বলিউডের বরেণ্য অভিনেতা মনোজ বাজপেয়ী শুধু অভিনয়ে নয়, বাস্তব কথাতেও বরাবরই সোজাসাপটা। সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে মনোজ বাজপেয়ী এমন কিছু অকপট স্বীকারোক্তি করেছেন, যা শুধু নতুন প্রজন্মের অভিনেতাদের জন্য নয়, বরং অভিনয়কে যারা সত্যিকারের শিল্প হিসেবে দেখে, তাদের সবার জন্যই অনুপ্রেরণা হয়ে দাঁড়ায়।

 

অভিনয়ের প্যাশন না থাকলে ভুলে যাও গ্ল্যামার - খুল্লাম খুল্লা মনোজ। ওই অনুষ্ঠানে তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, নতুন প্রজন্মের অভিনেতাদের তিনি কী পরামর্শ দেবেন— যারা তাঁকে আইডল মানে, এবং স্বপ্ন দেখে ‘আগামী মনোজ বাজপেয়ী’ হওয়ার। উত্তরে তিনি বিন্দুমাত্র ভণিতা না করে বললেন,

 

“আমি ১০ বছর বয়স থেকেই অভিনয় নিয়ে পাগল ছিলাম। আজও সেই উন্মাদনা একফোঁটা কমেনি। আমি কাউকে কোনও ‘জ্ঞান’ দিতে চাই না। কারণ সেটা কেউ নিতেও চায় না।  তবে এটুকুই বলব— যদি শুধু নাম, টাকা, সুন্দর বাড়ি, দামি গাড়ি আর বিদেশ ভ্রমণের লোভে অভিনয় করতে চাও, তবে ভেবেচিন্তে এস। কারণ এই ইন্ডাস্ট্রিতে ওই সুযোগ খুবই সীমিত।”

 

 

তিনি আরও যোগ করলেন—“আজও আমার মনে হয়, প্রতিটা দুর্দান্ত চরিত্র যেন কেবল আমার কাছেই আসে, অন্য কারও কাছে না যায়। ভাল অভিনয়ের প্রতি, ভাল কাজের জন্য এই লোভ, এই খিদে টিকিয়ে রেখেছে আমাকে। অভিনয় ছাড়া আমি হয়তো বাঁচতেই পারব না। তাই যদি সত্যিই মনে হয় অভিনয় ছাড়া তুমি বাঁচতে পারবে না, তখনই অভিনয় করতে এসো।”

 

ওটিটি প্ল্যাটফর্ম-ই আজকের প্রতিভাদের ভরসার জায়গা, মনে করেন মনোজ। শুধু অভিনয়ের আবেগ নয়, বর্তমান মাধ্যম নিয়েও তিনি খোলাখুলি কথা বলেন। দ্য ফ্যামিলি ম্যান খ্যাত এই অভিনেতার  মতে, ওটিটি আসার ফলে আজকের প্রজন্মের অভিনেতাদের কাজ করার পরিসর বহুগুণ বেড়েছে। বললেন, “নতুন প্রজন্ম আজ দারুণ দারুণ প্রজেক্ট পাচ্ছে। সম্মান পাচ্ছে, টাকাপয়সা পাচ্ছে, নিজের মতো কাজ বেছে নেওয়ার স্বাধীনতাও পাচ্ছে। এত প্রতিভাকে একমাত্র ওটিটি-ই ধারণ করতে পারে।” তাঁর মতে, ওটিটি শুধু দর্শকের ছবি-সিরিজ দেখার পছন্দ-অভ্যাসই বদলায়নি, অভিনেতাদের জীবনযাত্রাকেও পালটে দিয়েছে। আগে যেখানে একটা নির্দিষ্ট সংখ্যক তারকাই সুযোগ পেতেন, এখন সেই জায়গায় জায়গা হয়েছে অসংখ্য প্রতিভার।

 

তাঁর শেষকথা — প্যাশন থাকলে পথও আছে। আলোচনার একেবারে শেষদিকে বাজপেয়ীর সংক্ষিপ্ত অথচ তীব্র বার্তা— “যদি অভিনয় করতে না পারলে মনে হয় মরেই যাবে, তবে এসো। কারণ সত্যিকারের শিল্পী নিজের মাধ্যমের সঙ্গেই শান্তি খুঁজে নেয়। আর যদি আবেগটা থাকে, পথ অবশ্যই খুলবে।”