বলিউডের শুরুর দিকেই তাঁকে বলা হচ্ছিল ইন্ডাস্ট্রির ‘নেক্সট বিগ স্টার’। 'কোম্পানি', 'সাথিয়া'— একের পর এক টানা হিট ছবিতে এক ঝলকেই নজর কাড়েন বিবেক ওবেরয়। কিন্তু ২০০৩ সালের সেই এক কনফারেন্স যেন এক নিমেষে সব বদলে দিল তাঁর কেরিয়ারের গতি। সালমান খানের বিরুদ্ধে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ তুলে সংবাদমাধ্যমের সামনে আসেন বিবেক। শোনা যায়, তখনই ঐশ্বর্যা রাইয়ের সঙ্গে সম্পর্কে ছিলেন তিনি। বিস্ফোরক অভিযোগে কেঁপে ওঠে গোটা বলিউড। ফল? ধীরে ধীরে একসময়ের প্রতিশ্রুতিমান নায়ক হয়ে পড়েন একঘরে।
সম্প্রতি, এক সাক্ষাৎকারে মুখ খুললেন বিবেক। এতদিন বাদে ফিরে তাকিয়ে এখন তিনি নাকি শুধু হাসেন। অভিনেতার গলায়, “ওই দৃষ্টিভঙ্গি তখন আসে না, অনেক পরে আসে। এখন পুরোনো ঘটনা মনে করলে না রাগ হয়, না কষ্ট। কিন্তু যা আজও ভুলতে পারি না— মায়ের চোখের জল, বাবার চেহারার সেই অভিব্যক্তি। সেসব মুহূর্তই আসল ক্ষত তৈরি করে।”
অভিযোগের পর একে একে বন্ধ হয়ে যায় তাঁর হাতে থাকা সিনেমাগুলো। প্রযোজক-পরিচালকরা সরে যান। প্রকাশ্যে কিছু না বলা হলেও, বলিউডের ‘সবচেয়ে প্রভাবশালী’ এক নায়কের বিরুদ্ধে যাওয়াতেই নাকি ডুবতে হয় বিবেককে। অভিনেতার কথায়, “সেই সময়ে চারদিক থেকে বয়কট হচ্ছিলাম। কেউ কাজ দিতে চাইছিল না, আগে সই করা ছবিগুলো থেকেও আমাকে ছুঁড়ে ফেলে দেওয়া হয়েছিল। এর পর শুরু হয় হুমকির ফোন। শুধু আমাকে নয়, বাবা-মা, বোনকেও ফোনে হুমকি দেওয়া হতো।”
ব্যক্তিগত জীবনও ভেঙে পড়েছিল এই ঝড়ে। বিষণ্ণতায় ডুবে যান অভিনেতা। স্মৃতিচারণে বিবেক বললেন, “একেবারে মায়ের কাছে গিয়ে কেঁদেছিলাম। বারবার প্রশ্ন করতাম— ‘আমার সঙ্গেই এসব কেন হচ্ছে?’ মা তখন বলেছিলেন, ‘তুমি কি এই প্রশ্ন করেছিলে যখন পুরস্কার জিতছিলে, ভক্তরা তোমাকে ঘিরে ধরছিল, একের পর এক ছবি পেয়ে যাচ্ছিলে?’”
আজ ব্যবসায়িক দুনিয়ায় সফল বিবেক, এখনও সিনেমায় কাজ করেন বটে, তবে আর কখনও ফেরেননি সেই ‘নেক্সট বিগ স্টার’ আভায়। 'শুটআউট অ্যাট লোখাণ্ডওয়ালা' (২০০৭), 'প্রিন্স' (২০১০), 'কৃষ ৩' (২০১৩)— পর্দায় নজর কাড়লেও, বলিউডের মূল স্রোত তাঁকে আর পুরোপুরি আপন করেনি।
