অভিনেত্রী সায়ন্তনী ঘোষের গর্ভধারণ নিয়ে জল্পনা-কল্পনা সোশ্যাল মিডিয়ায় কয়েকদিন ধরেই ঘুরে বেড়াচ্ছিল। সম্প্রতি তাকে ঢিলেঢালা পোশাকে দেখা যাওয়ায় অনেকে ধারণা করেন, তিনি প্রথম সন্তানের মা হতে চলেছেন। তবে অভিনেত্রী নিজেই এবার সেই গুজবের অবসান ঘটালেন। তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য, “আমি যদি সত্যিই অন্তঃসত্ত্বা হতাম, তাহলে দৈনিক ধারাবাহিকের গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র নিতাম না। মানুষ অন্যের জীবন নিয়ে এত বিচার-বিশ্লেষণ কেন করে?”

নতুন ধারাবাহিক ‘জগদ্ধাত্রী’র মাধ্যমে ছোট পর্দায় ফিরেছেন সায়ন্তনী। ২০২১ সালে অনুগ্রহ তিওয়ারিকে বিয়ের পর তাদের সন্তান নেওয়ার পরিকল্পনা নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই তিনি বলেন, “কী বলব! যখন হওয়ার, তখনই হবে। বিয়ের পর কিছুদিন গেলেই বা বয়স ৪০-এর কাছাকাছি হলেই সন্তান নেওয়া উচিত — এই গতে বাঁধা ভাবনা কে তৈরি করেছে? কারা এরা, যারা বিচার করছে?”

সন্তান নেওয়ার বিষয়ে নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, “চারপাশের চাপ যে থাকে, তা অস্বীকার করছি না। কিন্তু একটি দম্পতি কখন পরিবার শুরু করবে, তা সম্পূর্ণ তাদের ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। আপাতত আমি আমার বোনঝি এবং ভাইপোর ‘গডমাদার’ হিসেবে বেশ সুখে আছি — আমি এখন মাসিও হয়েছি, পিসিও হয়েছি। আমাদের দুজনেরই এখনো মানসিকভাবে সেই জায়গায় পৌঁছনো হয়নি। সন্তান নেওয়ার সিদ্ধান্তে দুজনের মানসিক প্রস্তুতি জরুরি — আর এই মুহূর্তে আমরা সেই সময় নিচ্ছি।”

সায়ন্তনী সম্প্রতি ইন্ডাস্ট্রিতে ২০ বছর পূর্ণ করেছেন। দীর্ঘ অভিজ্ঞতার পরও একই ধরনের চরিত্রে তাঁকে বাঁধতে চাওয়ার প্রবণতা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, “২০তম বছরে এসে আমাকে এখনও প্রমাণ করতে হয় যে আমি শুধু নির্দিষ্ট ধরনের চরিত্রই করি না — এটা সত্যিই অদ্ভুত।”

এপ্রিল মাসে আগের ধারাবাহিক শেষ হওয়ার পর আবারও ছোট পর্দায় ফিরতে পেরে তিনি উচ্ছ্বসিত। নতুন কাজ সম্পর্কে সায়ন্তনী বলেন, “দহেজ দাসী শেষ হওয়ার পরই আরেকটি কাজের প্রস্তাব পাই এবং ‘মায়া’-র মতো চরিত্রে না বলাটা সম্ভব ছিল না। এত বছরের পরিশ্রমের পর এমন শক্তিশালী নারী-কেন্দ্রিক গল্পের অংশ হতে পারাটা সত্যিই আনন্দের।”

ব্যক্তিগত জীবনকে ঘিরে অনাকাঙ্ক্ষিত জল্পনা যখন সোশ্যাল মিডিয়ায় বাড়ছিল, তখন তিনি সরাসরি জানিয়ে দিয়েছেন—নিজের জীবনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার সম্পূর্ণ অধিকার তাঁরই। ‘নাগিন’, ‘মহাভারত’, ‘সীমারেখা’ থেকে শুরু করে সাম্প্রতিক ‘জগদ্ধাত্রী’— প্রতিটি প্রোজেক্টেই সায়ন্তনী প্রমাণ করেছেন যে তিনি শুধু গ্ল্যামার নয়, গভীরতা ও পরিশীলিত অভিনয়ও সমান দক্ষতায় তুলে ধরতে পারেন।