‘ভুলভুলাইয়া ৩’-এর বিশাল সাফল্যের পর যেন আরও হিসেবি পথ ধরেছেন কার্তিক আরিয়ান। একের পর এক ভিন্ন ধারার ছবিতে নাম লিখিয়ে তিনি এখন বলিউডের অন্যতম চর্চিত মুখ। বর্তমানে তাঁর হাতে রয়েছে দুটি বড় প্রজেক্ট — সমীর বিদ্বানস পরিচালিত তু মেরি মেঁ তেরা মেঁ তেরা তু মেরি এবং অনুরাগ বসুর একটি নামহীন প্রেমকাহিনি — দু’টিই মুক্তি পাবে ২০২৬ সালে। এর পর সরাসরি ঝাঁপ দেবেন ‘নাগজিলা’ ছবিতে, মৃগদীপ সিং লাম্বা পরিচালিত এক অদ্ভুতুড়ে এন্টারটেইনারে।
এর মাঝেই এসে গেল আরও বড় খবর। কার্তিক এবার হাত মেলালেন বলিউডের খ্যাতনামা পরিচালক শিমিত আমিনের সঙ্গে, যিনি ‘অব তক ছাপ্পান’, ‘চক দে! ইন্ডিয়া’ ও ‘রকেট সিং: সেলসম্যান অফ দ্য ইয়ার’-এর মতো সব ছবির জন্য বিখ্যাত। প্রযোজনার ঘনিষ্ঠ সূত্র জানিয়েছে, প্রায় এক বছর ধরে কার্তিক ও শিমিত একসঙ্গে কাজের জন্য নানা আইডিয়া নিয়ে আলোচনা করছিলেন। তখনই কার্তিককে ‘ক্যাপ্টেন ইন্ডিয়া’-র গল্প শোনান শিমিত, আর তাতেই মুগ্ধ হয়ে যান কার্তিক।
সূত্র আরও জানায়, শিমিত আমিন ইতিমধ্যেই ‘ক্যাপ্টেন ইন্ডিয়া’-র জন্য এক টানটান চিত্রনাট্য চূড়ান্ত করেছেন। ২০২৬-এর প্রথমার্ধে ক্যামেরা অন হবে। গল্প শোনামাত্র কার্তিক ছবিতে রাজি হয়ে যান। ছবির শুটিং হবে ভারত ও মরক্কোতে — মরক্কোর লোকেশন রেকিও ইতিমধ্যে সম্পূর্ণ।
সত্য ঘটনার প্রেক্ষাপটে তৈরি ‘ক্যাপ্টেন ইন্ডিয়া’-য় কার্তিককে দেখা যাবে এক এয়ারফোর্স পাইলটের চরিত্রে — যা তাঁর কেরিয়ারের অন্যতম গম্ভীর ও দেশাত্মবোধক চরিত্র হতে চলেছে। মার্চ থেকে জুলাই ২০২৬-এর মধ্যে শুটিং শেষ করে ২০২৭-এর প্রথমার্ধে ছবিটি মুক্তির পরিকল্পনা রয়েছে।
'তু মেরি মেঁ তেরা মেঁ তেরা তু মেরি', অনুরাগ বসুর প্রেমকাহিনি, নাগজিলা এবং এখন ক্যাপ্টেন ইন্ডিয়া — এই চারটি ছবির তালিকা প্রমাণ করে দিচ্ছে, নতুন প্রজন্মের তারকাদের মধ্যে কার্তিক আরিয়ানের ফিল্মোগ্রাফি এখন সবচেয়ে বৈচিত্র্যময় ও ব্যস্ত। আর শোনা যাচ্ছে, এখানেই শেষ নয় — সামনে আরও বড় বড় ঘোষণার অপেক্ষায় রয়েছেন ফ্যানরা। স্পষ্ট, কার্তিকের বক্স অফিস যাত্রা এখনই আসল গতিতে উঠছে।
প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগে আমেরিকার হিউস্টনে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠান ঘিরে তীব্র বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে এসে পড়েছিলেন বলিউড তারকা কার্তিক আরিয়ান। ফেডারেশন অফ ওয়েস্টার্ন ইন্ডিয়া সিনেমা এমপ্লয়িজ (FWICE) একটি বিবৃতিতে অভিনেতার বিরুদ্ধে সরাসরি অভিযোগ তোলে—তাঁকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে এমন একটি অনুষ্ঠানে, যার সংগঠক একজন পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত ব্যক্তি।
 
 ‘আজাদি উৎসব – দ্য ইন্ডিয়ান ইন্ডিপেনডেন্স ডে’ নামের এই অনুষ্ঠানটি আগা’স রেস্টোরেন্ট অ্যান্ড ক্যাটারিং নামক এক সংস্থা আয়োজিত, যার মালিক শওকত মারেড়িয়া—একজন পাক বংশোদ্ভূত মার্কিনি ব্যবসায়ী। অনুষ্ঠানটি ১৫ই অগাস্ট হিউস্টনে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। ফেডারেশন অফ ওয়েস্টার্ন ইন্ডিয়া সিনেমা এমপ্লয়িজ-এর দাবি, কার্তিক আরিয়ান এই ইভেন্টে পারফর্ম করার কথা ছিল বা উপস্থিত থাকার কথা ছিল, এবং এ বিষয়ে তাঁরা তীব্র আপত্তি জানিয়েছেন।
ফেডারেশন অফ ওয়েস্টার্ন ইন্ডিয়া সিনেমা এমপ্লয়িজ (FWICE ) কী বলেছিল ?
 
 পুলওয়ামা হামলার পর থেকেই ফেডারেশন অফ ওয়েস্টার্ন ইন্ডিয়া সিনেমা এমপ্লয়িজ একটি লিখিত নির্দেশিকা চালু করেছে, যেখানে বলা হয়েছে, ভারতীয় সিনেমা শিল্পের কোনও সদস্য যাতে পাকিস্তানি শিল্পী, প্রযুক্তিবিদ বা উদ্যোক্তার সঙ্গে পেশাগত যোগসূত্র না রাখেন। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে ফেডারেশন অফ ওয়েস্টার্ন ইন্ডিয়া সিনেমা এমপ্লয়িজ কার্তিককে উদ্দেশ করে জানিয়েছে—
“সম্ভবত আপনি আয়োজকদের পটভূমি বা তাঁদের সঙ্গে কার সম্পর্ক রয়েছে, তা সম্পূর্ণ জানতেন না। যদি তাই হয়, তাহলে আমরা অনুরোধ করব আপনি এই ইভেন্ট থেকে অবিলম্বে নিজেকে সরিয়ে নিন। আর যদি আপনি সব জেনেই অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন, তাহলে সেটা আরও গুরুতর বিষয় এবং তখন আমরা আপনার কাছ থেকে স্পষ্ট ব্যাখ্যা ও অবিলম্বে সম্পর্কচ্ছেদের প্রত্যাশা করি।”
কার্তিকের টিম কী বলছে?এই অভিযোগ সামনে আসতেই কার্তিক আরিয়ানের টিম দ্রুত এক বিবৃতি প্রকাশ করে সাফ জানিয়ে দেয়—এই ইভেন্টের সঙ্গে কার্তিকের কোনও সম্পর্কই নেই।
বিবৃতিতে স্পষ্ট ভাষায় লেখা রয়েছে—
“কার্তিক আরিয়ান এই ইভেন্টের সঙ্গে কোনওভাবেই যুক্ত নন। তিনি কখনও এই ইভেন্টে অংশগ্রহণ করার বিষয়ে কোনও সরকারি ঘোষণা করেননি। আমরা ইতিমধ্যেই আয়োজকদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি এবং তাঁদের অনুরোধ করেছি যাতে কার্তিকের নাম ও ছবি সমস্ত প্রচারসামগ্রী থেকে অবিলম্বে সরিয়ে নেওয়া হয়।”
