বছর দুয়েকের বিরতির পর বড়পর্দায় ‘ধুরন্ধর’ ছবির মাধ্যমে ফিরছেন রণবীর সিং। অভিনেতার এই কামব্যাক নিয়ে আগ্রহ তুঙ্গে। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে এক বিরল রেকর্ড। আদিত্য ধর পরিচালিত ‘ধুরন্ধর’ গত ১৭ বছরের মধ্যে বলিউডের সবচেয়ে দীর্ঘ মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি হতে চলেছে! রণবীর সিংয়ের সঙ্গে ছবিতে রয়েছেন সঞ্জয় দত্ত, অক্ষয় খান্না, আর. মাধবন, অর্জুন রামপাল, সারা অর্জুন ও রাকেশ বেদি।
ছবির রানিং টাইম ২১৪ মিনিট অর্থাৎ ৩ ঘণ্টা ৩৪ মিনিট দীর্ঘ এই অ্যাকশন ড্রামা রানটাইমের দিক থেকে ছাপিয়ে গিয়েছে আশুতোষ গোয়ারিকরের ‘যোধা আকবর’-কে, যার দৈর্ঘ্য ছিল ৩ ঘণ্টা ৩৩ মিনিট। ২০০৮ সালের পর এত বড় হিন্দি ছবি আর মুক্তি পায়নি। এই হিসেবে রেকর্ড তৈরি করতে চলেছে রণবীরের এই ছবি।
সম্প্রতি সেন্সর বোর্ড ছবিটিকে ‘এ’ সার্টিফিকেট দিয়েছে, যা রণবীর সিংয়ের কেরিয়ারে কোনও ছবির ক্ষেত্রে এই প্রথম। সহজ কথায়, শুধুমাত্র প্রাপ্তবয়স্করাই এই ছবি প্রেক্ষাগৃহে গিয়ে দেখতে পারবে। তবে সেই ছাড়পত্র পাওয়ার আগে ছবিটিকে যেতে হয়েছে একাধিক সংশোধন ও আইনি জটিলতার মধ্যে দিয়ে।
ছবির মুক্তিকে ঘিরে আইনি প্রশ্নও উঠেছিল। প্রয়াত মেজর মোহিত শর্মার বাবা-মা দিল্লি হাই কোর্টে আবেদন জানিয়ে অভিযোগ করেন, ছবির গল্পের সঙ্গে তাঁদের ছেলের জীবনের ঘটনার সঙ্গে বেশ মিল। এক্ষেত্রে পরিবারের বা ভারতীয় সেনার কাছ থেকে কোনও অনুমতি নেওয়া হয়নি বলেও দাবি করা হয়। এই অভিযোগ নাকচ করে পরিচালক আদিত্য ধর এক্স -এ স্পষ্ট করে জানান, ‘ধুরন্ধর’ পুরোপুরি একটি কাল্পনিক গল্প। যদি কোনও বাস্তব চরিত্রের উপর ছবি হলে অনুমতি অবশ্যই নেওয়া হত বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

পরবর্তী সময়ে বিস্তারিত পর্যালোচনার পর সেন্সর বোর্ড জানায়, ছবিটি “সম্পূর্ণ কল্পকাহিনি” এবং এর সঙ্গে মেজর মোহিত শর্মার জীবনের কোনও প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ মিল নেই। বোর্ড আরও জানায়, ছবিটি সেনাবাহিনীর আলাদা কোনও পর্যালোচনার প্রয়োজন নেই। এর ফলে ৫ ডিসেম্বর নির্ধারিত মুক্তির পথে শেষ বাধাটিও কার্যত সরে গেল। অন্যদিকে, যদিও ছবির দৈর্ঘ্য অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে, তবুও ছাড়পত্র পাওয়ার আগে বেশ কিছু পরিবর্তন করতে হয়েছে নির্মাতাদের। সেন্সর বোর্ডের বিবৃতি অনুযায়ী, আইন ও বোর্ডের নিয়ম মেনে কয়েকটি দৃশ্য ছাঁটা, বদলানো ও নতুন করে সংযোজন করা হয়েছে।

অতিরিক্ত হিংসাত্মক বলে মনে হওয়া ছবির শুরুর দিকের কিছু দৃশ্য বদলানো হয়েছে। দ্বিতীয়ার্ধে কয়েকটি শট বাদ দেওয়া হয়েছে। একটি চরিত্রের নাম পরিবর্তন করা হয়েছে, একটি গালাগাল শব্দ মিউট করা হয়েছে এবং মাদক সেবন সংক্রান্ত দৃশ্যে বাধ্যতামূলক সতর্কীকরণ যোগ করা হয়েছে।
সব মিলিয়ে, বিতর্ক, রেকর্ড, কড়া সার্টিফিকেশন আর স্টারপাওয়ার-সবকিছু একসঙ্গে নিয়ে ‘ধুরন্ধর’ ইতিমধ্যেই বছরের সবচেয়ে আলোচিত ছবিগুলির একটি হয়ে উঠেছে। এখন দেখার, সাড়ে তিন ঘণ্টার এই সিনেমাটিক যুদ্ধ দর্শকদের কতটা ধরে রাখতে পারে।
