ভারতে বক্স অফিসে একের পর এক রেকর্ড ভাঙছে আদিত্য ধর পরিচালিত স্পাই-অ্যাকশন থ্রিলার ‘ধুরন্ধর’। ৫ ডিসেম্বর মুক্তি পাওয়া এই ছবির মূল চরিত্রে রণবীর সিং, সঙ্গে আছেন অক্ষয় খান্না, সঞ্জয় দত্ত আর গোটা গল্প গড়ে উঠেছে পাকিস্তানের করাচির কুখ্যাত লেয়ারি শহরের গ্যাংস্টার দুনিয়াকে ঘিরে। তবে অবাক করার মতো বিষয় হল, শুধুই ভারতের দর্শক নয়, পাকিস্তানের বহু দর্শকও ছবিটি দেখে প্রশংসা করছেন! সোশ্যাল মিডিয়ায় সে আবেগ স্পষ্ট।

 

ঠিক কী এমন আছে ‘ধুরন্ধর’-এ, যা পাকিস্তানি দর্শকের মনেও নাড়া দিয়েছে? এই প্রশ্নের উত্তর দিলেন ছবিতে ‘ডোঙ্গা’র চরিত্রে অভিনয় করা অভিনেতা নবীনকৌশিক। সম্প্রতি দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নাভীন বলেন, পাকিস্তানের দর্শকদের মন্তব্য পড়ে তিনি একটা বিষয় স্পষ্টভাবে বুঝেছেন, “ওরা বুঝেছে যে এই ছবিতে পাকিস্তানের সাধারণ মানুষ বা মুসলিম সম্প্রদায়কে অপমান করা হয়নি, দোষী করা হয়নি। আমরা দেখাতে চেয়েছি সেই দুর্নীতিগ্রস্ত সিস্টেমকে, সেই প্রভাবশালী মানুষদের, যারা পরিস্থিতিকে কাজে লাগিয়ে এমন অবস্থা তৈরি করেছে যে ভারতকে আক্রমণের মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়। আমরা মানুষকে নয়, সমস্যার উৎসকেই লক্ষ্য করেছি।”

 

তাঁর কথায়, এই জায়গাতেই পাকিস্তানি দর্শকের সঙ্গে ছবির আবেগ মিশে গেছে, “ওরাও তো ভিতরে ভিতরে একই কথা বলতে চাইছিল একজন বা কিছু মানুষের দোষে গোটা দেশকে খারাপ বলা যায় না। এই সত্যিটাই ওরা ছবিতে খুঁজে পেয়েছে, তাই ভালবাসা পাঠাচ্ছে।”

 

ছবিতে রণবীর সিংকে দেখা গেছে পাকিস্তানে কর্মরত এক ভারতীয় গোয়েন্দা আধিকারিকের ভূমিকায়। তিনি ঢুকে পড়েন রহমান ডাকাত (অক্ষয়  খান্না)-এর গ্যাং-এ। বাস্তব ও কল্পনার মিশেলে তৈরি এই ছবিতে দেখানো হয়েছে বাস্তবের কিছু চরিত্র ও ঘটনাপ্রবাহও।, যেখানে থাকছেন উজায়ার বালুচ, করাচির এসপি আসলাম চৌধুরির মতো নামও। অ্যাকশন, আবেগ, রাজনৈতিক বাস্তবতা ও মানবিকতার এক তীক্ষ্ণ মিশ্রণই ছবিটিকে আলাদা মাত্রা দিয়েছে।

 

 

শুধু এই অংশই নয়, ছবির উপস্থাপনাই যেন নতুন করে সংলাপ তৈরি করছে দুই দেশের দর্শকের মধ্যেও, এই বার্তাই দিচ্ছে ‘ধুরন্ধর’। 
শত্রুতা নয়, সমস্যার মূলকেই প্রশ্ন করাই আসল সাহস। এরই মধ্যে দ্বিতীয় পর্বের ঘোষণা হয়ে গিয়েছে। ২০২৬ সালের মার্চে মুক্তি পেতে চলেছে ‘ধুরন্ধর ২’। তাই এখনই স্পষ্ট কেবল বক্স অফিস নয়, আবেগ ও আলোচনার ময়দানেও আপাতত রাজত্ব করছে রণবীর সিংয়ের এই হাই-অকটেন থ্রিলার।