শুক্রবার ফেডারেশনের সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাস একটি সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করেন। সেখানে স্বরূপ পাশাপাশি উপস্থিত থাকতে দেখা যায় পরিচালক রাহুল মুখোপাধ্যায়, পাভেল, নির্ঝর মিত্র ও জয়দীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে। এছাড়াও ফেডারেশনের মুখপাত্রদের দেখা যায়। এদিনের বৈঠকে স্বরূপ বিশ্বাস তুলে ধরেন ইন্ডিপেন্ডেন্ট ছবি নিয়ে চলা বিতর্কের আসল কারণ। সঙ্গে উঠে পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে যে মনোমালিন্য তৈরি হয়েছিল ফেডারেশনের সেই বিষয়ও।
গত বছর ফেডারেশন বনাম পরিচালক গিল্ডের সংঘাত চরমে পৌঁছয়। রাহুল মুখোপাধ্যায়কে ব্যান করা দিয়ে যে সমস্যার শুরু হয়েছিল, তা শেষ পর্যন্ত বাড়তে বাড়তে এমন পর্যায়ে পৌঁছয় যেখানে কিছুদিনের জন্য হলেও স্তব্ধ হয়ে যায় টলিপাড়া। অবশেষে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মধ্যস্থায় সেই জট কাটে। কিন্তু তাও ফেডারেশনের সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাসের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা দায়ের করেন কিছু পরিচালক। সেখানে নাম ছিল পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়েরও।
তবে ক'দিন আগেই সুর বদলে একেবারেই অন্য কথা জানিয়েছেন পরিচালক, অভিনেতা।
পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় একটি ভিডিও পোস্ট করেন সমাজমাধ্যমে। সেখানে তিনি বস্তুত স্বীকার করে নিলেন যে ফেডারেশনের বিরুদ্ধে তাঁরা যে মামলা করেছিলেন সেটা হঠকারী ছিল। শুধু তাই নয়, সেই সিদ্ধান্তকে ভুল বলেও দাবি করেন তিনি।
সেই রেশ টেনে এবার স্বরূপ বিশ্বাস ওই বৈঠকে বলেন, "পরমব্রত নিজে স্বীকার করেছেন যে অন্যের প্ররোচনায় তিনি কাজ করেছিলেন। পরে অনুতপ্ত হয়ে বিষয়টি তাঁর দিক থেকে মিটিয়ে ফেলার আবেদন জানান। আমরাও সবটা মিটিয়ে ফেলতে চাই। যে ভুল বোঝাবুঝি তৈরি হয়েছিল, পরমব্রতর সঙ্গে যে মনোমালিন্য ছিল সব ভুলে আবারও একসঙ্গে কাজ করব।"
স্বরূপ বিশ্বাসের কথায়, "আমরা সবাই একটা পরিবার। ইন্ডাস্ট্রিতে কেউ ভুল করলে, পরিবারের সদস্যদের ভুলের মতো করে দেখি। কেউ যখন ভুল করে অনুতপ্ত, তখন তাঁকে আবারও আপন করে নেওয়া আমাদের কর্তব্য। পরমের ভিডিও বার্তা পাওয়ার পর আমাদের ইসি কমিটি অর্থাৎ এক্সিকিউটিভ কমিটির সঙ্গে মিটিং হয়। আমাদের সিদ্ধান্ত, আবারও একসঙ্গে কাজ করব।"
ওই ভিডিওতে পরমব্রত বলেছিলেন, "অনেকেই হয়তো জানেন, গত এক বছর ধরে আমার এবং আমার কিছু সহকর্মীদের সঙ্গে ফেডারেশন অফ সিনে টেকনিশিয়ানস অ্যান্ড ওয়ার্কার্স অফ ইস্টার্ন ইন্ডিয়ার সঙ্গে কিছু বাদানুবাদ, মতবিরোধ, মনোমালিন্য, ভুল বোঝাবুঝি চলছিল। এখন এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে আমি অত্যন্ত আশাবাদী যে আমরা সমস্ত ভুল বোঝাবুঝি, মতবিরোধ ভুলে একসঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতে পারব। আমি ব্যক্তিগত ভাবে নিজেকে আর কোনও আইনি প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত রাখছি না। বর্তমানে রাখছি না, ভবিষ্যতেও রাখব না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি।"
পরমব্রত আরও বলেছিলেন, "এই ইন্ডাস্ট্রিতে গত ২৫ বছর ধরে কাজ করার সুবাদে জানি, এই ফেডারেশন একটি সুবৃহৎ পরিবার। পরিবারের মধ্যে যদি কখনও বিবাদ হয়, তখন সেটা আলাপ আলোচনার মধ্যেই মিটিয়ে নেওয়া শ্রেয়। এই ব্যাপারে বলতে দ্বিধা নেই, এই গোটা ব্যাপারটাকে আদালত বা আইনি প্রক্রিয়ায় নিয়ে যাওয়ার মধ্যে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তটি হয়তো কিছুটা হঠকারিতা ছিল। সঠিক ছিল না। এর পিছনে কিছু ভুল তথ্য, তথ্যের ভুল বিশ্লেষণ, মিসকমিউনিকেশন, ইত্যাদি জিনিস কাজ করেছিল। ফেডারেশনের গুরুত্ব নিয়ে আমি সবসময় সচেতন ছিলাম। অত্যন্ত সুনিশ্চিত ছিলাম। এমনকী মতবিরোধের সময়ও আমি বারবার বলেছি ফেডারেশন একটি অত্যন্ত জরুরি প্রতিষ্ঠান।"
