এমন এক সময়ে ‘ধুরন্ধর’ শুধু বক্স অফিস নয়, বলিউডের আলোচনা-তর্কের কেন্দ্রবিন্দুও হয়ে উঠেছে। ঝড় তুলেছে ছবির গল্প, কাহিনি নির্মাণের বিন্যাস ও ধরন, অভিনেতাদের দুরন্ত পারফরম্যান্স। আর সেই ঝড়ের মাঝেই স্পষ্ট মত জানালেন ইক্কিস, বদলাপুর ছবির পরিচালক শ্রীরাম রাঘবন। তাঁর বক্তব্য একেবারেই সপাট। ধুরন্ধর ছবিটা দুর্দান্ত, তবু এটা তাঁর ধাঁচের সিনেমা নয়। তাই এরকম ছবি তিনি কখনওই বানাবেন না! 

 

সম্প্রতি, দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ‘অন্ধাধুন’, ‘মেরি ক্রিসমাস’ খ্যাত ছবির পরিচালক বলেন, “ ধুরন্ধর ছবিটা খুব ভালভাবে বানানো হয়েছে, সব পারফরম্যান্সও অসাধারণ। কিন্তু এটা আমাদের ধাঁচের ছবি নয়। আমরা বর্তমানে এক অন্যরকম সময়ে বেঁচে আছি। এক সময়ের শন কনারি বা রজার মুরের বন্ড-সিনেমা ছিল নিছক মজা আর অ্যাডভেঞ্চার, পরে সেই ধারাই বদলেছে। ধীরে ধীরে সিরিয়াস ছবিতে পরিণত হয়েছে বন্ড।  ‘ধুরন্ধর’ সেই নতুন সময়ের ছবি।”

 

এখানেই থামেননি রাঘবন। স্পষ্ট জানিয়ে দেন, ছবির সাফল্য যতই বড় হোক, তিনি নকল করার পথে হাঁটতে চান না। “ছবিটা দুর্দান্ত চলছে, চলবেই। কিন্তু এটাকেই একমাত্র ফরম্যাট ধরে নিলে সেটাই সবচেয়ে বোকামি হবে। আদিত্যর নিজস্ব বুদ্ধি, নিজস্ব নির্মাণভঙ্গি আছে,আমি তাঁর ছবি দারুণ উপভোগ করি। কিন্তু এ রকম ছবি আমি বানাব না,” মন্তব্য তাঁর।

 

 

অন্যদিকে সম্পূর্ণ উল্টো সুর শোনা গেল ছবি নির্মাতা করণ জোহরের গলায়। এক সাম্প্রতিক অনুষ্ঠানে ‘ধুরন্ধর’ তাঁকে কী তীব্রভাবে নাড়িয়ে দিয়েছে, অকপটে জানালেন করণ। “আমি ছবিটা দেখে হতবাক। মনে হচ্ছিল, নিজের ছবি তৈরির দক্ষতাকে খাটো লাগতে শুরু করল। আবহসঙ্গীত ব্যবহার থেকে গল্প বলার ধরন…সব কিছুই এত নিখুঁত!  সবচেয়ে বড় কথা, কোথাও মনে হয়নি পরিচালক নিজের দক্ষতা দেখাতে চাইছেন; বরং যেন খুব স্বাভাবিক ভাবে, অনায়াসে গল্পটা বলে যাচ্ছেন,” বললেন করণ।

 

 

পর্দার বাইরে এভাবে দুই নামী পরিচালকের বিপরীত সুরে আলোচনা চললেও পর্দার ভেতরে ‘ধুরন্ধর’ এখন একেবারে বক্স অফিসে ইতিহাস লিখছে। দেশজুড়ে দাপিয়ে ব্যবসা তো বটেই, আন্তর্জাতিক মার্কেটে ছবির দাপট সমান জোরে টের পাচ্ছে বিশ্ব বক্স অফিসও। ইতিমধ্যেই আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে আয়ে ১,০০০ কোটির পাহাড় টপকে গিয়েছে এ সিনেমা, শুধু বিদেশেই সংগ্রহ করেছে ২৬ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি।

 

একদিকে বক্স অফিসে তাণ্ডব, অন্যদিকে বলিউডের সবচেয়ে সম্মানিত নির্মাতাদের বিপরীত মত,‘ধুরন্ধর’ তাই শুধু একটি সফল ছবি নয়, আজকের হিন্দি সিনেমার চরিত্র বদলে দেওয়া এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। কোন ভাবনাটা দর্শকের মনে জায়গা করে নেয় - রাঘবনের সতর্ক দূরত্ব? নাকি করণের অভিভূত বিস্ময়? সে উত্তর হয়তো সময়ই দেবে। তবে একটা কথা নিশ্চিত, এই ছবিকে ঘিরে আলোচনার আগুন এখনই নিভছে না।