সিনেমার জগতে কিছু দৃশ্য শুধু গল্প নয়, অভিনেতাদের মানসিক জগতকেও নাড়িয়ে দেয় আর ‘ধুরন্ধর’-এর একটি দৃশ্য তার হাতেগরম প্রমাণ। ছবিতে হামজার চরিত্রে রণবীর সিংয়ের বিপরীতে ‘লুল্লি’ চরিত্রে অভিনয় করা নাসিম সম্প্রতি জানিয়েছেন, ছবির শুরুর দিকের এক তীব্র ও স্পর্শকাতর দৃশ্য করতে তিনি প্রথমে একরকম রাজি-ই ছিলেন না। কী সেই দৃশ্য? রণবীরের গোপনাঙ্গ চেপে ধরে যৌনসুখ উপভোগ করার আনন্দে চোখেমুখে লালসা ফুটে উঠবে তাঁর! ছবির চিত্রনাট্য পড়েই তাঁর মনে হয়েছিল, এতটাই আবেগঘন ও জটিল মুহূর্তে রণবীরের মতো তারকার সামনে অভিনয় করা মোটেও সহজ হবে না।

 

দৃশ্যটি শুধু সাহসী নয়, ‘ধুরন্ধর’-এর আবেগ ও গল্পের গতিপথকে রীতিমতো নির্ধারণ করে। সেই জায়গাটাই নাসিমকে ভয় পাইয়ে দিয়েছিল। তবে শুটিংয়ের আগে যা ঘটল, তা যেন তাঁর জীবনের বড় অভিজ্ঞতা হয়ে রইল। রণবীর নিজে ফোন করে কথা বলেন তাঁর সঙ্গে। নাসিমের কথায়, রণবীর কখনওই নিজেকে তারকা হিসেবে তুলে ধরেন না শুটিং সেটে বরং পাশে দাঁড়ানো এক বন্ধুর মতোই আলাপ, অনুপ্রেরণা আর উষ্ণতায় ভরিয়ে দিয়েছিলেন তাঁকে। আলাদা করে ডেকে নিশ্চিন্ত করেছিলেন। শটটি কীভাবে করা গেলে ভাল হবে, তা নিয়েও আলোচনা করেছিলেন নাসিমের সঙ্গে। এরপর সেটে এসে তাঁকে জড়িয়ে ধরা থেকে বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ আর যেভাবে নিরন্তর উৎসাহ দিয়ে গিয়েছিলেন রণবীর, তাতেই নিজের প্রতি ভরসা ফিরে পেয়েছিলেন নাসিম।

 

এই ধুরন্ধর অভিনেতা আরও জানান, শুটিংয়ের সময়ও রণবীর ছিলেন তাঁর মানসিক ভরসা। কখনও চরিত্রের বাইরে চলে গেলে তিনি নিজে থেকে বুঝিয়ে দিয়ে দেখিয়েছেন। ওই বিশেষ দৃশ্যটি দু’বার শুট করা হয়। প্রথমবার নাসিমের অভিনয়ে চরিত্রটি অতিরিক্ত নিষ্ঠুর মনে হওয়ায় দ্বিতীয়বার সেই মাত্রা সামলে নেওয়া হয়।  

 

স্ক্রিনে সময় যতই কম হোক, লুল্লির চরিত্র ছবি জুড়ে গুরুত্বপূর্ণ এক সংযোগের কাজ করেছে। হামজার জীবনে যেমন তার প্রভাব রয়েছে, তেমনই গল্পের মোড় ঘোরানো নানা ঘটনার সঙ্গেও এই চরিত্র জড়িয়ে। দৃশ্যটি মুক্তির পর দর্শকদের মনে দাগ কেটেছে, আর নাসিমের এই খোলামেলা স্বীকারোক্তি বুঝিয়ে দিল, কঠিন দৃশ্যের আড়ালে কতটা মানসিক প্রস্তুতি, সাহস আর সহমর্মিতার গল্প লুকিয়ে থাকে।

 

 

 

এদিকে বক্স অফিসে ‘ধুরন্ধর’ এখন একেবারে দুর্দান্ত দাপটে। চার সপ্তাহ পেরিয়েও ১,১০০ কোটি টাকার বেশি ব্যবসা, ভারতের মধ্যেই ৭৪০ কোটি টাকার উপর আয়ের রেকর্ড, আর সেই সঙ্গে রণবীরের অভিনয় ও ছবির প্রভাব, সব মিলিয়ে চলতি বছরের অন্যতম বৃহত্তম সাফল্যের স্মারক হয়ে উঠেছে এই ছবি।