বলিউডে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা লিঙ্গভিত্তিক পারিশ্রমিক বৈষম্য নিয়ে মুখ খুললেন অভিনেত্রী কৃতি স্যানন। সম্প্রতি, এক অনুষ্ঠানে তিনি স্পষ্ট ভাষায় জানান, কাজ যদি একই হয়, তবে নারী–পুরুষ অভিনেতাদের পারিশ্রমিক কেন ভিন্ন হবে তা তিনি কোনওভাবেই বুঝতে পারেন না।

“পুরুষ–নারীর মধ্যে পারিশ্রমিকের ব্যবধান অযৌক্তিক” মন্তব্য কৃতির। তাঁর কথায়—“অন্য সব ইন্ডাস্ট্রির দিকে তাকালে দেখতে পাই এমন পার্থক্য নেই। তবে সিনেমায় কেন নারী–পুরুষ আলাদা পারিশ্রমিক পাবেন? কাজ তো একই। এই নিয়ে আমরা বহু বছর ধরে কথা বলছি। কিন্তু সত্যি বলতে কী, এর কষ্টটা আমরা, অর্থাৎ মহিলা অভিনেতারাই সবচেয়ে বেশি অনুভব করি।”
নারী-নেতৃত্বাধীন ছবিতে বাজেটের বৈষম্য নিয়েও মুখ খুললেন এই বলি-অভিনেত্রী। কৃতি আরও বলেন—“যদি ছবির মুখ্য চরিত্র নারী হয়, তবে সেই ছবি কখনওই পুরুষ–নেতৃত্বাধীন ছবির মতো বাজেট পায় না। প্রযোজকরা ভয় পান, ছবিটি নাকি তেমন ব্যবসা করবে না। এর ফলে আবার যুক্তি দাঁড় করানো হয়—‘ছবির বাজেট কম, তাই অভিনেত্রীর পারিশ্রমিকও কম’। এভাবে এক চক্রের ভেতরে আটকে যায় সব।”
তবে বদলের হাওয়া কিন্তু ইন্ডাস্ট্রির মধ্যে বওয়া শুরু হয়েছে, এও জানালেন কৃতি। তাই তিনি আশা প্রকাশ করেছেন, ধীরে ধীরে হলেও পরিস্থিতি বদলাচ্ছে। আজকাল কনটেন্ট–ভিত্তিক ছবিই আসল আকর্ষণ হয়ে উঠছে, চরিত্রের লিঙ্গ যাই হোক না কেন।
কৃতি উদাহরণ টেনে আনেন তাঁরই অভিনীত ২০২৪ সালের হিট ফিল্ম ‘ক্রু’–এর। তাবু ও করিনা কাপুর–এর সঙ্গে কৃতি ছিলেন এই ছবিতে। এই নারী–নেতৃত্বাধীন ছবিটি বিশ্বজুড়ে প্রায় ১৫৭ কোটি টাকা আয় করে। বলিউডে গত বছরের অন্যতম বড় বক্স অফিস হিট হয়ে ওঠে ছবিটি। কৃতির মতে, এমন বড় বাজেটের, বিনোদনমূলক নারী–কেন্দ্রিক ছবি আরও বেশি করে তৈরি হওয়া উচিত, যাতে প্রযোজকেরা বুঝতে পারেন গল্পই আসল, নায়ক–নায়িকা নয়।
কৃতি এখন একাধিক বড় প্রজেক্ট নিয়ে ব্যস্ত। খুব শিগগিরই তাঁকে দেখা যাবে ধনুষের বিপরীতে আনন্দ এল রাই পরিচালিত ‘তেরে ইশ্ক মেঁ’ ছবিতে। এরপর আসছে হোমি আদাজানিয়া পরিচালিত ‘ককটেল ২’ যেখানে কৃতির সঙ্গে থাকবেন শাহিদ কাপুর ও রশ্মিকা মন্দানা।
বলিউডে নারী–পুরুষের সমান পারিশ্রমিকের দাবি নতুন নয়, কিন্তু কৃতির মতো তারকারা সরাসরি এ নিয়ে কথা বলায় আবারও আলোচনায় উঠে এলো এই পুরনো ক্ষত।
