এসএস রাজামৌলি–মহেশ বাবুর জঙ্গল-অ্যাডভেঞ্চার ড্রামার শুটিংয়ে ব্যস্ত প্রিয়ঙ্কা চোপড়া। কিন্তু তার মাঝেই বলিউডের দেশি গার্ল বিশ্বকে চমকে দিলেন নতুন ঘোষণায়। নিজের প্রোডাকশন হাউস পার্পল পেবল পিকচার্স-এর ব্যানারে তিনি একেবারে রোম্যান্টিক এক ভারত-সুইডিশ কাহিনি নিয়ে এলেন—ডকুমেন্টারি ‘দ্য সাইকেল অব লাভ’।

 

এই ছবির কেন্দ্রে আছেন দিল্লির রাস্তায় ছবি আঁকা এক সাধারণ শিল্পী, পিকে মহানন্দিয়া। ১৯৭৭ সালে মাত্র এক পুরনো র্যা লি সাইকেল আর বুকভরা প্রেম নিয়ে তিনি পাড়ি দিয়েছিলেন ৬,০০০ মাইল। গন্তব্য—সুইডেনে থাকা তাঁর ভালবাসার মানুষ লোট্টা ভন শেন্ডিনের কাছে। অস্কারজয়ী ব্রিটিশ পরিচালক অরল্যান্ডো ভন আইনসিডেল (২০১৭-তে ‘দ্য হোয়াইট হেলমেটস’-এর জন্য অস্কার পান) পরিচালনা করছেন এই ডকুমেন্টারি।

 

তবে এই কাহিনির সঙ্গে কিন্তু জড়িয়ে আছে বলিউডের এক অসম্পূর্ণ গল্প। বলা ভাল, এক অসম্পূর্ণ স্বপ্নও। ২০১৩ সালে সঞ্জয় লীলা বনশালি এই গল্প নিয়েই বানাতে চেয়েছিলেন ‘ইজহার’ ছবিটি। শোনা গিয়েছিল, সেখানে মহানন্দিয়ার ভূমিকায় অভিনয় করবেন শাহরুখ খান। তখন ওয়ার্নার ব্রাদার্সও হাত মিলিয়েছিল বনশালির সঙ্গে। ‘দেবদাস’-এর পর কিং খানের সঙ্গে এটি হতে পারত বনশালির দ্বিতীয় বড় প্রজেক্ট। কিন্তু হঠাৎ করেই থমকে যায় সেই পরিকল্পনা।

 

 

২০১৯-এ আবার গুঞ্জন উঠেছিল—‘ইনশাল্লাহ’ বাতিল হওয়ার পর বনশালি নাকি ‘ইজহার’-এর প্রজেক্টটিতে ফিরছেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সবই রয়ে গেল গুজব। ‘বৈজু বাওরা’ কিংবা সাহির লুধিয়ানভীর বায়োপিকের মতোই ‘ইজহার’ও থেকে গেল বনশালির অসম্পূর্ণ ড্রিম প্রজেক্টের তালিকায়।

 

তবে শেষমেশ এই সত্যি প্রেমের আসল গল্প পর্দায় আস্তে চলেছে প্রিয়াঙ্কার হাত ধরে।  কিন্তু ‘দ্য সাইকেল অব লাভ’ এবার বলতে চলেছে মহানন্দিয়ার আসল গল্প—অরিজিনাল ফর্মে, অরিজিনাল আবেগে। থাকছে আর্কাইভাল ফুটেজ, সাক্ষাৎকার আর চোখ ভিজিয়ে দেওয়া বাস্তব কাহিনির পুনর্নির্মাণ। অচ্ছুত পরিবারে জন্মানো এক দরিদ্র ছেলে, যিনি রঙ-তুলি দিয়ে আঁকেন জীবন, আর সেই জীবনই তাঁকে এনে দেয় লোট্টা নামের এক সুইডিশ পর্যটকের সঙ্গে প্রেমের গল্প। মাত্র কিছু দিনের পরিচয়, অথচ এত গভীর সম্পর্ক যে যুবকটি মহাদেশ পেরিয়ে সাইকেল চালিয়ে পৌঁছে গিয়েছিলেন তার প্রেমিকার দেশে।

এ যেন বিশ শতকের সবচেয়ে অসাধারণ সত্যিকারের প্রেমকাহিনিগুলির মধ্যে একটিকে নতুন করে বিশ্বকে শোনানোর উদ্যোগ। আর তার নেপথ্যে এবার প্রিয়ঙ্কার হাত।