সংবাদ সংস্থা মুম্বই: বলিউডে গুঞ্জন ছিল অনেকদিন—অক্ষয় কুমারই নাকি অভিনেত্রী আসিনের ফিল্মি কেরিয়ার ‘শেষ’ করে দিয়েছেন। এবার অসিনের স্বামী তথা একটি বহুজাতিক বিপণন সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা রাহুল শর্মা মুখ খুললেন এ বিষয়ে। এবং সেই গুঞ্জনে দিয়েছেন সিলমোহর!  এক খোলামেলা সাক্ষাৎকারে রাহুল জানালেন কীভাবে শুরু হয়েছিল আসিনের সঙ্গে তাঁর প্রেম, কোথায় প্রথম দেখা এবং তাঁদের মধ্যে অক্ষয় কুমারের নিপুণ ম্যাচমেকিং-এর আসল গল্পটা।

 


রাহুলের কথায়, “২০১২-র ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ দেখতে যাচ্ছিলাম বাংলাদেশের ঢাকায়। তখন অক্ষয়ের ‘হাউসফুল ২’ মুক্তির অপেক্ষায় আর অসিন ছিল সেই ছবির অভিনেত্রী। অক্ষয় বললেন, ‘ছবির প্রচার করতে ওই ম্যাচে যাব।’ মাইক্রোম্যাক্স তখন সেবারের এশিয়া কাপের স্পনসর ছিল, খেলা হচ্ছিল ঢাকা, বাংলাদেশে। তাই কেউ জিজ্ঞেস করলে বলি—আমি আমার স্ত্রীকে পৃথিবীর সবচেয়ে রোম্যান্টিক জায়গা ‘ঢাকায়’ প্রথমবার দেখেছি!”

 

 

তবে প্রথম দেখায় খুব একটা কথাবার্তা হয়নি অসিন এবং রাহুলের মধ্যে। শুধু ওই ‘হাই-হ্যালো’ পর্যন্তই কথা এগিয়েছিল। রাহুলের কথায় – “বরং অক্ষয়ই বলেছিলেন, ‘তোমাদের দু’জনের মানসিকতা এক।’ অক্ষয় এও জানিয়েছিলেন, তারকা হওয়া সত্বেও আসিন খুবই সাধারণ মানসিকতারএকজন মেয়ে। কাজ করে, চুপচাপ চলে যায়। পেশাদার। তার মা ডাক্তার, বাবা সরকারি চাকুরে। ওর আর তোমার মানসিকতা, ব্যাকগ্রাউন্ড—সবই মিলে যায়। তারপর অক্ষয় আমার ফোন নম্বর ওকে দেয়, আর ওর নম্বর আমায় দেয়।”

 

 

অক্ষয় বুঝতে পেরেছিলেন, এই দুই মানুষ একসঙ্গে দারুণভাবে মানিয়ে যাবে। শুধু বুঝেই থেমে থাকেননি—তাঁদের জীবনের মোড় ঘুরিয়েই দিয়েছেন! ২০১৬ সালে এক সাক্ষাৎকারে অক্ষয় নিজেই বলেছিলেন তাঁর ম্যাচমেকিং কাহিনি, “তিন-সাড়ে তিন বছর ধরে লুকিয়ে রেখেছিলাম। হ্যাঁ, ওদের আমি মেলাই... আর জ্যাকলিন ফার্নান্ডেজও ছিল... যদিও ও বুঝতেই পারেনি কারণ আমি খুব চালাকি করে করেছিলাম সব।” অক্ষয় আরও যোগ করেন, “তখন আমরা দিল্লিতে ‘হাউসফুল ২’-এর শ্যুটিং করছিলাম। বিশ্বাস করবেন না, আমরা লুকোচুরি খেলছিলাম, আর আমি ওদের দু’জনকে এক কাপবোর্ডে লুকোতে বলি। সেখান থেকেই শুরু!” 

 

২০১৬ সালে বিয়ে করেন রাহুল ও অসিন। তাঁদের একমাত্র কন্যা আরিনের বয়স এখন সাত বছর। বিয়ের পর অভিনয়কে বিদায় জানিয়েছেন অসিন। ফিল্মি কেরিয়ার শেষ করেছেন সেই মুহূর্তেই। তাঁর শেষ ছবি ছিল উমেশ শুক্লার পরিচালনায় ‘অল ইজ ওয়েল’ (২০১৫)।

 


সাক্ষাৎকার শেষে রাহুল শর্মা অকপটে বলেন, “আমার জীবনে অক্ষয়ের সবচেয়ে বড় কন্ট্রিবিউশন—ওই ম্যাচমেকিং!” অক্ষয় কুমার এখন ব্যস্ত ‘হাউসফুল ৫’, ‘স্কাই ফোর্স’, ‘ভূত বাংলা’, ‘ওয়েলকাম টু দ্য জঙ্গল’ এবং আরও একটি ছবির শ্যুটিংয়ে, যেখানে আছেন আর মাধবন ও অনন্যা পাণ্ডেও।

 

একটা সিনেমা, একটা ক্রিকেট ম্যাচ, একটাই ফোন নম্বর—আর সেই এক চালাকি চালেই বলিউডের এক অসম্ভব সুন্দর প্রেমকাহিনির জন্ম দিয়েছিলেন অক্ষয় কুমার!