চলতি বছরে দীপিকা পাড়ুকোনের দু’টি বড় প্রোজেক্ট ‘স্পিরিট’  এবং ‘কল্কি ২’ থেকে সরে দাঁড়ানোকে ঘিরে শুরু হয়েছে জোরদার বিতর্ক। অভিযোগ, দিনে মাত্র ৮ ঘণ্টা কাজ করার শর্তে অনড় থাকায় ছবির নির্মাতাদের সঙ্গে মতবিরোধ তৈরি হয় নায়িকার। মা হওয়ার পর দীপিকা আট ঘণ্টার শিফট চেয়েছিলেন, যা প্রযোজকদের সুবিধাজনক বলে হয়নি। আর সেই বিরোধ থেকেই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে যুক্তিসঙ্গত কাজের সময়সীমা নিয়ে ফের আলোচনা শুরু।

এই বিতর্কের মাঝেই ভাইরাল হয়েছে দীপিকার স্বামী এবং অভিনেতা রণবীর সিংয়ের একটি পুরনো ভিডিও। প্রায় তিন বছর আগের সেই সাক্ষাৎকারে রণবীরকে বলতে শোনা যায়, প্রয়োজনে তিনি আট ঘণ্টার শিফট বাড়িয়ে ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা কাজ করতেও আপত্তি করেন না যদি তাতে কাজ সঠিকভাবে সম্পন্ন হয়।

২০২২ সালে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রণবীর জানান, ব্র্যান্ড এবং নির্মাতারা তাঁর উপর ভরসা রাখেন, কারণ তিনি নিজের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেন। তাঁর কথায়, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ না হলে অতিরিক্ত কিছু সময় দেওয়াটা অস্বাভাবিক নয়।

রণবীর বলেন, “অনেক সময় অন্য শিল্পী বা তাঁদের ম্যানেজমেন্ট অভিযোগ করে ‘তুমি সবাইকে বিগড়ে দিচ্ছ। আট ঘণ্টার শিফটে তুমি ১০–১২ ঘণ্টা শুটিং করো, তাই আমাদেরও করতে হয়।’”

তিনি আরও বলেন, “কিন্তু যদি আট ঘণ্টায় আমরা যেটা চাই, সেটা না হয়, তাহলে একটু বেশি শুটিং করাই যায়। আমি কাজকে কোনও লেনদেনের মতো দেখি না।”

বর্তমানে আদিত্য ধর পরিচালিত ‘ধুরন্ধর’  ছবির সাফল্য উপভোগ করছেন রণবীর । গত মাসে ছবির ট্রেলার লঞ্চ অনুষ্ঠানে পরিচালক জানান, টানা দেড় বছর ধরে পুরো টিম ১৬ থেকে ১৮ ঘণ্টা করে কাজ করেছেন। এত দীর্ঘ সময় ধরে শুটিং চললেও কেউ একবারের জন্যও কাজের চাপ নিয়ে অভিযোগ করেননি বলে জানান তিনি।

“আমরা দেড় বছর ধরে টানা ১৬–১৮ ঘণ্টা কাজ করেছি। তবু কেউ কখনও অভিযোগ করেনি। রণবীর-সহ প্রত্যেকেই নিজের ১০০ শতাংশ দিয়েছে,” বলেন আদিত্য।

অন্য দিকে, সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে দীপিকা স্পষ্টভাবে নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করেন। মাতৃত্ব তাঁর কাজের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি বদলে দিয়েছে বলে জানান অভিনেত্রী। দীপিকা বলেন, “আমরা অতিরিক্ত কাজ করাকে স্বাভাবিক বলে মেনে নিয়েছি। ক্লান্তিকে আমরা প্রতিশ্রুতির সঙ্গে গুলিয়ে ফেলি। মানুষের শরীর ও মনের জন্য দিনে আট ঘণ্টা কাজই যথেষ্ট। আপনি সুস্থ থাকলেই নিজের সেরা কাজটা দিতে পারবেন। ক্লান্ত মানুষকে ফের কাজে ফিরিয়ে এনে কারও উপকার হয় না। আমার নিজের অফিসে আমরা সোমবার থেকে শুক্রবার দিনে আট ঘণ্টা কাজ করি। মাতৃত্ব ও পিতৃত্বকালীন ছুটির ব্যবস্থাও রয়েছে। কর্মক্ষেত্রে শিশুদের আনার বিষয়টাকেও স্বাভাবিক করা উচিত।”