চলছে ক্যামেরা, চলছে অভিনয়। কিন্তু ক্যামেরার বাইরেই কি শুরু হল মারপিট? নাকি গোটা ঘটনাটাই ছিল প্র্যাকটিসের অঙ্গ? বলিউডে এখন আলোচনার কেন্দ্রে একটাই ভিডিও—যেখানে দেখা যাচ্ছে, ‘কিল’ খ্যাত অভিনেতা রাঘব জুয়াল ও ‘ব্যোম ডিগি ডিগি’ গান খ্যাত সাক্ষী মালিকের মধ্যে বেধেছে তুমুল ঝগড়া।

ভাইরাল ভিডিওটিতে রাগে ফুঁসতে থাকা সাক্ষী মালিক রাঘবের চুল ধরে টানছেন, উত্তরে রাঘব তাঁকে চড় মারছেন! কিছুক্ষণের মধ্যেই দু’পক্ষের বন্ধুরা হস্তক্ষেপ করেন। ভিডিও দেখে চমকে উঠেছেন নেটিজেনরা। কেউ বলছেন, “রাঘব কি সত্যিই চড় মারলেন?” তো কেউ বলছেন, “সাক্ষী এতটা রেগে গেলেন কেন?”

 

 

কিন্তু পরে যা জানা গেল, তা সম্পূর্ণ আলাদা গল্প বলছে।

 

‘চড়চাপাটি’ নয়, এটা ছিল অভিনয়ের মহড়া! নেটমাধ্যমে চলতে থাকা জল্পনার মাঝেই নিজেদের সোশ্যাল হ্যান্ডলে মুখ খোলেন রাঘব ও সাক্ষী। দু’জনেই জানান, ওই ভাইরাল ভিডিওটি ছিল আসলে একটি থিয়েটার প্র্যাকটিস সেশনের অংশ। তাঁরা একটি দৃশ্য অনুশীলন করছিলেন, এবং পুরো ভিডিওটাই ছিল অভিনয়ের অঙ্গ।

 

সাক্ষী মালিক লেখেন – “এটা ছিল আমাদের অভিনয় মহড়ার ভিডিও। চারজন অভিনেতা একটি দৃশ্য অনুশীলন করছিলাম মাত্র। কাউকে আঘাত করার বা অপমান করার কোনও উদ্দেশ্য ছিল না। আশা করি, সবাই বুঝবেন।”

 

রাঘব জুয়ালও লেখেন – “আমরা একজন অভিনেতা হিসেবে নিজেদের আরও ভাল করে গড়ে তুলতে চাই। এটা ছিল সেই চেষ্টারই একটা অংশ।”

 কে এই সাক্ষী মালিক?
কানপুরের মেয়ে সাক্ষী প্রথম নজরে আসেন বিজ্ঞাপন জগতে। এরপর হঠাৎই ‘ব্যোম ডিগি ডিগি’ গানের মাধ্যমে রাতারাতি ভাইরাল হন। গানটি ছিল ‘সোনু কে টিটু কি সুইটি’ ছবির। এরপর  ২০২৩ সালে তাঁকে দেখা যায় ‘ড্ৰাই ডে’ ছবিতে। বর্তমানে সাক্ষীর ইনস্টাগ্রামে ৭.৪ মিলিয়ন ফলোয়ার।

 

অন্যদিকে চোখ ফেরানো যাক রাঘব জুয়ালের দিকেও। নাচ থেকে বড়পর্দা পর্যন্ত এককথায় চমকপ্রদ উত্থান এই শিল্পীর। নাচের মঞ্চ থেকে উঠে এসে এখন রাঘব বলিউডের এক আলোচিত মুখ। ‘কিল’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য প্রশংসা কুড়িয়েছেন। সামনে রয়েছেন একাধিক বড় প্রজেক্টে —

‘কিং’ ছবিতে শাহরুখ খান ও সুহানা খানের সঙ্গে স্ক্রিন শেয়ার করবেন।

দক্ষিণে তেলুগু ছবিতে পা রাখছেন নানির বিপরীতে ‘দ্য প্যারাডাইস’ ছবিতে।

 

কেন এই ভিডিও নিয়ে এত চর্চা? ভিডিওটির ফ্রেমিং, ক্যামেরা অ্যাঙ্গেল এবং রিঅ্যাকশন এতটাই স্বতঃস্ফূর্ত ছিল যে অনেকেই ধরে নিয়েছিলেন এটি বাস্তব ঝগড়া। এরকম সময়, যেখানে তারকাদের একঘেয়ে সোশ্যাল লাইফে তুফান আসে ভাইরাল ভিডিও থেকে, তখন এমন দৃশ্য যে কতটা বিভ্রান্তি তৈরি করতে পারে, সেটাই চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে। বলাই বাহুল্য, এই ঘটনার পরও রাঘব-সাক্ষীর জনপ্রিয়তা আকাশছোঁয়া। ভিডিওর ঝড়ে ইনস্টাগ্রামে ফলোয়ারের সংখ্যা বেড়েছে, গুগল ট্রেন্ডে নাম উঠেছে সার্চ টপে, আর তাঁদের আগামী প্রজেক্ট নিয়ে আগ্রহ এখন দ্বিগুণ।

 

আজকের দিনে বিনোদন ও বাস্তব জীবন এতটাই মিশে গিয়েছে যে একটি প্র্যাকটিস ভিডিও ভুল বোঝাতে পারে সহিংসতা, ঝগড়া কিংবা বিতর্ক হিসেবে। রাঘব-সাক্ষীর এই ভাইরাল মুহূর্ত আমাদের শেখায়—দেখার আগেই বিচার নয়, বরং বোঝার চেষ্টা করাই আসল মনুষ্যত্ব।

একদিকে যেমন তাঁরা ভালো অভিনেতা হয়ে উঠছেন, তেমনই বুঝিয়ে দিলেন, ট্রোল আর বিভ্রান্তির যুগে স্পষ্ট কথা বলাই সবচেয়ে জরুরি।