আজকাল ওয়েবডেস্ক: এ যেন কল্প বিজ্ঞানের পাতা থেকে উঠে আসা কোনও গল্প। দুর্ঘটনায় হারানো হাত কিংবা পা নতুন করে গজিয়ে উঠছে মানুষের দেহে। দুর্ঘটনায় পঙ্গু হয়ে যাওয়া মানুষ ফের হাঁটতে চলতে পারছেন। সত্যিই কি এমনটা সম্ভব? বিজ্ঞানীরা কিন্তু বলছেন সম্ভব। আগামী কয়েক বছরে বিজ্ঞানের হাত ধরে সম্ভব হতে পারে এই অসম্ভবও।
আরও পড়ুন: পাড়ার বৌদিদের অন্তর্বাস চুরি একের পর এক! চোরকে সামনে পেয়ে এ কী করলেন মহিলারা?
পৃথিবীতে এমন বেশ কিছু প্রাণীই আছে যাঁরা কেটে পড়ে যাওয়া অঙ্গ নতুন করে গজিয়ে তুলতে পারে। হাতের কাছেই রয়েছে টিকটিকির উদাহরণ। দেখবেন টিকটিকি লেজ একবার খসে পড়ে গেলেও কিছুদিনের মধ্যেই ফের গজিয়ে ওঠে সেটি। তবে এক্ষেত্রে অবশ্য বিজ্ঞানীরা অন্য একটি প্রাণীর সাহায্য নিচ্ছেন। প্রাণীটির নাম অ্যাক্সোলোটল। অদ্ভুত এই প্রাণীটির অবিশ্বাস্য একটি ক্ষমতা রয়েছে। দেহের যে কোনও অংশ কেটে গেলে বা বাদ পড়ে গেলেও ফের নতুন করে সেই অঙ্গটি গজিয়ে তুলতে পারে এই লার্ভা। শুধু হাত-পা নয় মাথা কিংবা ঋণ যন্ত্রের মত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ নতুন করে তৈরি করতে পারে এই প্রাণী। এই বিচিত্র প্রাণীটিকেই পরীক্ষা করে বিজ্ঞানীরা খুঁজে পেয়েছেন বিরল একটি জিন। দিনটির নাম সিওয়াইপি২৬বি১। এই জিনের গুণেই অঙ্গ পুনর্গঠন করতে পারে অ্যাক্সোলোটল।
আরও পড়ুন: পাড়ার বৌদিদের অন্তর্বাস চুরি একের পর এক! চোরকে সামনে পেয়ে এ কী করলেন মহিলারা?
বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন কোন কোষ ভবিষ্যতে কেমন হবে তার মূল চাবিকাঠি থাকে রেটিনয়িক অ্যাসিড নামের একটি যৌগের উপর। আর এই সিওয়াইপি২৬বি১ জিনটিই রেটিনয়িক অ্যাসিড-এর উৎপাদন নিয়ন্ত্রণ করে। যখন কোনও কোষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তখনই রেটিনয়িক অ্যাসিড দেহি নির্দিষ্ট সংকেত পাঠায়। সেই সংকেত থেকে দেহের স্টেম সেল ঠিক করে কোন কোষ থেকে কী গঠিত হবে, চামড়া, পেশি না হাড়। আরি উপাদান না থাকলে অঙ্গ পুনর্গঠন অসম্ভব।
পরীক্ষাগারে মানুষের কোষের উপর এই উপাদানটি প্রয়োগ করে আশাব্যঞ্জক ফল পাওয়া গিয়েছে। বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, মানুষের স্টেমসেলের উপর সিওয়াইপি২৬বি১ প্রয়োগ করে দেখা গিয়েছে, কোষগুলি এমন ভাবে বিভাজিত হচ্ছে যেন সেগুলি কোন না কোন অঙ্গ গঠন করতে উদ্যত। এই উপাদানের পরিমাণ কম বেশি করে বিশেষ কিছু অঙ্গ গঠন করা সম্ভব হয়েছে। বিজ্ঞানীদের দাবি, ভবিষ্যতে আরও গবেষণার মাধ্যমে নির্দিষ্ট অঙ্গ গঠন করাও সম্ভব হবে।
গোটা পৃথিবীতে অসংখ্য মানুষ অঙ্গহীন। বিজ্ঞানীদের দাবি, তাঁরা কোষের মধ্যে কোন পথে এই প্রক্রিয়া সম্পাদিত হয় তার খোঁজ চালাচ্ছেন। এই পথ খুঁজে পাওয়া গেলে নির্দিষ্ট অঙ্গ তৈরি করা সম্ভব হতে পারে। অঙ্গ পুনর্গঠন এবং চিকিৎসার ক্ষেত্রে এই গবেষণা নতুন দিগন্ত উন্মোচিত করতে পারে বলেই মত বিশেষজ্ঞদের। গবেষণাটির কথা প্রকাশিত হয়েছে বিখ্যাত বিজ্ঞান পত্রিকা নেচারেও। শেষ পর্যন্ত এই পদ্ধতি কতটা সফল হয় না আদৌ সফল হয় কি না, উত্তর দেবে সময়ই। তবে গবেষণাটি নিয়ে আশায় বুক বাঁধছেন অসংখ্য মানুষ।
