বলিউড সঙ্গীতের ইতিহাসে তিনি এক অদ্বিতীয় নাম—মহম্মদ রফি। সুরের জাদুকর, যাঁর কণ্ঠে ধরা দিত প্রেম, ভক্তি, বেদনা কিংবা উচ্ছ্বাস—সবকিছুই। অথচ এত বছর পর তাঁর ছেলে শাহিদ রফি এমন বিস্ফোরক অভিযোগ তুললেন, যা চমকে দিয়েছে সঙ্গীতমহলকে। রফি-পুত্রের দাবি, মহম্মদ রফির উত্থান সহ্য করতে পারেননি লতা মঙ্গেশকর ও আশা ভোঁসলে। তাঁর বাবার কর্মজীবন নষ্ট করার চেষ্টা করেছিলেন এই দুই গায়িকা!
শাহিদ এক সাক্ষাৎকারে সরাসরি বলেন, “তাঁরা বাবার জনপ্রিয়তায় হিংসা করতেন লতা মঙ্গেশকর ও আশা ভোঁসলে। সবাই তাঁকে এক নম্বর বলত, আর সেটা তাঁদের ভাল লাগত না।” তাঁর কথায়, রফির সঙ্গে পুরুষ সহশিল্পীদের সম্পর্ক ছিল সুসম্পর্কপূর্ণ, কিন্তু মঙ্গেশকর বোনদের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল সবসময় তিক্ত।
শুধু তাই নয়, আশা ভোঁসলের এক মন্তব্য নিয়েও ক্ষোভ উগরে দেন শাহিদ। অভিযোগ, আশা একসময় বলেছিলেন রফির গলায় রেঞ্জ কম। শাহিদের তীব্র প্রতিবাদ, “আমি লতাজিকেও বলে এসেছি, তিনি একসময় দাবি করেছিলেন বাবা নাকি তাঁর কাছে ক্ষমা চেয়েছিলেন। এটা সম্পূর্ণ মিথ্যে। বরং মানুষ লতার কাছেই ক্ষমা চাইতে বলেছিলেন বাবাকে...”
এখানেই শেষ নয়। শাহিদের দাবি, বাবাকে যে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড দেওয়া হচ্ছিল, সেটিও ঘুরিয়ে নেওয়া হয় লতা মঙ্গেশকরের দিকে। অথচ রফি সাহেব বিষয়টি নিয়ে কোনও বিরোধে না গিয়ে চুপচাপ সরে দাঁড়িয়েছিলেন। তবে শাহিদ একেবারে উড়িয়ে দেন বাবাকে নিয়ে তৈরি হওয়া গুজব। সাতের দশকে রফি নাকি কাজ পাচ্ছিলেন না—এই কথাকে তিনি “অসত্য” বলে কটাক্ষ করেছেন। তাঁর দাবি, সেই সময়েও বাবার অসংখ্য সুপারহিট গান রয়েছে, যা আজও সঙ্গীতপ্রেমীরা গুনগুন করেন।
মহম্মদ রফির জীবন যেন এক অনন্ত সঙ্গীতেগাঁথা। ৭,০০০-রও বেশি গান, অসংখ্য ভাষায় অমর সৃষ্টি, এবং এক উত্তরাধিকার যা আজও সমান জনপ্রিয়। কিন্তু তাঁর পুত্রের এই বিস্ফোরক অভিযোগ যেন নতুন করে তুলে দিল কিংবদন্তির জীবনের অজানা অধ্যায়—সুরের আড়ালে লুকিয়ে থাকা হিংসা, প্রতিদ্বন্দ্বিতা আর অশান্ত সম্পর্কের কাহিনি।
