ছিলেন বলিউডের এক সময়ের সেরার শিরোপা পাওয়া গায়ক। আজও অসংখ্য শ্রোতার প্রিয় কণ্ঠশিল্পী তিনি, কুমার শানু। চার দশকের বেশি সময় ধরে গানে গানে তিনি জয় করেছেন শ্রোতাদের মন। কিন্তু এবার সেই নামই উঠে এল শিরোনামে, তাও একেবারে ভিন্ন কারণে— প্রাক্তন স্ত্রী রীতা ভট্টাচার্যের বিস্ফোরক অভিযোগ আর পাল্টা শানুর আইনি পদক্ষেপকে ঘিরে।
সম্প্রতি, এক সাক্ষাৎকারে রীতা জানিয়েছেন, তৃতীয় সন্তান যখন তাঁর গর্ভে তখন নাকি শানুর তরফে তিনি ন্যূনতম খাবার ও চিকিৎসা থেকেও বঞ্চিত হন। তাঁর দাবি—
“আমার ছেলেদের দুধ দিতে দেননি, ডাক্তার ডাকার অনুমতিও ছিল না। দুধবিক্রেতাকে বারণ করা হয়েছিল, কিন্তু তবুও তিনি দুধ দিতেন। ডাক্তার যিনি আমাদের তিন সন্তানকে জন্ম দিয়েছিলেন, তিনিও মানবিকতার খাতিরে আমার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন।”
রীতার দাবি, বিবাহবিচ্ছেদের সময় তিনি হাতে পান মাত্র ১০০ টাকা। সংসার চালাতে বাধ্য হয়ে বিক্রি করতে হয় নিজের গয়না। অভিযোগ এখানেই শেষ নয়— ২০০৫ সালের মুম্বই বন্যায় ছেলেরা হারিয়ে গেলে, শানু নাকি একবারও খবর নেননি। “আমি সারারাত খুঁজেছি, আতঙ্কে কেটেছে সময়। কিন্তু ওঁর কোনও উদ্বেগ ছিল না,” দাবি রীতার।
প্রাক্তন স্ত্রীয়ের এইসব অভিযোগের পর আইনি পাল্টাঘাত করলেন শানু!রীতার অভিযোগের এই ঝড়ের পরই আর চুপ করে থাকেননি কুমার শানু। তাঁর আইনজীবী সানা রইস খানের কড়া বক্তব্য—
“৪০ বছরেরও বেশি সময় ধরে গানের মাধ্যমে কোটি কোটি মানুষকে আনন্দ দিয়েছেন শানু। কিছু মিথ্যা অভিযোগ হয়তো ক্ষণিকের হইচই তুলতে পারে, কিন্তু তা কোনওদিন তাঁর মর্যাদা, কাজ মুছে দিতে পারবে না। পরিবারের সম্মান রক্ষায় আমরা আইনের সমস্ত শক্তি প্রয়োগ করব।”
প্রসঙ্গত, ১৯৮০ সালে কুমার শানু ও রীতা ভট্টাচার্যের বিয়ে। কিন্তু অশান্তি আর ভাঙন ডেকে আনে ১৯৯৪ সালের বিবাহবিচ্ছেদ। সেই সময় শানুর সঙ্গে অভিনেত্রী কুনিক্কা সদানন্দের নাম জড়িয়েছিল। পরবর্তীতে ২০০১ সালে সলোনি ভট্টাচার্যকে বিয়ে করেন গায়ক। বর্তমানে তাঁদের দুই কন্যা রয়েছে।
সুরের জগতে যিনি 'হিট মেশিন', ব্যক্তিগত জীবনে তিনি আজ বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে। একদিকে প্রাক্তন স্ত্রীর করুণ অথচ বিস্ফোরক অভিযোগ, অন্যদিকে আইনের শক্ত হাতে গায়কের পাল্টা পদক্ষেপ— এই টানাপোড়েন ঘিরে বলিউড মহল এখন সরগরম। কুমার শানুর গানের মতোই তাঁর ব্যক্তিগত জীবনের এই কাহিনি আপাতত একেবারেই 'আনপুটডাউনেবল'!
