বলিউড অভিনেত্রী সেলিনা জেটলি স্বামী পিটার হাগের বিরুদ্ধে গার্হস্থ্য হিংসার মামলায় এমন একাধিক অভিযোগ তুলেছেন, যা রীতিমতো স্তম্ভিত করে দেওয়ার মতো। ৫০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ-সহ একাধিক আর্থিক দাবি জানিয়ে মুম্বই আদালতে দায়ের করা মামলায় সেলিনা অভিযোগ করেছেন, স্বামী তাঁকে ‘অস্বাভাবিক’ যৌনতায় বাধ্য করেছেন, তাঁর নগ্ন ছবি তুলে ব্ল্যাকমেল করেছেন, এমনকী অন্য পুরুষের সঙ্গে জোর করে যৌনতা করার জন্য চাপও দিয়েছেন।

 

মঙ্গলবার সামনে আসে এই মামলার নথি। আদালতের কাগজপত্র অনুযায়ী, সেলিনা তাঁর স্বামীকে গার্হস্থ্য হিংসা, নিষ্ঠুরতা এবং লাগাতার মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের জন্য দায়ী করেছেন। ২০১০ সালে অস্ট্রিয়ান ব্যবসায়ী ও হোটেল মালিক পিটার হাগকে বিয়ে করেন সেলিনা। তাঁদের তিন সন্তান, যমজ উইনস্টন ও বিরাজ (জন্ম ২০১২), এবং আর্থার (জন্ম ২০১৭)। তাঁদের আরেক পুত্র শমশের হৃদ্‌রোগে মারা যায়।

 

সেলিনার দাবি, পিটার তাঁর সন্তানদের সামনেই তাঁকে “যৌনকর্মী” বলে অপমান করতেন। শুধু তাই নয়, বিয়ের সময়ও নাকি তিনি নিয়মিত দামি উপহার দাবি করতেন। মামলার নথিতে উঠে এসেছে এই সম্পর্কের ভিত জুড়েই ছিল মানসিক, যৌন এবং আর্থিক নির্যাতন।

 

আরও অভিযোগ, ২০১২-এর দিল্লি গণধর্ষণের পর সেলিনাকে ভয়ঙ্কর হুমকি দিয়েছিলেন তাঁর স্বামী। মামলার একটি অংশ বিশেষভাবে নৃশংস। সেলিনার অভিযোগ, ২০১২ সালের দিল্লির গণধর্ষণের ঘটনার পর দাম্পত্য কলহের সময় পিটার তাঁকে ভয় দেখাতেন। নথিতে লেখা, “ঝগড়ার সময় পিটার সেলিনাকে বলত, সে তার যোনিতে লোহার রড ঢুকিয়ে দেবে এবং বলত এই ট্রিটমেন্টই তার প্রাপ্য। এই ভয়ানক কথায় সেলিনা আতঙ্কিত হয়ে পড়তেন এবং ওকে শান্ত করার চেষ্টা করতেন।”

 

আইনি নথি অনুযায়ী, এক পর্যায়ে পিটার সেলিনার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক পুরোপুরি বন্ধ করে দেন। বরং ২০১৪ সালের শেষ থেকে ২০১৫-এর শুরুতে তিনি ঠান্ডা মাথায় প্রস্তাব দেন, সেলিনা যেন তাঁর কোম্পানির এক বোর্ড মেম্বারের সঙ্গে যৌন সম্পর্কে জড়ান, যাতে তাঁর নিজের চাকরির সুবিধা হয়।

 

সেলিনার আরও অভিযোগ, পিটার যৌন সম্পর্ককে সম্পূর্ণ নিজের শর্তে নিয়ন্ত্রণ করতেন।নথিতে বলা হয়েছে, “তিনি নিয়মিত সেলিনাকে নিজের স্টাডি রুমে ডাকতেন এবং আবেগ বা স্নেহ ছাড়াই অ্যানাল সেক্স-সহ অস্বাভাবিক যৌনতায় বাধ্য করতেন।” অভিনেত্রীর সবচেয়ে ভয়ঙ্কর অভিযোগগুলির মধ্যে একটি -পিটার নাকি সেলিনার নগ্ন ছবি তুলে পরে সেগুলি মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে তাঁকে ব্ল্যাকমেল করতেন।নথিতে উল্লেখ, “তিনি সেলিনার আপত্তিকর নগ্ন ছবি তুলতেন এবং যৌন চাহিদা না মানলে সেগুলি প্রকাশ করার ভয় দেখাতেন। চাকরি পাওয়ার পর স্বাভাবিক জীবন ফিরবে, এই আশায় সেলিনা বাধ্য হয়ে সব সহ্য করতেন।”

এই মামলার শুনানি এখনও চলছে। আপাতত আদালতের নথিতে উঠে আসা এই ভয়ঙ্কর অভিযোগগুলি নতুন করে আলোচনার কেন্দ্রে এনে ফেলেছে সেলিনা জেটলির ব্যক্তিগত জীবন ও দীর্ঘ বিবাহ জীবনের গল্প।