আজকাল ওয়েবডেস্ক: অভিশপ্ত অক্টোবর। ঠিক ২৫ বছর আগে অক্টোবর মাসেই ওড়িশায় আছড়ে পড়েছিল 'সুপার সাইক্লোন'। কয়েক ঘণ্টা ধরে রাজ্যজুড়ে তাণ্ডব চালিয়েছিল ভয়ঙ্কর এই ঘূর্ণিঝড়। কার্যত মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছিল ওড়িশার একাংশ। ২৫ বছর পর আবারও অক্টোবরেই আরও একটি ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়ার পূর্বাভাস দিয়েছে মৌসম ভবন। আবারও ঘটনাস্থল ওড়িশা। যা ঘিরে, বলাই বাহুল্য, ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে। 

 

১৯৯৯ সালে ২৯ অক্টোবর ওড়িশায় আছড়ে পড়েছিল 'সুপার সাইক্লোন'। তাইল্যান্ড উপসাগরে নিম্নচাপ সৃষ্টি হয়েছিল। যা পাঁচদিন পরে ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নিয়ে ২৯ অক্টোবর সকালে ওড়িশার পারাদ্বীপের দক্ষিণ পশ্চিমে জগৎসিংহপুর জেলা দিয়ে স্থলভাগে প্রবেশ করে। বালেশ্বর, ভদ্রক, কেন্দ্রাপড়া, জগৎসিংহপুর, পুরী এবং গঞ্জামে ঘণ্টায় ২৬০ কিমি বেগে প্রবল ঝড় বয়ে যায়। পাশাপাশি টানা তিনদিন ধরে অতি প্রবল বৃষ্টি হয় ওড়িশা জুড়ে। 

 

সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, 'সুপার সাইক্লোন'-এর দাপটে ওড়িশায় প্রাণ হারিয়েছিলেন দশ হাজার মানুষ। তবে এর মধ্যে জগৎসিংহপুরের প্রাণহানির সংখ্যা ছিল না। বেসরকারি মতে, ওড়িশায় মৃতের সংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়িয়েছিল। শুধুমাত্র জগৎসিংহপুরে প্রায় ৯ হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছিলেন। দশ লক্ষের বেশি মানুষ গৃহহীন হয়েছিলেন। দীর্ঘ কয়েক মাস অস্থায়ী ত্রাণ শিবিরে ছিলেন তাঁরা। মোট ৩৩ লক্ষ ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। প্রায় সাড়ে সাত লক্ষ বাড়ি পুরোপুরি ধসে পড়েছিল। লক্ষ লক্ষ গবাদিপশুর মৃত্যুও হয়েছিল। 

 

গত ২৫ বছরে আরও ১১টি ঘূর্ণিঝড় তাণ্ডব চালিয়েছে ওড়িশায়। কিন্তু 'সুপার সাইক্লোন'-এর মতো বিধ্বংসী কোনওটাই ছিল না। চলতি সপ্তাহে ঘূর্ণিঝড় 'ডানা' আছড়ে পড়া ঘিরে আগেভাগেই সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এই ঘূর্ণিঝড়ের সর্বোচ্চ গতিবেগ হতে পারে ১৩০ কিমি। উপকূলবর্তী এলাকায় ইতিমধ্যেই সতর্কতা জারি করা হয়েছে। মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে।