বলিউডের অন্যতম শক্তিশালী অভিনেত্রী শেফালি শাহ। জনপ্রিয় ওটিটি সিরিজ ‘দিল্লি ক্রাইম’-এর ভার্তিকা চতুর্বেদী চরিত্রে যাঁর দাপট আজও দর্শককে শিউরে তোলে। কিন্তু দর্শকপ্রিয় অভিনেত্রী হওয়ার এই উজ্জ্বল যাত্রার আড়ালে লুকিয়ে আছে এক তীব্র আক্ষেপ। ২০০৫ সালের ‘ওয়াক্ত: দ্য রেস অ্যাগেইনস্ট টাইম’ ছবিতে অক্ষয় কুমারের মা–র ভূমিকায় অভিনয় করা তাঁর কেরিয়ারকে দীর্ঘ বছর পিছনে ঠেলে দিয়েছিল বলেই স্বীকার করলেন অভিনেত্রী!

নতুন এক সাক্ষাৎকারে অক্ষয় কুমারে মায়ের ভূমিকায় অভিনয় করার প্রসঙ্গে শেফালি সরাসরি বলেন, ‘নিজের কবর নিজেই খুঁড়েছিলাম।’

ওই সময় ‘ওয়াক্ত’-এর পরিচালক ছিলেন বিপুল অমৃতলাল শাহ, শেফালির স্বামী। তিনি স্পষ্টভাবে বলেছিলেন, এই চরিত্রে অভিনয় করা শেফালির কেরিয়ারের জন্য একেবারে ঠিক নয়। এমনকী অমিতাভ বচ্চন নিজেই প্রথমে শেফালিকে সাজেস্ট করলেও পরক্ষণেই বলেছিলেন, “তিনি মানাবে না।” কিন্তু শেফালি নিজের ইচ্ছে ছাড়তে নারাজ ছিলেন। চুলে সাদা পাউডার লাগিয়েও প্রমাণ করতেও প্রস্তুত ছিলেন তিনি যেন বয়সে বড় দেখাতে পারেন। পরে তিনি আফসোস করে বলেন, “স্বামী বলেছিল, ‘করো না।’ আমি শুনলাম না।”
ওই সাক্ষাৎকারে শেফালি আরও জানান, ওই ছবির পর তাঁর কেরিয়ার মূলত ‘অপেক্ষা করার’ যাত্রায় পরিণত হয়েছিল। বড় ভূমিকা কমে যায়, সুযোগ আসে অল্প করে। তবুও তিনি ভেঙে পড়েননি। বরং বলেন, “আমার কাজের ফিরিস্তি লম্বা নয়, কিন্তু শক্তিশালী। যে ছবিগুলো করেছি, গান্ধী, মাই ফাদার, দ্য লাস্ট লিয়র, ওয়ান্স এগেইন, থ্রি অফ আস - সবই আজ তৃপ্তি এবং গর্বের জায়গা।”
বর্তমানে আবার আলোচনার কেন্দ্রে শেফালি। দিল্লি ক্রাইম সিজন ৩-এ তিনি ভর্তিকার ভূমিকায় ফিরেছেন। আরও তীক্ষ্ণ, আরও দৃঢ়। এই সিজনে তাঁর মুখোমুখি হুমা কুরেশি, ভয়ংকর ‘বড়ি দিদি’ চরিত্রে। মানব পাচারচক্র ভাঙার এই থ্রিলার ইতিমধ্যেই প্রশংসায় ভাসছে।
শেফালি শাহের কেরিয়ার যেন প্রমাণ এক ভুল সিদ্ধান্ত জীবন থামিয়ে দিতে পারে, কিন্তু প্রতিভা থামায় না। আজ তিনি বলিউডের সবচেয়ে ‘শক্তিশালী’ অভিনেত্রীদের একজন, এবং নিজের লড়াই নিজেই তুলে ধরেন সোজাসাপটা মনোভাবের সঙ্গে।
