আজকাল ওয়েবডেস্ক: ঠিক যেন সিনেমা, এক সময় সে ছিল ছোট ছেলে। তাঁকে অপহরণ করা হয় বাবা, কাকার সামনে থেকে। চাওয়া হয় মোটা অঙ্কের মুক্তিপণ। পরে অবশ্য তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। তখন তাঁর বয়স ছিল সাত। ঠিক ১৭ বছর পরে সেই ছোট ছেলে আজ পূর্ণাঙ্গ যুবক। এত বছর পরে নিজে আইনজীবী হয়ে মামলা লড়ে শাস্তি দিলেন দোষীদের।

 

 

এদিন বিচারপতি সাজা শুনিয়েছেন দোষীদের। চেয়ার ছেড়ে উঠতে যাবেন তখন বাদী পক্ষের আইনজীবী বলে উঠলেন, এতক্ষণ যে মামলার শুনানি চলছিল, সেই অপহৃত ছোট বালকটা আমিই ছিলাম। খানিকক্ষণের জন্য নিস্তব্ধ চারপাশ।

 

 

সেদিনের সেই বাচ্চা ছেলেটির নাম হর্ষ গর্গে। ২০০৭ সালের এক সন্ধ্যায় ওষুধের দোকান থেকে তাঁর বাবা এবং কাকার সামনে থেকে তাঁকে অপহরণ করে দুষ্কৃতীরা। বাঁচাতে গেলে গুলি চালায় আততায়ীরা। হর্ষের বাবার ডান কাঁধে লাগে গুলি। এই সুযোগে গাড়িতে করে চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা। পরে এক আত্মীয়কে ফোন করে ৫৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ চাওয়া হয়। আগ্রা থেকে অপহরণ করে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় চম্বলে। পরিবারের তরফে মামলা দায়ের হয় থানায়। পরে ছেড়ে দেওয়া হয় তাঁকে। 

 

 

এরপর যমুনা দিয়ে গড়িয়েছে অনেক জল। আগ্রা ল কলেজ থেকে আইন নিয়ে পড়াশোনা করেছেন তিনি। অন্যদিকে সেই মামলা কোর্টে ওঠে। একটা সময় পরে সেই মামলার দায়িত্ব নেন তিনি। গত কয়েকদিন আগে সাজা ঘোষণা হয় মামলার। অপহরণকারী দুজন বিচার চলাকালে মারা গেলেও বাকি আটজনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেওয়া হয়। প্রমাণের অভাবে অবশ্য অন্য চারজনকে বেকসুর খালাস করে দেওয়া হয়।

 

 

অপহরণের পরে ঠিক কী ঘটেছিল সেদিনের সেই ছোট্ট যুবকের সঙ্গে তা আরও একবার শোনান তিনি। বলেন, তাঁকে অপহরণ করার পরে প্রতিদিনই নতুন আস্তানায় নিয়ে যাওয়া হত। কখনও উত্তরপ্রদেশ, কখনও মধ্যপ্রদেশ আবার কখনও রাজস্থানে হত ঠিকানা। একমাস এভাবেই কেটেছিল তাঁর। বাড়িতে যাওয়ার জন্য বায়না করলে মারা হত চড়। একস্থান থেকে অন্যস্থানে নিয়ে যাওয়ার সময়ে গোয়েন্দারা তাদের খোঁজ পেয়ে ধাওয়া করলে ছোট হর্ষকে রাস্তার ধারে ফেলে রেখে পালিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা।