আজকাল ওয়েবডেস্ক: মনে জেদ থাকলে যে সব করা সম্ভব, তা প্রমাণ করছে বিহারের এক ছোট শিশু। ঘরে আলো নেই, বাবা শয্যাশায়ী, অভাব-অনটন লেগে আছে সংসারে কিন্তু কিছুই প্রভাব ফেলেনি তার ইচ্ছেশক্তিতে। 

বিহারের গয়ার একটি ভিডিও সমাজমাধ্যমে ঝড় তুলেছে। দেখা যাচ্ছে, একটি ছোট্ট মেয়ে রাস্তার আলোর নীচে তার খাতার উপর ঝুঁকে পড়েছে আর মনকে দিয়ে পড়াশোনা করছে। মেয়েটির স্নেহা কুমারি। নয় বছর স্নেহা চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রী। তার ঘরে বিদ্যুৎ নেই। তবে, তার স্বপ্নগুলি অন্যদের তুলনায় উজ্জ্বল।

স্নেহা তার বাবা-মা এবং চার ভাইবোনের সঙ্গে ছোটকি ভেদিয়া গ্রামে থাকে। তার বাবা, মহেশ মাঝি একসময় দিনমজুরের কাজ করতেন। এখন কিডনির রোগে ভুগছেন। পরিবারটি সর্বস্ব ব্যয় করে দিয়েছে তাঁর চিকিৎসার জন্য। আজ তাদের কাছে কোনও টাকা নেই, বিদ্যুৎ নেই, আধার কার্ড নেই, আয়ুষ্মান ভারত কার্ড নেই, এমনকি সরকারি বাড়িও নেই।

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম নিউজ১৮-কে মহেশ বলেন, “আমি শুধু আমার মেয়েকে জীবনে কিছু একটা হতে দেখতে চাই। আমি শুধু এটাই চাই।“ 

চারপাশ অন্ধকার সত্ত্বেও স্নেহা ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন দেখে। প্রতি রাতে সে রাস্তার মোড়ে হেঁটে যায়, ল্যাম্পপোস্টের আলোর নীচে বসে মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা করে। তার মা পরিবারের ভরণপোষণের জন্য অন্যের ক্ষেতে কাজ করেন। তিনি জানিয়েছেন, স্নেহা অসাধারণ মেধাবী এবং দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।

কিন্তু সবসময় দৃঢ় সংকল্পই যথেষ্ট নয়। স্নেহার বিদ্যুতের প্রয়োজন। তার বই, পড়াশোনার জন্য নিরাপদ জায়গা এবং বাবাকে হারানোর ভয় ছাড়াই বেড়ে ওঠার সুযোগ প্রয়োজন।

ডুকরে কেঁদে ওঠেন মহেশ। তিনি বলেন, “আমার নিজের পরিবারও সাহায্য করবে না। আমি নিজের জন্য কিছু চাই না- শুধু আমার মেয়েকে সাহায্য করো।“