আজকাল ওয়েবডেস্ক: আবার ফ্লপ কংগ্রেস। এ বার রাজনৈতিকভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য বিহারে। শুক্রবার ভোটগণনা শুরু হওয়ার পর থেকেই ‘বেপাত্তা’ কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। অনেকের দাবি করেন, তাঁকে লন্ডনের হিথরো বিমাবন্দরে ভাগ্নির সঙ্গে দেখা গিয়েছে। কিন্তু কংগ্রেস নেত্রী সুপ্রিয়া শ্রীনাতে এবং রাগিনী নায়েক সেই দাবি খারিজ কর বলেন ভিডিওটি সেপ্টম্বরের। তাহলে, বিহারে কংগ্রেসের প্রধান মুখ হিসেবে পরিচিত বিরোধী দলনেতা ঠিক কোথায়? বিহারে এনডিএ যখন নিরঙ্কুশ জয়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, তখন ইন্টারনেট এবং সোশ্যাল মিডিয়া মিম এবং প্রশ্নে ভরে উঠছে: রাহুল গান্ধী কোথায়?
অনেকেই দাবি করেন, রাহুল লন্ডন বা মাস্কাটে চলে গিয়েছেন. কিন্তু একটি ফ্যাক্ট চেকিং ওয়েবসাইট জানিয়েছে কংগ্রেসের তরফ থেকে এ বিষয়ে কিছুই জানানো হয়নি। কারও কাছে কোনও ধারণা নেই যে রাহুল কোথায়?
বিজেপির জাতীয় মুখপাত্র জয়বীর শেরগিল বলেন, “রাহুল গান্ধী যখন বিদেশে অন্য সময় অঞ্চলে ঘুম থেকে উঠবেন, তখন এনডিএ এখানে ট্রফি তুলে নেবে।” তিনি আরও ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, রাহুল বিদেশে আছেন। কিন্তু তাঁর দাবির পক্ষে কোনও প্রমাণ দেননি।
বামেরা বিহারে কংগ্রেসের চেয়ে বেশি আসনে এগিয়ে রয়েছে। রাহুল মহাগঠবন্ধনের মিত্র, আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদবের সঙ্গে বিহারে ব্যাপক প্রচার চালিয়েছিলেন। তাঁর ভোটাধিকার যাত্রা ২৩টি জেলা জুড়ে ১৬ দিনে ১,৩০০ কিলোমিটারেরও বেশি পথ অতিক্রম করেছিল। সেখানে ভোটার অধিকার এবং স্থানীয়দের সঙ্গে সংযোগ তৈরির উপর জোর দেওয়া হয়েছিল। যা দেখে মনে হয়েছিল এনডিএ-র ডবল ইঞ্জিন সরকার ধাক্কা খাবে বলে মনে হয়েছিল। কিন্তু হল বিপরীত। তৃণমূল-স্তরে জনসংযোগ এক সপ্তাহে সম্ভব হয় না। আরজেডি এবং কংগ্রেসের প্রচার ধরণও ছিল ভিন্ন। তেজস্বী চাকরি এবং বেকারত্ব নিয়ে প্রচার করেছিলেন এবং রাহুল গান্ধীর প্রচার ছিল ভোট চুরি এবং এসআইআর নিয়ে।
উচ্চাকাঙ্খার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভারতের সবচেয়ে পিছিয়ে পড়া রাজ্যটির মানসিকতা ভেঙে ফেলা, যেখানে গড় মাসিক আয় মাত্র ৫,৭০০ টাকা। তা যতই মসৃণ, যুক্তিসঙ্গত বা বাস্তবসম্মত শোনাক না কেন।
এরপর আসল নির্বাচনী প্রচারের সময় যখন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমারের মতো হেভিওয়েটরা পরপর একের পর এক সমাবেশ করছিলেন। তখন রাহুল গান্ধী হঠাৎ করেই বেপাত্তা হয়ে যান। ১ সেপ্টেম্বর ভোটাধিকার যাত্রা শেষ করে দক্ষিণ আমেরিকার পাঁচ দেশের সফরে যান রাহুল। এর পরেই ভোট চুরি নিয়ে হাইড্রোজেন বোমা ফেলেন। যা কখনও বিস্ফোরিত হয়নি। রাহুল কলম্বিয়া থেকে ভোট চুরি নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করে মুখ খুলতে পারতেন। কিন্তু তিনি ময়দান থেকেই উধাও হয়ে যান। তাঁর অনুপস্থিতি প্রশান্ত কিশোরের কথাতেই মান্যতা দেয়, “এরা (দিল্লির নেতারা) হলেন পরিযায়ী পাখির মতো, যারা কেবল নির্বাচনের সময় বিহারে ডানা ঝাপটান।”
রাহুল গান্ধী একজন বড় নেতা, কিন্তু বিহারে তেমনটা মনে হয় না। মহাজোটের পরাজয়ের পর তার অনুপস্থিতি এবং সম্পূর্ণ নীরবতা সেই ইঙ্গিতই দেয়।
