শাহরুখ খানের প্রযোজনা সংস্থা রেড চিলিজ এন্টারটেনমেন্ট পরিচালিত এবং আরিয়ান খান পরিচালিত ওয়েব সিরিজ 'দ্য ব্যাডস অফ বলিউড' নিয়ে এখনও চলছে চর্চা। এই সিরিজের উপর নিষেধাজ্ঞা জারির দাবিতে আইআরএস অফিসার সমীর ওয়াংখেড়ে-এর করা মামলার তীব্র বিরোধিতা করেছে। বুধবার দিল্লি হাইকোর্টে রেড চিলিজ জানায়, আরিয়ানের এই শো কোনওভাবেই কর্ডেলিয়া ক্রুজ মামলার ঘটনা নয়, বরং এটি ব্যঙ্গ ও কল্পনার উপর ভিত্তি করে তৈরি।
গত সেপ্টেম্বর মাসে সমীর ওয়াংখেড়ে দিল্লি হাইকোর্টে শাহরুখ খান ও গৌরী খানের মালিকানাধীন রেড চিলিজ এন্টারটেনমেন্ট এবং নেটফ্লিক্সের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেন। তাঁর দাবি ছিল, এই সিরিজটিতে এমন একটি দৃশ্য রয়েছে যা তাঁকে 'উপহাস' করে এবং এটি তাঁর খ্যাতি ও মর্যাদার ক্ষতি করার জন্য 'মিথ্যা ও মানহানিকর' উপাদান দ্বারা ভরা। এই কারণে তিনি শো-টির উপর স্থায়ী ও অন্তর্বর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি ক্ষতিপূরণও দাবি করেন।
বুধবার শুনানির সময় রেড চিলিজের পক্ষে সওয়াল করেন প্রখ্যাত আইনজীবী নীরজ কিষাণ কল। তিনি বিচারপতির সামনে জোরালোভাবে বলেন যে ব্যঙ্গ ও কল্পনার একসঙ্গে অস্তিত্ব থাকতে পারে। তাঁর যুক্তি ছিল, "ব্যঙ্গ ও কল্পনার কি সহাবস্থান হতে পারে না? এমন কোনও আইন নেই যা এতে বাধা দেয়। আমি হয়তো আংশিকভাবে বাস্তব ব্যক্তি বা গল্প দ্বারা অনুপ্রাণিত হতে পারি, তবুও ডিসক্লেমার থাকতে পারে, দুটো একসঙ্গে থাকায় কোনও সমস্যা নেই।"
কল স্পষ্ট করে দেন যে এই সিরিজটি কোনওভাবেই কর্ডেলিয়া ক্রুজের ঘটনার তথ্যচিত্র নয়, যদিও এটি 'অতি-উৎসাহী অফিসারদের' থেকে কিছুটা অনুপ্রেরণা নিয়েছে। তিনি বলেন, "আমরা কর্ডেলিয়া ক্রুজ ঘটনার উপর কোনও তথ্যচিত্র দেখাচ্ছি না। আমরা 'অতি-উৎসাহী অফিসারদের' দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছি। এই কথা বলা আর কর্ডেলিয়া ক্রুজের গল্প বলা এক জিনিস নয়।" তিনি আরও জানান, সিরিজটি মূলত বলিউডের প্রায় ২০টি ভিন্ন সমস্যা নিয়ে তৈরি এবং এটি একটি 'বলিউড পার্টিতে সাফল্যের গল্প' তুলে ধরে।
রেড চিলিজের আইনজীবী সরাসরি সমীর ওয়াংখেড়ের সংবেদনশীলতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, "আহত বা কষ্ট পাওয়া কোনও বিদ্বেষের কারণ হতে পারে না। আপনি কি বিচ্ছিন্ন কোনও অংশকে তুলে ধরে মামলা করতে পারেন? এই সিরিজে প্রতিটি দৃশ্যকে অতিরঞ্জিত করে দেখানো হয়েছে। একজন সরকারি কর্মকর্তা এত সংবেদনশীল হতে পারেন না।" তিনি আরও যোগ করেন যে ওয়াংখেড়ে সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিতে ভালবাসেন, তাই অকারণে এমন করছেন।
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের অক্টোবর মাসে মুম্বই উপকূলের কাছে কর্ডেলিয়া এমপ্রেস ক্রুজ জাহাজে মাদক পার্টিতে এনসিবি-র অভিযান চালানো হয়, যার নেতৃত্বে ছিলেন তৎকালীন জোনাল অফিসার সমীর ওয়াংখেড়ে। সেই অভিযানে আরিয়ান খান গ্রেফতার হন এবং তিন সপ্তাহেরও বেশি সময় জেলে কাটান। পরে অবশ্য এই মামলা থেকে আরিয়ানকে ক্লিন চিট দেওয়া হয়।
