সংবাদ সংস্থা মুম্বই: বলিউডে কিছু গল্প থাকে, যেগুলোর কোনও আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি না থাকলেও ফিসফিসে গুঞ্জনের চেয়েও তা বেশি বাস্তব হয়ে ওঠে। সলমন খান ও ঐশ্বর্য রাইয়ের সম্পর্ক তেমনই এক অধ্যায়—স্মৃতির ধুলো জমা হলেও, আলোচনার আগুন এখনও নিভে যায়নি।
১৯৯৯ সালে সঞ্জয় লীলা বনশালির ‘হম দিল দে চুকে সনম’-এর শুটিং সেটে শুরু হওয়া এই প্রেম কাহিনি এক সময় বলিউডপাড়ায় ছিল হট টপিক। তবে কোনওদিনই এই দু'পক্ষ থেকে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক স্বীকারোক্তি আসেনি। আর সেই নিরবতাকেই ভেঙে দিলেন প্রবীণ সাংবাদিক হানিফ জাভেরি, যিনি সাম্প্রতিক এক পডকাস্টে শেয়ার করলেন এই সম্পর্কের ভেতরের কিছু না-শোনা গল্প।
জাভেরির ভাষ্য অনুযায়ী, “সলমন ও ঐশ্বর্য সম্পর্কে ছিলেন—এবং একে অপরকে নিয়ে ভীষণ সিরিয়াস ছিলেন। দু’জনের মধ্যেই সম্পর্ককে এগিয়ে নেওয়ার ইচ্ছে ছিল। কিন্তু সমস্যা তৈরি হয় সলমনের অতীত সম্পর্ক ঘিরে—সোমি আলি ও সংগীতা বিজলানির মতো টিনার প্রাক্তনদের সঙ্গে ফের সলমনের নাম জড়ানোর গুঞ্জন শোনা যায়, যা ঐশ্বর্যের পরিবারের অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাঁরা মনে করতে থাকেন, সলমন হয়তো তাঁদের মেয়ের সঙ্গে স্রেফ সময় কাটাচ্ছে।”
এখানেই কিন্তু থামেননি জাভেরি। তিনি আরও বলেন, “সলমন চেয়েছিলেন ঐশ্বর্য যেন তাড়াতাড়ি বিয়ে করে নেন তাঁকে। কিন্তু ঐশ্বর্য তখন কেরিয়ারের এক গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে ছিলেন—সেখানে বিয়ে নিয়ে কিছু ভাবছিলেন না। এই মতপার্থক্য থেকেই শুরু হয় টানাপড়েন।” এবং এক পর্যায়ে সেই সম্পর্ক নাকি পৌঁছায় চরম নাটকীয়তায়। জাভেরির কথায়, “এক রাতে সলমন ঐশ্বর্যের ফ্ল্যাটে গিয়ে দরজায় জোরে জোরে নক করতে থাকেন। এমন ‘নাটক’ করেন যে আশপাশের প্রতিবেশীরাও অভিযোগ করে বসেন! ঐশ্বর্য ঘটনাটি একেবারেই ভালভাবে নেননি, এবং সেখান থেকেই সিদ্ধান্ত নেন— এই সম্পর্ক থেকে ব্যাক আউট করার।”
এই বিতর্কিত সম্পর্কের পরিণতি আসে ২০০২ নাগাদ, যখন দু’জনেই আলাদা পথ বেছে নেন। ঐশ্বর্য পরে বিয়ে করেন অভিষেক বচ্চনকে ২০০৭ সালে। অন্যদিকে সলমন এখনও অবিবাহিত, যদিও বিভিন্ন নারীদের সঙ্গে তাঁর নাম জড়িয়ে প্রেমের গুঞ্জন থামেই না। সলমন এবং ঐশ্বর্য এরপর আর কখনও একসঙ্গে স্ক্রিন শেয়ার করেননি—শেষবার তাঁদের একসঙ্গে পর্দায় দেখা গিয়েছিল ‘হাম তুমহারে হ্যায় সনম’-এ, ২০০২ সালে। তারপর থেকে শুধুই নীরবতা।
সাংবাদিকের এই খোলামেলা বক্তব্য যে আবার নতুন করে বিতর্ক উসকে দিয়েছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। বলিউডের একাংশের মতে, এই প্রকাশ্য আলোচনায় এমন একটি সম্পর্ক নিয়ে কথা বলা—যা আজও দুই অভিনেতাই এড়িয়ে যেতে পছন্দ করেন—সেটা কতটা শোভন বা দায়িত্বশীল, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।
তবে এটুকু নিশ্চিত, সলমন-ঐশ্বর্য অধ্যায়ের প্রেম, অভিমান আর অসম্পূর্ণতার গল্প আজও দর্শকদের মনে এক আলাদা জায়গা নিয়ে আছে—যেটা শুধু সিনেমার পর্দায় নয়, বাস্তব জীবনের ট্র্যাজিক লাভ স্টোরি হিসেবেও।
