আজকাল ওয়েবডেস্ক: দক্ষিণ দিল্লির অভিজাত এলাকা বসন্ত বিহারে সম্প্রতি ব্যাপক আলোড়ন। নামকরা পান মশলা সংস্থার কর্ণধার কমল কিশোর চৌরসিয়ার পুত্রবধূর ঝুলন্ত দেহ তাঁরই বাড়িতে উদ্ধার হয়েছে। পান মশলার নামজাদা ব্র্যান্ড 'কমলা পসন্দ' ও 'রাজশ্রী'র মালিক কমল কিশোর চৌরসিয়া। সম্প্রতি তাঁর পুত্রবধূ দীপ্তি চৌরসিয়ার (৪০) রহস্যজনক মৃত্যু। ঘটনাটি ঘটে দক্ষিণ দিল্লির বসন্ত বিহার এলাকার বিলাসবহুল একটি বাড়িতে। প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হয়েছিল, তিনি আত্মহত্যা করেছেন। অবশেষে সত্য ফাঁস। তিনি একটি চিঠি রেখে যান। সেই সূত্র ধরে পুলিশ ঘটনার তদন্ত ফাঁস করে৷ এই ঘটনার দুদিন পর এবার মুখ খুললেন দীপ্তির পরিবার। দীপ্তির ভাই সরাসরি তাঁর শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে অত্যাচারের অভিযোগ তুলেছেন। 

দীপ্তি কলকাতার মেয়ে। নামী পান মশলা সংস্থার কর্ণধার কিশোর চৌরসিয়ার পুত্র হরপ্রীতের সঙ্গে ২০১০ সালে বিয়ে হয় তাঁর। তাঁদের ১৪ বছর বয়সি এক ছেলেও রয়েছে। ঘটনার দিন দীপ্তির স্বামী জিমে গিয়েছিলেন। ফিরে এসেই দেখেন স্ত্রীর ঝুলন্ত দেহ৷ এরপর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। 

এবার দীপ্তির ভাই সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, শ্বশুরবাড়িতে তাঁর বোনের উপর দিনের পর দিন অত্যাচার করা হত৷ স্বামীর একাধিক বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক ছিল৷ গোপনে একজনকে বিয়েও করেছিলেন হরপ্রীত। এমনকী মুম্বইয়ে তাঁর এক অবৈধ সন্তানও রয়েছে বলে দাবি করেন দীপ্তির ভাই৷ জানতে পারায় দীপ্তি ভেঙে পড়েন। দীপ্তির ভাই বলেন, ‘‘আমরা সম্প্রতি ওঁর (দীপ্তির স্বামীর) বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক এবং গোপন বিয়ের খবর পেয়েছিলাম। বোনকে কলকাতার বাড়িতে নিয়েও এসেছিলাম। কিন্তু শ্বশুরবাড়ির লোকজন এসে ওকে আবার নিয়ে যায়। ওঁরা কথা দিয়েছিলেন, বোনকে যত্নে রাখবেন। কিন্তু কথা রাখেননি।’’

অন্যদিকে চৌরসিয়া পরিবারের আইনজীবী এই সমস্ত অভিযোগ 'ভিত্তিহীন' বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁর দাবি, কারও বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগের প্রমাণ মেলেনি। কোনও নোটও উদ্ধার হয়নি৷ দীপ্তির মৃত্যুতে শোকসন্তপ্ত দুই পরিবার। 

খবর অনুযায়ী, দীপ্তির স্বামী দিনের পর দিন তাঁর উপর শারীরিক নির্যাতন চালাতেন। সবকিছু মিলিয়েই দীপ্তি দিনের পর দিন মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। শেষমেশ চরম পদক্ষেপ করলেন বধূ। 

সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, ওড়না গলায় পেঁচিয়ে ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হন বধূ। পুলিশ ঘর থেকে একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার করেছে। সেই নোটে দীপ্তি কাউকে দায়ী করেননি বলেই খবর। ওই নোটে লেখা ছিল, "যদি কোনও সম্পর্কে ভালোবাসা এবং বিশ্বাস না থাকে, তবে বেঁচে থাকার কোনও মানে নেই।"

পুলিশের প্রাথমিক সন্দেহ ছিল, সম্ভবত পারিবারিক সমস্যার জেরেই হতাশাগ্রস্ত ছিলেন দীপ্তি। এর ফলেই এমন চরম পথ বেছে নিয়েছেন তিনি। ইতিমধ্যেই ঘটনার বিস্তারিত তদন্ত শুরু হয়েছে। পুলিশ মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সফদরজং হাসপাতালে পাঠিয়েছে। তবে, এই ঘটনা নিয়ে এখনও পর্যন্ত পুলিশের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি। পুরো ঘটনা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।