গ্ল্যামার বনাম গল্প-বলিউডে এই টানাপোড়েন নতুন নয়। কিন্তু গোয়ায় ৫৬তম গোয়ায় আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের এক অনুষ্ঠানের মঞ্চে দাঁড়িয়ে পরিচালক বিধু বিনোদ চোপড়া যেভাবে সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সারদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন, সে দৃশ্য দেখে চমকে উঠল নেটপাড়া। তাঁর স্পষ্ট অভিযোগ, “এই যে হাজার হাজার ফলোয়ারওয়ালা ইনফ্লুয়েন্সাররা, এরা এত বিখ্যাত হয়ে গেল কীভাবে? কে বানাল এদের?”

 

গোয়ায় ৫৬তম আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের এক অনুষ্ঠানে হাজির হয়েছিলেন ‘টুয়েলভথ্ ফেল’-এর পরিচালক। সেখানেই সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সাদের এর সম্পর্কে এমন দাবি করে বসেন বিধু। দিনের আলোয় ব্র্যান্ড-পেইড ভিডিও, রিভিউয়ের নামে মোটা পারিশ্রমিক, আর অ্যালগরিদম-কেন্দ্রিক জনপ্রিয়তা-সবকিছুকেই আক্রমণ করলেন বিধু বিনোদ চোপড়া। তাঁর কথায়, “আজকের দিনে ব্র্যান্ডই নির্ধারণ করে কে বড় তারকা, আর ইন্ডাস্ট্রিও সেই হাওয়ায় ভাসছে। সিনেমার আসল কারিগররা কোথায় হারিয়ে গেল?”সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সারদের উত্থান, ব্র্যান্ড–নির্ভর ‘ইন্টারনেট স্টারডম’ এবং সেই পুরো ইকোসিস্টেমের বিরুদ্ধে তাঁর আক্রমণ ছিল নিখুঁত, তীক্ষ্ণ এবং প্রশ্নবিদ্ধ বাস্তবতার সামনে আয়না ধরার মতো। এবং রেগেমেগে দিলেন গালিও!

 

চোপড়া স্পষ্ট ভাষায় বলেন, “এদের কী বলব? একদম ফালতু । ইন্টারনেটে দাঁড়িয়ে দু’টো পোজ দিলেই কেউ ৫ মিলিয়ন, কেউ ১০ মিলিয়ন, কেউ ২০ মিলিয়ন ফলোয়ার! তারপর এরা ভাবে ওরাই কিংবদন্তি !” এরপরই আরও কড়া আঘাত-“ব্র্যান্ড এসে বলে, এই নাও আমাদের প্রোডাক্ট বেচো। ইনফ্লুয়েন্সারও দাঁড়িয়ে বলে, ‘এই টিফিন কিনে নাও, যা খুশি কিনে নাও।’ কী চলছেটা কী এসব বলুন তো?”*

 

চোপড়ার মতে, এই ‘ইন্টারনেট স্টারডম’-ই আজ সিনেমাকে সবচেয়ে বেশি আঘাত করছে। শিল্পের জায়গা দখল করছে অ্যালগরিদম, গল্পের জায়গা দখল করছে গ্ল্যামার। তাঁর সতর্কবার্তা, “জীবনে তুমি কী হতে চাও-একটা ভ্যানিটি-চালিত ইনফ্লুয়েন্সার, না সত্যিকারের সুখ–তৃপ্তির খোঁজে থাকা একজন শিল্পী? এটা তোমাকেই বেছে নিতে হবে।”

 

গোয়ায় আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের এই বিস্ফোরক সেশনের পর সোশ্যাল মিডিয়ায় বিধু বিনোদ চোপড়ার মন্তব্য ঝড় তুলেছে। সমর্থন–নিন্দা দু’দিক থেকেই প্রতিক্রিয়া আসছে। তবে একটাই সত্য- দর্শক থেকে তারকা, সবাই এখন নতুন করে ভাবছেন, সিনেমার আসল নায়ক কি গল্প, নাকি গ্ল্যামার-চালিত এই সোশ্যাল মিডিয়ার জনপ্রিয়তা?