নানা আর্থিক কারণে অনেক ঋণগ্রহীতার অনিচ্ছাকৃতভাবেই ইএমআই মিস হয়ে যায়। আর ঋণের ইএমআই মিস হওয়া মানেই লোন রিকভারি এজেন্টরা বাড়িতে হানা দেয়। মান সম্মান একেবারে ধুলোয় মিশিয়ে দেয়। কিন্তু, লোন রিকভারি এজেন্টরা কি এই ধরনের ব্যবহার করতে পারে? লোন রিকভারি এজেন্টদের বাড়িতে বা অফিসে উত্যক্ত করার কোনও আইন রয়েছে ভারতীয় আইনে?
2
10
হ্যাঁ রয়েছে। ঋণ আদায়ের জন্য ঋণদাতা সংস্থার এজেন্ট বাড়িতে বা অফিসে যেতে পারে। তবে সেক্ষেত্রেও কড়া আইন রয়েছে। সেই আইনের বলে গ্রাহক কড়া আইনি পদক্ষেপ করতে পারেন।
3
10
রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নির্দিষ্ট শর্ত মেনে গ্রাহকের থেকে লোন আদায় করতে পারে সংস্থা। আরবিআই ঋণগ্রহীতাদের হয়রানি থেকে রক্ষা করতে ও ব্যাঙ্ক ও NBFC-দের বৈধ আদায়ের অধিকার রক্ষা করতে নির্দিষ্ট গাইডলাইন রেখেছে।
4
10
আরবিআই-এর নিয়ম অনুযায়ী ঋণ আদায় বৈধ, কিন্তু পদ্ধতিতে থাকতে হবে শালীনতা ও ভদ্রতা। কোনও ভাবেই গ্রাহকে হয়রানি করা যাবে না। এমনকী সর্বসমক্ষে অপমান তো নয়ই। ‘Fair Practices Code’-এর নির্দেশিকায় যা বলা হয়েছে, রিকভারি এজেন্টরা লোন আদায়ের জন্য গ্রাহকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন, এমনকী তাঁদের বাড়ি বা কর্মস্থলেও যেতে পারেন। কিন্তু, নিয়ম মানতে হবে।
5
10
ঋণগ্রহীতা বা তাঁর বাড়ির লোকের সঙ্গে শুধুমাত্র সকাল ৮টা থেকে সন্ধে ৭টার মধ্যে যোগাযোগ বা দেখা করা যাবে। এই সময়সীমার বাইরে গেলে, সেটা হয়রানি হিসেবে গণ্য হবে। তবে গ্রাহক যদি নিজে বলে থাকেন, তাহলে তা হয়রানি হিসেবে দেখা হবে না।
6
10
আরবিআই-এর নিয়ম বলছে, রিকভারি এজেন্টদের ভদ্র, মার্জিত ও সম্মানজনক ব্যবহার করতে হবে। তার অন্যথায় হলেই তার বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করা যেতে পারে। গালিগালাজ, হুমকি বা জোরজবরদস্তি করা যাবে না। অনেক সময় দেখা যায়, লোন রিকভারি এজেন্টরা বাড়ি বা অফিসে গিয়ে গালিগালাজ, অপমান, চিত্কার করছে।
7
10
ব্যক্তিগত সম্মান রক্ষা: লোন রিকভারি এজেন্টরা পাড়া-প্রতিবেশী বা অফিস সহকর্মীদের সামনে গ্রাহককে অপমান করা যাবে না। কারও ঋণের তথ্য জনসমক্ষে প্রকাশ করা যাবে না। রিকভারি এজেন্টদের ব্যাঙ্ক বা NBFC-এর বৈধ পরিচয়পত্র ও অথরাইজেশন লেটার থাকতে হবে।
8
10
লোন রিকভারি জেন্টরা কখন অফিসে যেতে পারেন? এ ক্ষেত্রে তখনই পারবে, যদি অন্য কোনও ভাবে ঋণগ্রহীতার সঙ্গে যোগাযোগ না করা গেলে অফিসে যাওয়া যাবে। না হলে অফিসে যাওয়া যাবে না। অফিসে গেলেও, সেটা গোপনীয়ভাবে হতে হবে, যাতে ব্যক্তির সম্মানহানি না হয়। বা সামাজিক অবস্থান ক্ষুণ্ন না হয়। মূলত, অফিসে যাওয়াটা শেষ উপায় হওয়া উচিত।
9
10
সম্মানের অধিকার: কিস্তি মেটাতে না পারলেও আপনাকে হুমকি বা অপমান করা যাবে না। আপনার ঋণের তথ্য অন্য কারও (পাড়া, সহকর্মী ইত্যাদি) কাছে ফাঁস করা যাবে না। রিকভারি এজেন্ট যদি দুর্ব্যবহার করেন, তাহলে আপনি ব্যাঙ্কে অভিযোগ জানাতে পারেন। ৩০ দিনের মধ্যে সমাধান না হলে RBI Ombudsman-এর কাছে যেতে পারেন। প্রয়োজনে পুলিশের কাছেও অভিযোগ জানাতে পারেন।
10
10
ফোন রেকর্ড করুন, মেসেজ সংরক্ষণ করুন, এজেন্টের ভিজিটের সময়-তারিখ লিখে রাখুন। ব্যাঙ্ক বা NBFC-র গ্রিভান্স রেড্রেসাল সেল-এ অভিযোগ জানান। সেখানে জানিয়ে কাজ না হলে, Ombudsman-এর কাছে যান। ৩০ দিনের মধ্যে সমাধান না হলে RBI Ombudsman-এর কাছে লিখিত অভিযোগ জানান। যদি শারীরিক হুমকি, গালাগালি বা ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘন করা হয়, থানায় অভিযোগ করুন।