বাংলা ছবির জগতে পরিচিত মুখ ঈশান মজুমদার। রহস্য থেকে প্রেমের গল্পে অভিনয় করে দর্শকের নজর কেড়েছেন তিনি। শুধু অভিনয়েই নয়, সাহিত্য জগতেও নিজের পরিচিতি গড়ে তুলেছেন ঈশান। বইমেলায় প্রকাশিত হয়েছে তাঁর লেখা দুটি বই। ‘গোয়েন্দা গোগো ও ঘোঁতনপুরের ভূত’ এবং ‘মদনপুরের মামদো ভূতেরা ও কাউন্ট ড্রাকুলা’। এদিন রবিবার, সমাজমাধ্যমে নিজের একটি ছবি পোস্ট করেছেন অভিনেতা। এটি যে আসন্ন নতুন ছবির তাঁর অভিনীত চরিত্র, সেকথা ছবির সঙ্গে ক্যাপশন থেকেই স্পষ্ট।
ঈশান লিখেছেন, “কিছু চরিত্র শুধু আসা যাওয়ার মাঝেই সীমাবদ্ধ থাকে না। তারা একটা ছাপ রেখে যায়। এই যে চরিত্রটি আমার হৃদয়ের ভীষণ কাছের হয়ে থাকবে। এটি এমন একটি চরিত্র যা শুধু চ্যালেঞ্জিং-ই ছিল না। বলা ভাল, আমাকে আমূল বদলে ফেলেছিল, আমাকে ক্রমাগত তাতিয়ে গিয়েছে অভিনেতা হিসেবে উন্নত পর্যায় পৌঁছনোর ব্যাপারেও। ধীরে ধীরে আরও বলব এই বিষয়ে..কিন্তু আজ এটুকুই থাক।”

এই ছবি প্রসঙ্গে আজকাল ডট ইন-কে ঈশান বললেন, “এই ছবিটা আমার আগামী সিনেমা ‘পিঞ্জর’-এর। মাল্টিলিঙ্গুয়াল ছবি। বাংলা-হিন্দি দু'ভাষাতেই তৈরি করা হয়েছে। সেই ছবিতে আমার অভিনীত চরিত্রটির নাম ইকবাল। সমাজের অর্থনৈতিক কাঠামোর একেবারে প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষ সে। পাখি ধরে বেড়ানো এবং তা হাটে-বাজারে বিক্রি করা তার পেশা। অভাবের তাড়নায় আইনি-বেআইনি সবরকম পাখি সে ধরে এবং বিক্রি করে। বিহারে এক মুসলিম পরিবারে জন্ম হলেও অনেক স্বপ্ন নিয়ে কলকাতায় আসে ইকবাল। কিন্তু অভাবের জালে সে আটকে পড়ে। পিঞ্জর কিন্তু শুধু ইকবালের গল্প বলে না। সে গল্প বলে সমাজের আরও দুই স্তরের মানুষের। এই মানুষেরা কীভাবে মুখোমুখি হয় পরস্পরের এবং তাদের জীবন বাঁক নেয়, তাদের জীবনের বৃত্ত সম্পূর্ণ হয়, সেই মুক্তির, সেই উত্তরণের গল্পই বলে পিঞ্জর।”

'পিঞ্জর' গল্প বলে এমন এক জগতের যেখানে দারিদ্র্য, স্বপ্ন আর মুক্তির টানাপোড়েন মিশে গেছে এক অনন্য মানবিক বয়ানে। এ বিষয়ে অভিনেতা আরও বলেন, “ছবির নাম থেকেই স্পষ্ট রূপক অর্থে তা ব্যবহৃত হয়েছে আমাদের মানুষের জীবনে। আসলে, আমরা যে কাজ-ই করি না কেন, যে সমাজের যে স্তরেই বসবাস করি না কেন প্রায় প্রত্যেকেই হয়ত একটা অদৃশ্য খাঁচার মধ্যে আটকে আছে। কেউ ছটফট করছে কেউ বা মানিয়ে নিয়েছে নিরুপায় হয়। এই ছবি বলে মুক্তির কথা। এটুকু বলতে পারি আমরা সবাই মিলে, একটু অন্য রকম কিছু করার চেষ্টা করেছি।" কথা শেষে অভিনেতার সংযোজন, " পিঞ্জর বার্তা দেয়, স্বপ্ন দেখা না ছাড়ার, হাল না ছেড়ে দেওয়ার।”
ছবির পরিচালক ডঃ রুদ্রজিৎ রায়। পেশায় পুরোদস্তুর চিকিৎসক হলেও ছবি তৈরি নিয়ে তাঁর অদম্য উৎসাহ। এর আগে একাধিক ছোট ছবি তৈরি করলেও এটিই তাঁর প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র। ছবিতে ঈশান ছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় দেখা যাবে মমতাশঙ্কর, জয় সেনগুপ্ত, শতাক্ষী নন্দীর মতো টলিপাড়ার জনপ্রিয় ব্যক্তিত্বদের।
