আজকাল ওয়েবডেস্ক: ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, অথবা হাঁপানির মতো অসুখের কথা আমরা প্রায় সকলেই শুনেছি। কিন্তু পরিচিত রোগের বাইরেও এমন কিছু রোগ রয়েছে যেগুলি এতই বিরল যে খুব কম লোকই জানেন সেই রোগগুলি সম্পর্কে। এই ধরনের রোগগুলি শুধু যে খুব অল্প সংখ্যক মানুষের দেহে দেখা যায়, এমনটাই নয়, লক্ষণ বা উপসর্গেও এই রোগগুলি বিচিত্র।
2
7
১। অটো-ব্রিউয়ারি সিন্ড্রোম: অনেক সুরাপ্রেমীই নিয়মিত মদ্যপান করেন। কেউ কেউ নেশার ঘোরে মত্ত হয়ে যান। কিন্তু জানেন কি এমন একটি রোগ রয়েছে যাতে আক্রান্ত রোগীরা মদ না খেয়েই মাতালের মতো আচরণ করেন? এই অবস্থাকে বিজ্ঞানের পরিভাষায় বলে 'অটো-ব্রিউয়ারি সিনড্রোম' বা 'অন্ত্রের গাঁজন'। বিরল এই রোগে কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার পরে একজন ব্যক্তির অন্ত্রে বিশুদ্ধ অ্যালকোহল (ইথানল) তৈরি হয়। তা থেকেই নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়েন রোগী।
3
7
কেন এমন হয়? অন্ত্রে স্যাকারোমাইসিস সেরিভিসিয়া নামের এক ধরণের ইস্ট থাকে। এই রোগের ক্ষেত্রে এই জীবাণুর আধিক্যই গাঁজন প্রক্রিয়াকে তরান্বিত করে। এবং পেটের মধ্যেই ইথানল তৈরি করে। কিছু ক্ষেত্রে লিভারের কার্যক্ষমতা হ্রাস পেলেও এই রোগ হতে পারে।
4
7
ফরেন অ্যাক্সেন্ট সিনড্রোম: ধরুন কারও জন্ম পশ্চিমবাংলায়, কিন্তু মাথায় চোট লাগার পর সে হিন্দিতে কথা বলা শুরু করল। বিষয়টি শুনতে অদ্ভুত লাগলেও ঘটা অসম্ভব নয়। এই ধরনের ঘটনাকে ফরেন অ্যাক্সেন্ট সিনড্রোম বলে। বিষয়টি অত্যন্ত বিরল, ঠিক কেন এমন হয় তা নিয়ে নিশ্চিত নন বিজ্ঞানীরও। তবে মনে করা হয় মস্তিষ্কের যে অংশের মাধ্যমে কথা বলার প্রক্রিয়াটি নিয়ন্ত্রিত হয়, সেখানে চোট লাগলে মস্তিষ্কের কোষগুলির মধ্যে সমন্বয় নষ্ট হয়ে যায়। আর তার জন্যই এমন ঘটনা ঘটে।
5
7
এমন ঘটনা স্ট্রোক বা মস্তিষ্কে আঘাত লাগার ফলে হতে পারে। এখনও পর্যন্ত যে যে রোগীর মধ্যে এই বিষয়টি লক্ষ্য করা গিয়েছে তাঁদের জাপানি থেকে কোরিয়ান, ব্রিটিশ ইংরেজি থেকে ফরাসি, আমেরিকান ইংরেজি থেকে ব্রিটিশ ইংরেজি এবং স্প্যানিশ থেকে হাঙ্গেরিয়ান ভাষায় কথা বলতে দেখা গিয়েছে।
6
7
ফিশ ওডর সিনড্রোম: বিজ্ঞানের ভাষায় এই রোগটিকে বলা হয়, ট্রাইমিথাইলঅ্যামিনুরিয়া। এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের দেহ, মুখ এবং প্রস্রাব থেকে মরা মাছের মতো দুর্গন্ধ বেরোয়।
7
7
মনে করা হয়, এই রোগ এমন লোকদের মধ্যে দেখা যায় যাঁদের এফএমও ৩ জিনের এক ধরনের বিশেষ মিউটেশন ঘটেছে। এই জিনটি শরীরকে এমন কিছু এনজাইম তৈরি করার নির্দেশ দেয় যেগুলি ট্রাইমিথাইলামাইনের মতো জৈব যৌগকে ভেঙে ফেলে। জিনের মিউটেশনের ফলে এই এনজাইমগুলি তৈরি হতে পারে না। ফলে এই যৌগগুলি শরীরে থেকে যায়। এই জৈব যৌগগুলি থেকেই মরা মাছের গন্ধ নির্গত হয়।