সইফ আলি খান। মনসুর আলি খান পটৌডি এবং শর্মিলা ঠাকুরের পুত্র। বাবা নামী ক্রিকেটার, মা কিংবদন্তী অভিনেত্রী। নবাব পরিবারে তিনি যে সোনার চামচ মুখে নিয়ে জন্মেছেন, তা নতুন করে বলে দিতে হয় না। তবু সাফল্যের পথ ছিল না মসৃণ। কেরিয়ারের শুরুতে লড়াই করতে হয়েছে নবাব-পুত্রকেও। ওঠাপড়ার আঁচ তাঁর গায়েও লেগেছে। এক সাক্ষাৎকারে সেই কথাই জানিয়েছিলেন তিনি।
মাত্র ২১ বছর বয়সে তিনি অমৃতা সিংকে ভালবেসে বিয়ে করেছিলেন। আর ২৫ বছর বয়সে প্রথম বাবা হয়েছিলেন। শুরু থেকেই তাঁর কাঁধে আর্থিক দায়িত্ব ছিল। এমন এক সময় ছিল সইফ যখন সপ্তাহে মাত্র এক হাজার টাকা পেতেন। কিন্তু তার সঙ্গে ছিল এক অদ্ভুত শর্ত। তিনি জানিয়েছেন, এক মহিলা প্রযোজক প্রতি সপ্তাহে তাঁকে এক হাজার দিতেন। কিন্তু টাকাটি নেওয়ার সময় নায়ককে তাঁর গালে দশবার চুম্বন করতে হত।
তারকা মা-বাবার সন্তান সইফের বলিউড যাত্রা সহজ হবে বলেই ধরে নিয়েছিলেন অনেকে। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি মোটেই। কেরিয়ারের শুরুর দিকে বেশিরভাগ সময় সেকেন্ড লিড-এর চরিত্র করেছেন তিনি। অভিনয় করেছেন একের পর এক ‘নিম্ন মান’-এর ছবিতে।
সইফ বলেন, “আমি দ্বিতীয়, তৃতীয় লিডের চরিত্র করেছি... কিছু ছবি ছিল যেগুলি ভালই, আমাকে টিকে থাকতে সাহায্য করেছিল। কিন্তু এরপর এমন সময় এল যখন একের পর এক খুবই খারাপ ছবি আসে।”
সইফ নয়ের দশককে তাঁর ‘নেট প্র্যাকটিস’-এর যুগ হিসাবে বর্ণনা করেছেন—কাজ নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা চালানো, ভুল করা এবং তার মাধ্যমে শেখার অধ্যায়।
শর্মিলা-পুত্র জানান, সম্প্রতি তিনি নিজের কেরিয়ারের প্রথম দু’দশকের সমস্ত ছবি ইউটিউবে পুনরায় দেখেছেন। অতীতকে পিছনে ফিরে দেখেই সইফ বুঝেছেন, অভিনেতা হিসাবে তিনি কতটা রাস্তা পার করে এসেছেন।
অভিনেতার কথায়, “মানুষ বলে, তোমার এত সুযোগ পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার। কিন্তু আমি মোটেই সব সেরা ছবিগুলি পাই নি। বা প্রধান চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগও আসেনি।”
২০০০-এর শুরুতে সইফের কেরিয়ারে একটি মাইলফলক আসে। ‘লাভ কে লিয়ে কুচ ভি করেগা’ এবং ‘দিল চাহতা হ্যায়’ মতো ছবি তাঁকে সাধারণ রোম্যান্টিক হিরো-এর ছাঁচ থেকে মুক্তি দেয়। ২০০৬ সালে ‘ওমকারা’তে ‘ল্যাংড়া ত্যাগী’র চরিত্রে অভিনয় করেন তিনি। পুরস্কারও পান। সকলকে বুঝিয়ে দেন যে তিনি চেনা ছকের বাইরে জটিল এবং স্তরযুক্ত চরিত্রে অভিনয় করতেও সক্ষম।
তারপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি সইফকে। একের পর এক নিরীক্ষামূলক ছবিতে কাজ করেছেন তিনি। পাশাপাশি বাণিজ্যিক ছবিতেও অভিনয় করেছেন। ওটিটি-তেও তাঁর অবাধ বিচরণ। আপাতত অভিনেতার হাতে একগুচ্ছ কাজ।
