কুণাল ঘোষ। তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র। বঙ্গরাজনীতির অন্যতম বর্ণিল ব্যক্তিত্বও বটে। তাঁর জীবনে ঘটনার ঘনঘটা। বিতর্ক সর্বক্ষণের সঙ্গী। এহেন মানুষকে কেন্দ্র যদি জীবনীচিত্র তৈরি হয়, নিজের ভূমিকায় কাকে দেখতে চাইবেন তিনি? প্রশ্ন রেখেছিল আজকাল ডট ইন। উত্তরে কুণাল স্পষ্ট জানিয়েছিলেন, তাঁর ইচ্ছা, অভিনেতা রাহুল অরুণোদয় বন্দ্যোপাধ্যায় যেন বড়পর্দায় জীবন্ত করে তোলেন তাঁর চরিত্রকে। তৃণমূল নেতা বলেন, “ওর (রাহুল) অভিনয় আমার খুবই পছন্দ। আমার বায়োপিক তৈরি হলে ও যদি, আমার চরিত্রে অভিনয় করে, আমার খুব ভাল লাগবে।”

কুণালের এহেন মন্তব্যে যারপরনাই আনন্দিত রাহুল। বাস্তবে দু’জনের রাজনৈতিক মতাদর্শের আকাশ–পাতাল ফারাক হলেও, তৃণমূল নেতার চরিত্র বড়পর্দায় ফুটিয়ে তুলতে কোনও আপত্তিই নেই বলেই জানিয়েছেন অভিনেতা। আজকাল ডট ইন-কে রাহুল বলেন, “শিল্পী হিসাবে আমার কাছে অত্যন্ত সম্মানের। আপনাদের কাছ থেকে বিষয়টি শুনে আমার দিনটা ভাল হয়ে গেল।”

কুণালের জীবনের নানা অধ্যায় সম্পর্কে যথেষ্ট অবগত রাহুল। বাংলার রাজনীতির মঞ্চে কুণালের মতো চরিত্র সত্যিই বিরল—সেই কথাও স্বীকার করেছেন অভিনেতা। তাঁর কথায়, “ওঁর একটা বৈচিত্রময় জীবন আছে। একটা দীর্ঘ সফল সাংবাদিক জীবনও আছে। তিনি যে এত গুণী অভিনেতা থাকা সত্ত্বেও আমাকে বেছে নিয়েছেন, এটা শুনেই আমার দিনটা ভাল হয়ে গেল।”

খ্যাতির পাশাপাশি একের পর এক বিতর্কও ঘিরে থেকেছে কুণালকে। কখনও বিরোধী শিবিরের নেতাকে নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য, কখনও বা অভিনয়ে হাতেখড়ির খবর—সব সময়ই তিনি থেকেছেন শিরোনামে। এমন বহুমাত্রিক ব্যক্তিত্বকে পর্দায় রূপ দেওয়া কি একজন অভিনেতার কাছে চ্যালেঞ্জিং? বা কোথাও কোনও ঝুঁকি বা সমস্যা আছে বলে মনে হয়? রাহুলের সহজ উত্তর, “একেবারেই সমস্যার নয়। তা হলে একজন অভিনেতা দিল্লি ক্রাইমস নামক সিরিজের প্রথম সিজনে নির্ভয়ার ধর্ষকের ভূমিকায় অভিনয় করতে পারলে, কুণালদা তো অতি সফল একজন সাংবাদিক এবং রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। আমার কাছে তাঁর চরিত্রে অভিনয় করা একেবারেই সমস্যাজনক নয়। বেন কিংসলেকে যে গান্ধীজির মতো হতেই হবে, এমন কোনও কথা নেই। তাই কুণালদার চরিত্রে অভিনয় করতে পারলেও আমার খুবই ভাল লাগবে।”

রাজনৈতিক মতাদর্শ আলাদা হলেও কুণালের আহ্বানে সাড়া দিতে দ্বিধা করেননি রাহুল। তাঁর শিল্পীসত্তা বরং তাগিদ দেয়, কুণালের মতো এক বর্ণময় ব্যক্তিত্বকে পর্দায় নতুন করে জীবন্ত করে তুলতে। তবে এ কেবল সম্ভাবনার ইঙ্গিত—আসলে এমনটা আদৌ ঘটবে কি না, তার জবাব দেবে সময়ই।