ক্রিসমাস প্রায় আসন্ন। একটু একটু করে সেজে উঠছে কলকাতা। ইতিমধ্যেই আলোয় মাতোয়ারা হয়ে গিয়েছে পার্ক স্ট্রিট। উপাদেয় ফ্রুট কেক, পেস্ট্রি তারিয়ে তারিয়ে চাখা থেকে টাটকা নতুন জামা, জুতো কেনার পাশাপাশি পার্ক স্ট্রিট, কিড স্ট্রিটের মতো এক সময়ের সাহেবপাড়ায় এই মরশুমে ঢুঁ  মারাও বাঙালির তালিকায় থাকে। পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়ও রয়েছেন সেই তালিকায়। এইমুহূর্তে নিজের আসন্ন ছবি ‘লহ গৌরাঙ্গের নাম রে’-এর প্রচার নিয়ে জোর ব্যস্ত তিনি। ছবির ট্রেলার লঞ্চ থেকে সাক্ষাৎকার দেওয়ার মাঝে কয়েক পশলা ফুরসৎ পেয়েই তিনি হাজির হয়েছিলেন পার্ক স্ট্রিট। সেই মুহূর্তের একটি ছবিও পোস্ট করেছেন পরিচালক। 


রাতের পার্ক স্ট্রিট তখন শুনশান হলেও বড়দিনের আলোকসজ্জায় মায়াবী হয়ে উঠেছে। প্রধান রাস্তার একেবারে গা ঘেঁষে দাঁড়ানো এক বহুতলের ক্যাফের বারান্দার কার্নিশে আনমনে ঈষৎ ঝুঁকে, খানিক বিপজ্জনক ভাবেই বসে থাকতে দেখা গেল সৃজিতকে। ছবি থেকেই স্পষ্ট, এক মনে রাতের পার্ক স্ট্রিটের মায়াবী আলোর খেলা দেখতে তিনি বিভোর অথবা গভীরভাবে ভাবছেন কারও কথা। ছবির ক্যাপশনেই নিজের সেই সময়ের মন-মেজাজের ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি। সৃজিত লিখেছেন, 

“কথা ছিলো বদলিয়ে
দেবো কিড, পার্ক ষ্ট্রিটের নাম,
বদলিয়ে দেবো আজকের কবিতা..
শুধু তুমি এলে না...”

(পোস্টের বানান অপরিবর্তিত রাখা হল।) 

 

 

সৃজিতের এই ছবি, লেখা দেখেই নড়েচড়ে বসেছে নেটপাড়া। বার্তা বাক্সে ভেসে এসেছে টলিপাড়ার একাধিক ব্যক্তিত্বের সোর্স মন্তব্য থেকে আশঙ্কা। সুজয়প্রসাদ চট্টোপাধ্যায় যেমন সৃজিতের উদ্দেশ্যে লিখেছেন, “এসেছিল রে। তোর আশেপাশে এত লোকজন ছিল তাই দেখতে পাসনি।”  কবি-পরিচালক শ্রীজাত সৃজিতের সঙ্গে খুনসুটি করার সুযোগ পেলে সাধারণত সেই মওকা ছাড়েন না। এবারও তার অন্যথা হয়নি। তাই তো তিনি লিখলেন, “সত্যিই, AI কোথায় চলে গেছে!” বিখ্যাত চিত্রগ্রাহক সুদীপ চট্টোপাধ্যায় মজা করে লিখেছেন, “হার্নেস আছে?” সৃজিতের চটপট তেমন-ই সোর্স জবাব, “না। প্লাস নিজের স্টান্ট নিজেই।”

 

 

 

তবে সবাই যে মজা করে কমেন্ট করেছেন এমনটাও নয়। কেউ কেউ আশঙ্কা প্রকাশও করেছেন। হেমা মালিনী’ ছবির পরিচালক পারমিতা মুন্সী তাঁদের মধ্যে একজন। সৃজিতের ছবির ঠিক নীচে তিনি লিখলেন, “ঝপ্ করে পড়ে গেলে কি হবে?” জবাবে রসিকতা ধরে রাখলেন সৃজিত। যা লিখলেন, তাঁর বাংলা তর্জমা করলে দাঁড়ায়, “লহ গৌরাঙ্গের নাম রে -এর আগে আমাকে স্মরণ করে একটা একস্ট্রা  কার্ড যাবে সাদা-কালো ছবি সমেত।” শোনামাত্রই পারমিতার পাল্টা হুঁশিয়ারি,, “যতসব বাজে কথা! শরীর ঠিক রাখো। সাবধানে চলাফেরা করো। সিনেমায় সেঞ্চুরি হাঁকাতে হবে তো!”

 

উৎসবের ঝলমলে আলো, তার মাঝেই একটু একান্ত মুহূর্ত, খানিক নস্ট্যালজিয়া আর অনেকটা আবেগ, রাতের পার্ক স্ট্রিট সৃজিতের পোস্টে যেন হয়ে উঠল কেবল উৎসবের রাস্তা নয়, বরং এক শিল্পীর নীরব ভাবনার সঙ্গী।