সংবাদ সংস্থা মুম্বই: বান্দ্রার এক বিলাসবহুল বহুতলের ১২ তলায় থাকেন সইফ। সেখানেই বুধবার গভীর রাতে হামলা চালায় দুষ্কৃতী। তাদের সঙ্গে হাতাহাতি বাধে বলি-তারকার। সেই সময় সইফের হাতে, ঘাড়ে, মেরুদণ্ডে ছুরি দিয়ে কোপানো হয়েছে, এমনই জানা গিয়েছে। পুলিশের দাবি, সইফকে একাধিকবার কোপায় দুষ্কৃতী। তার পর সে পালায়। অভিনেতার শরীরে ছ’টি ক্ষত রয়েছে। দুষ্কৃতী পালিয়ে যাওয়ার পর মুম্বইয়ের লীলাবতী হাসপাতালে দ্রুত নিয়ে যাওয়া হয় সইফকে। এইমুহূর্তে সেখানেই চিকিৎসাধীন তিনি। শুরু হয়েছে জোর পুলিশি তদন্ত। এইমুহূর্তে সইফ-করিনার আবাসনে পৌঁছে গিয়েছে মুম্বই পুলিশের অপরাধ দমন শাখার সদস্যরা। এনকাউন্টার বিশেষজ্ঞ দয়া নায়েককে দেখা গিয়েছে সইফের বাড়ির নীচে। পুলিশের ডগ স্কোয়াডের স্নিফার ডগ-দেরও একটি টিম পৌঁছে গিয়েছে। রয়েছে ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরাও।
বলি-তারকার আবাসনের নীচে দয়া নায়েককে দেখামাত্রই শুরু হয়েছে ফিসফাস। গোটা মুম্বইয়ে তিনি বিখ্যাত কিংবা কুখ্যাত এনকাউন্টার বিশেষজ্ঞ হিসাবে। এখনও পর্যন্ত ৮৬জন দুষ্কৃতীর এনকাউন্টার করেছেন তিনি! ১৯৯৫ সালের ব্যাচের অফিসার দয়া নায়েক। মহারাষ্ট্রের অ্যান্টি-টেরর স্কোয়াডের অন্যতম আধিকারিক হিসাবেও একসময় দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। ১৯৯৬ মুম্বইয়ের কুখ্যাত গ্যাংস্টার সালে ছোটা রাজনের দলের দু'জন দুষ্কৃতীর এনকাউন্টার করার সুবাদে খবরের শিরোনামে উঠে আসেন দয়া। জানা গিয়েছিল ওই দুষ্কৃতী দু'জন দয়ার উদ্দেশ্যে গুলি চালানোর চেষ্টা করতেই আর দেরি করেননি দয়া। রাতারাতি দেশবাসীর কাছে পরিচিত নাম হয়ে ওঠেন দয়া নায়েক।
কর্ণাটকের এক নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম দয়ার। ছোট থেকে বড় হয়ে ওঠার সময় বহু জীবন সংগ্রামের সাক্ষী ছিলেন তিনি। ১৯৭৯ সালে মুম্বইয়ে আসার পর পেট চালাতে এক রেস্তরাঁয় টেবিল পরিষ্কার করার কাজ-ও করেছিলেন তিনি! দিন কয়েকের মধ্যে রেস্তরাঁ মালিকের চোখে পড়ে যান তিনি। দয়ার মধ্যে বড় কিছুর সম্ভাবনা দেখতে পেয়ে তাঁর পড়াশোনার খরচ নিজের কাঁধে তুলে নেন তিনি। এরপর সিনেমার গল্পের মতো উত্থান দয়ার। পুলিশের পরীক্ষায় পাশ করার পর ১৯৯৫ সালে জুহুতে পোস্টিং হয় তাঁর। সেখানেও নিজের সিনিয়রদের প্রিয়পাত্র হয়ে উঠতে বেশি সময় লাগেনি তাঁর। নেপথ্যে ছিল তাঁর ব্যক্তিত্ব এবং এনকাউন্টার করার স্টাইল। তবে কেরিয়ারে অজস্রবার বিতর্কেও জড়িয়েছেন তিনি। পড়েছেন অ্যান্টি-করাপশন ব্যুরোর প্রশ্নের। তবুও তাঁকে নিয়ে আগ্রহ, উন্মাদনা কমেনি মুম্বইবাসীর। এবার সইফ-হামলার তদন্তে দয়াকে দেখে প্রশ্ন উঠেছে, তবে কি দুষ্কৃতীকে দেখতে পেলেই 'শুট অ্যাট সাইট'-এর নির্দেশ ইতিমধ্যেই দিয়ে দেওয়া হয়ে গিয়েছে? এবং সেই দায়িত্ব বর্তিয়েছে নকাউন্টার বিশেষজ্ঞ দয়া নায়েকের উপর?
