মুম্বইয়ের টেলিভিশন জগতের জনপ্রিয় মুখ ঋত্বিক ধনজানী। ‘প্যায়ার কি ইয়ে এক কহানি’, ‘পবিত্র রিশতা’-সহ একাধিক সিরিয়ালে অভিনয় করে দর্শকদের মন জয় করেছেন তিনি। কিন্তু সাফল্যের এই পথ মোটেও সহজ ছিল না। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে অভিনেতা জানিয়েছেন, সংগ্রামের শুরুতে মাত্র ২০ বছর বয়সে তিনি এক কাস্টিং কাউচের ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার শিকার হয়েছিলেন।

এক পডকাস্টে হাজির হয়ে ঋত্বিক জানান, তিনি মুম্বইয়ের আরামনগরে এক কাস্টিং ডিরেক্টরের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন। অভিনেতা বলেন, “আমাদের অনেকজনের মধ্যে থেকে সে আমাকে বেছে নিল এবং বলল, ‘তুমি শর্টলিস্টেড’। তখন মনে হল স্বপ্ন সত্যি হয়েছে! ওকে ধন্যবাদ দিতে দিতে আমি উচ্ছ্বসিত হয়ে পড়েছিলাম।”

অভিনেতা আরও জানান, ডিরেক্টর তাঁকে বলেছিলেন অফিসে সঙ্গে যেতে হবে। ভয়ঙ্কর সেই স্মৃতি মনে করে ঋত্বিক বলেন, “সে বলল, বাইকে চলো। আমি রাজি হলাম। কিন্তু যখন আমরা পৌঁছলাম, দেখলাম আশপাশে কোনও অফিসই নেই—একটা মুদি দোকান, একটা খাবারের স্টল। মনে হচ্ছিল, ‘ও সত্যিই কি এখানে কাস্টিং করে?’ এরপর সে আমাকে সরু গলির মধ্যে নিয়ে গেল। আমি ভাবলাম সামনে হয়তো কোনও বাংলো আছে, কিন্তু সেখানে একটা বড় তালাবদ্ধ গেট। সে খুলে ভিতরে ঢুকল, ভিতরটা অন্ধকার, ওপরতলায় সিঁড়ি। বলল, ‘চলো, এটাই আমার অফিস।’ তখনই বুঝে গেলাম কিছু একটা ঠিক নয়, আমার গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠেছিল।” 
ঋত্বিক জানান, উপরে গিয়ে ডিরেক্টর তাঁকে তাঁর শোরিল দেখাতে বলেন। “কিন্তু অর্ধেক দেখেই সে ভিডিও থামিয়ে বলল, ‘এই ইন্ডাস্ট্রিতে পরিশ্রম নয়, স্মার্ট কাজ করলেই চলে।’ বলেই সে আমাকে স্পর্শ করল। আমি পুরোপুরি জমে গিয়েছিলাম। ভিতরে ভিতরে ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। তখন আমি মাত্র ২০। কোনওভাবে নিজেকে সামলে সেখান থেকে বেরিয়ে আসি,” বলেন অভিনেতা।

ওই অভিজ্ঞতা তাঁর জীবনে গভীর প্রভাব ফেলেছিল। মাত্র ২০ বছর বয়সে এমন ঘটনার সম্মুখীন হয়ে তিনি আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন। তবে সেই সময়ের পরও তিনি কাজের প্রতি মনোযোগী থাকেন এবং ধীরে ধীরে ইন্ডাস্ট্রিতে নিজের জায়গা তৈরি করেন, একাধিক জনপ্রিয় শোতে অভিনয় করে সাফল্য অর্জন করেন।

ঋত্বিক প্রথম খ্যাতি পান জনপ্রিয় সিরিয়াল ‘পবিত্র রিশতা’র মাধ্যমে। যেখানে তাঁর সহ-অভিনেতা ছিলেন সুশান্ত সিং রাজপুত এবং অঙ্কিতা লোখণ্ডে। পরবর্তীতে তিনি ‘নাচ বলিয়ে ’ এবং ‘ঝলক দিখলা যা’এর মতো রিয়্যালিটি শো-র সঞ্চালনাও করেছেন। সর্বশেষ তিনি করণ ওয়াহি এবং মানভি গাগরুর সঙ্গে ওয়েব সিরিজ ‘হাফ লাভ হাফ অ্যারেঞ্জড’এ অভিনয় করেন। ব্যক্তিগত জীবনে ক্রিস্টল ডি’সুজার সঙ্গে তাঁর বন্ধুত্ব নিয়েও প্রায়ই শিরোনামে থাকেন তিনি।