৌনতার সীমা ছাড়ালেন তরুণী! মায়ের ঘুম ভাঙতেই যা হল...

জানা গিয়েছে, ধনখড়ের পদত্যাগের নেপথ্যে একটি প্রধান কারণ ছিল যে তিনি সরকারকে অবহিত না করেই নিজে থেকেই সিদ্ধান্ত নিতে শুরু করেছিলেন। সূত্রগুলি জানিয়েছে, বিচারপতি যশবন্ত বর্মার ইমপিচমেন্টের বিষয়ে সরকারের অবস্থানের সঙ্গে একমত হতে অস্বীকার করলে ধনখড়ের পদত্যাগের বিষয়টি আরও জটিল হয়ে ওঠে।

বিজেপির নেতৃত্বাধীন জাতীয় গণতান্ত্রিক জোট (এনডিএ) ক্ষমতাসীন জোটের প্রার্থী নির্বাচনের জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং বিজেপি সভাপতি জে পি নাড্ডাকে ক্ষমতা দিয়েছে। সূত্রের খবর, বিজেপি আগামী সপ্তাহে তার শীর্ষ নেতা এবং নিকটতম মিত্রদের নিয়ে একটি মেগা বৈঠকের পরিকল্পনা করছে, যা উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে এনডিএ-র সাফল্য সত্ত্বেও শক্তি প্রদর্শনের একটি বড় অংশ।

মঙ্গলবার, দ্বিতীয় পর্বের বাদল অধিবেশন শুরু হওয়ার সময়, সমস্ত এনডিএ সাংসদদের সংসদীয় দলের বৈঠকের জন্য ডাকা হয়েছে। সূত্র আরও জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী মোদি সংসদ অডিটোরিয়ামে সাংসদদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দেবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

লোকসভা এবং রাজ্যসভার সদস্যদের দ্বারা উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন, উচ্চকক্ষের মনোনীত সদস্যরাও ভোট দেওয়ার যোগ্য। সংবিধান অনুযায়ী, মধ্যবর্তী নির্বাচনের ক্ষেত্রে, বর্তমান রাষ্ট্রপতি পূর্ণ পাঁচ বছরের মেয়াদ পান। কোনও ব্যক্তি ভারতের নাগরিক না হলে, ৩৫ বছর বয়স পূর্ণ না করলে এবং রাজ্যসভার সদস্য হিসেবে নির্বাচনের জন্য যোগ্য না হলে তিনি উপরাষ্ট্রপতি হিসেবে নির্বাচিত হতে পারবেন না। কোনও ব্যক্তি যদি ভারত সরকার, রাজ্য সরকার বা কোনও অধস্তন স্থানীয় কর্তৃপক্ষের অধীনে কোনও লাভজনক পদে অধিষ্ঠিত থাকেন তবে তিনিও উপরাষ্ট্রপতি পদের জন্য যোগ্য নন।