আজকাল ওয়েবডেস্ক: ভয়ঙ্কর পথ দুর্ঘটনা অরুণাচল প্রদেশে। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গভীর খাদে গড়িয়ে পড়ল যাত্রীবাহী ট্রাক। খাদে পড়তেই মৃত্যু সকল যাত্রীর। ভয়াবহ দুর্ঘটনায় ২২ জনের মৃত্যুর আশঙ্কা রয়েছে। 

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, দুর্ঘটনাটি ঘটেছে অরুণাচল প্রদেশের অঞ্জো জেলায়। পুলিশ জানিয়েছে, গাড়িটিতে ২২ জন যাত্রী ছিলেন। পেশায় তাঁরা সকলেই পরিযায়ী শ্রমিক ছিলেন। অধিকাংশের বেশি শ্রমিক অসমের তিনসুকিয়ার বাসিন্দা ছিলেন। দুর্ঘটনার খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে দ্রুত পৌঁছেছে বিশাল পুলিশ বাহিনী ও উদ্ধারকারী দল। অসমের ডিব্রুগড় থেকেও বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধারকাজ শুরু করেছে। 

এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত গভীর খাদ থেকে ১৩ জন শ্রমিকের দেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানিয়েছে, ট্রাকটি পাহাড়ি রাস্তায় নিয়ন্ত্রণ হারায়। ট্রাকের চালক নিয়ন্ত্রণ হারানোর জেরে গভীর খাদের মধ্যে উল্টে পড়ে। বাকি দেহগুলি উদ্ধারের কাজ চলছে জোরকদমে। 

অঞ্জোর ডেপুটি কমিশনার মিল্লো কোজিন জানিয়েছেন, দুর্ঘটনাটি ঘটেছে ভারত-চীন সীমান্তের কাছে। হায়ুলিয়াং–চাগলাগাম সড়কে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে পরিযায়ী শ্রমিকদের ট্রাকটি। সীমান্ত এলাকায় রাস্তা নির্মাণ এবং অন্যান্য নির্মাণ কাজের সঙ্গে ওই শ্রমিকরা যুক্ত ছিলেন। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, দুর্ঘটনায় ২২ জনের মৃত্যু হতে পারে। 

প্রসঙ্গত, গত কয়েকদিনে একাধিক রাজ্যে পাহাড়ি খাদে গাড়ি উল্টে একাধিক দুর্ঘটনা ঘটেছে। প্রাণ হারিয়েছেন অনেকেই। গত রবিবার গভীর রাতে ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরবঙ্গে। একটি গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ৩০০ মিটার গভীর খাদে পড়ে যায়। সিটং ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য সহ তিনজনেই ঘটনাস্থলেই মারা যান।

সূত্রের খবর, রবিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে সিটং-লাটপানঞ্চর-বাগোড়া সড়কের মানা এলাকায় এই দুর্ঘটনাটি ঘটে। সোমবার সকালে স্থানীয় বাসিন্দারা রাস্তার ধারে দুর্ঘটনার চিহ্ন দেখতে পেয়ে তড়িঘড়ি পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিহত ও আহতদের খাদ থেকে উদ্ধার শুরু করে।

এর আগে আরেকটি দুর্ঘটনাটি ঘটেছিল মহারাষ্ট্রের নাসিকে। পুলিশ জানিয়েছে, নাসিকের কল্যাণ তালুকে সপ্তশৃঙ্গী গড় ঘাটে গভীর খাদে যাত্রীবাহী একটি গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে পড়ে। দুর্ঘটনায় ছ'জনের মৃত্যু হয়েছিল। 

পুলিশ আরও জানিয়েছে, গাড়িটি ৬০০ মিটার গভীর খাদে উল্টে পড়েছিল। মৃতেরা নিফাদ তালুকের পিপলগাঁও বসওয়ান্তের বাসিন্দা ছিলেন। টয়োটা ইনোভা গাড়িতে ছিলেন সাতজন যাত্রী। তাঁদের মধ্যে ছ'জনের মৃত্যু হয়েছে ঘটনাস্থলে। সকলেই মন্দিরে পুজো দিতে যাচ্ছিলেন। মৃতেরা হলেন, কীর্তি প্যাটেল (৫০), রাসিলা প্যাটেল (৫০), ভিত্তাল প্যাটেল (৬৫), লতা প্যাটেল (৬০), বচন প্যাটেল (৬০), মনিবেন প্যাটেল (৭০)। 

নভেম্বরের শেষে উত্তরাখণ্ডের নৈনিতালে ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটেছিল। বিয়েবাড়িতে তুমুল হুল্লোড়। নাচগানে মেতেছিলেন সকলে। বাড়ি ফেরার পথেই ঘটে বিপত্তি। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গভীর খাদে উল্টে পড়ে গাড়ি। ঘটনাস্থলে মর্মান্তিক পরিণতি হয় তিন শিক্ষকের। গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন হন আরও এক শিক্ষক। 

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরাখণ্ডের নৈনিতালে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, শনিবার রাতে খয়রনা-কাইঞ্চিধাম রুটে রাতিঘাটে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে একটি গাড়ি। পাহাড়ি রাস্তায় ৬০ মিটার গভীর খাদে গাড়িটি পড়ে যায়। ঘটনাস্থলে দুমড়ে মুচড়ে যায় গাড়িটি। দুর্ঘটনায় তিনজনের মৃত্যু হয়েছিল। মৃতদের নাম, সঞ্জয় বিষ্ট, সুরেন্দ্র ভাণ্ডারী ও পুষ্কর ভাইসোরা। আহত ব্যক্তির নাম মনোজ কুমার। তাঁরা প্রত্যেকেই আলমোড়ার বাসিন্দা।